সংকট কাটাতে বৈশ্বিক সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ প্রধানমন্ত্রীর

নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কভিড-১৯ মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে উদ্ভূত সংকট কাটিয়ে উঠতে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিদ্যমান সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তা করুন।’ বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অ্যাক্সেল ভ্যান ট্রটসেনবাগ গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার কার্যালয়ে (পিএমও) সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ কথা বলেন।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য লেখক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

বিশ্বব্যাংকের এমডি বাংলাদেশের উন্নয়নকে ‘অবিশ্বাস্য’ হিসেবে বর্ণনা করেন এবং উন্নয়নের ধারায় ঢাকার পাশে থাকার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ১৯৭২ সাল থেকে বাংলাদেশের পাশে আছি এবং দেশের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখব।’

বিশ্বব্যাংকের এমডি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশে তার সফরে প্রধান উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক আরও জোরদার করা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বাংলাদেশের জনগণের মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৫০ মার্কিন ডলার, কিন্তু তা এখন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৮২৪ মার্কিন ডলারে। উন্নত দেশগুলো মূলত জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবের জন্য দায়ী এবং জলবায়ু তহবিলে অর্থ প্রদানে তাদের প্রতিশ্রুতি পূরণের আহ্বান জানান। কিন্তু উন্নত দেশগুলো তাদের প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে পালন করছে না।’

প্রধানমন্ত্রী জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে তার সরকার কী করছে, তা সংক্ষেপে বর্ণনা করেন। তিনি আরও বলেন, তার সরকার ব্যাপক বনায়ন, গ্রিন বেল্ট নির্মাণ এবং দুর্বল মানুষের জন্য টেকসই আবাসন ব্যবস্থা গ্রহণ এবং প্রজšে§র পর প্রজš§কে উন্নত জীবন দিতে ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ড গঠন করেছে।

সরকারপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকার কারণে তার সরকার বিগত ১৪ বছরে বাংলাদেশের দ্রুত উন্নয়ন করতে পেরেছেন এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন অনুযায়ী, দেশবাসীকে একটি সুন্দর ও উন্নত জীবন দিতে অক্লান্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কভিড-১৯ মহামারির আগে বাংলাদেশ জিডিপিতে ক্রমাগত ৮ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জন অব্যাহত ছিল। কিন্তু মহামারি থেকে বেরিয়ে আসার পর জিডিপি প্রবৃদ্ধি হ্রাস পেয়েছে এবং বাংলাদেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি করেছে, যা এখন পুনরুদ্ধার করা হচ্ছে।

বিশ্বব্যাংকের এমডি ট্রোটসেনবার্গ বলেন, কভিড-১৯ মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলো কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হলে উন্নয়নশীল দেশগুলোর উচিত নতুন প্রজšে§র জন্য কর্মসংস্থান করা।

বিশ্বব্যাংকের এমডি তিন দিনের সরকারি সফরে গত শনিবার প্রথম বাংলাদেশে এসেছেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভী, প্রধানমন্ত্রীর অ্যাম্বাসাডর অ্যাট লার্জ মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব এম. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া এবং অর্থ সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০