Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 9:54 am

সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে সংকট তৈরি হবে: প্রধান বিচারপতি

শেয়ার বিজ ডেস্ক:‘বিচারক অপসারণের প্রশ্ন উঠলে সংসদে যদি কোনো দলের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে, তাহলে একধরনের সংকট তৈরি হবে’ বলে আশঙ্কা করছেন প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা।

বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদের কাছে ফিরিয়ে নিয়ে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানির একপর্যায়ে একথা বলেন প্রধান বিচারপতি। খবর: বিডিনিউজ

তিনি বলেছেন, ‘আমরা দেশের সবচেয়ে পবিত্র আইন (সংবিধান) সংরক্ষণ করি। দেখা গেল সেখানে এমন কিছু সন্নিবেশিত হলো, যাতে শূন্যতার সৃষ্টি হলো। তখন কী হবে? তখন জুডিসিয়ারি কী করবে? পার্লামেন্টে টু থার্ড মেজরিটি (দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা) না থাকলে ওই পরিস্থিতিতে কোনো বিচারকের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠলে তখন কী হবে? আমাকে এ বিষয়টি ভাবিয়ে তোলে।’

এর আগে, উচ্চ আদালতের বিচারকদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদের হাতে ফিরিয়ে এনে ২০১৪ সালে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধন হয় বর্তমান সংসদে। এর বিরুদ্ধে একদল আইনজীবী আদালতে গেলে গত বছর ওই সংশোধনী বাতিলের রায় দেন হাইকোর্ট।

একটি আইনের অধীনে সংসদ বিচারক অপসারণের কাজটি করবে বলে জানানো হয়। ওই আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও হাইকোর্ট সংশোধনীটি বাতিল করার পর তা ঝুলে যায়।

এদিকে হাইকোর্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেওয়া ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করে। যার শুনানি চলছে। রাষ্ট্র ও রিট আবেদনকারী পক্ষের বক্তব্য উপস্থাপনের পর গতকাল (বৃহস্পতিবার) আপিল বিভাগে এ মামলার সপ্তম দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ অ্যামিকাস কিউরিদের কথা শোনেন। সংবিধান প্রশ্নে গুরুত্বপূর্ণ এ মামলায় সর্বোচ্চ আদালত ১২ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেয়।

অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের পক্ষে অবস্থান জানিয়ে বলেন, প্রশাসনসহ অন্য সব ক্ষেত্রে অপসারণের ক্ষমতা নিজ নিজ দফতরের থাকলে বিচার বিভাগের ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হবে কেন?

বিভিন্ন দেশে আইনসভার হাতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা থাকার যে নজির রাষ্ট্রপক্ষ তুলে ধরেছে, তার প্রতিক্রিয়ায় অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম বলেন, ‘ওই সব দেশেও এখন এ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে।’ আরেক অ্যামিকাস কিউরি অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি টি এইচ খান সংবিধানের ওই সংশোধন যে সংসদে পাস হয়েছে, তার বৈধতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন।

শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, গত কয়েকদিনের শুনানিতে যার সঙ্গে উত্তপ্ত বিতর্ক হয়েছিল প্রধান বিচারপতির। এদিন শেষে আপিল বিভাগ পরবর্তী কার্যদিবস অর্থাৎ আগামী রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেন।