নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠন। সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নিরাপত্তাহীনতায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
ক্ষমা না চাইলে বিএনপির সংবাদ পরিহারের ডাক ডিইউজের
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় বিএনপি ও জামায়াত যদি নিঃশর্ত ক্ষমা না চায়, তাহলে দল দুটির সব ধরনের ইতিবাচক সংবাদ সংগ্রহ ও প্রকাশ থেকে বিরত থাকার ডাক দিয়েছেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আন্দোলনের নামে সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে গতকাল রোববার আয়োজিত সমাবেশে এ ডাক দেন তিনি।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা এডিটরস গিল্ডের
রাজনৈতিক কর্মসূচির খবর সংগ্রহ করতে যাওয়া সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ।
গত শনিবার রাতে গণমাধ্যমে সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল বাবুর পাঠানো এক বিবৃতিতে ঘটনায় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।
সম্পাদক পরিষদের নিন্দা-উদ্বেগ
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে সাংবাদিকদের ওপর হামলার নিন্দা জানিয়েছে সম্পাদক পরিষদ। সাংবাদিকদের ওপর হামলা-নিরাপত্তাহীনতায় তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। গতকাল রোববার এক বিবৃতিতে সম্পাদক পরিষদ এই নিন্দা ও উদ্বেগ জানায়।
গত শনিবার পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে প্রায় ২৫ সাংবাদিক আহত বা হামলার শিকার হয়েছেন বলে সম্পাদক পরিষদ জানিয়েছে। এ ঘটনাকে অত্যন্ত নিন্দনীয় বলে অভিহিত করেছে সম্পাদক পরিষদ।
অ্যাসাইনমেন্ট কাভার করার সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত সাংবাদিকরা হলেন দৈনিক শেয়ার বিজ পত্রিকার প্রতিবেদক হামিদুর রহমান, নিউএজের আহম্মদ ফয়েজ, বাংলা ট্রিবিউনের সালমান তারেক শাকিল, দৈনিক দেশ রূপান্তর পত্রিকার আরিফুর রহমান রাব্বি, একুশে টিভির তৌহিদুর রহমান, দ্য রিপোর্ট টোয়েন্টিফোরের হাফিজ আল আসাদ সাঈদ খান, আলোকিত বাংলাদেশের ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, দৈনিক কালবেলার রাফসান জানি, আবু সালেহ মুসা, রবিউল ইসলাম রুবেল ও তৌহিদুল ইসলাম তারেক।
আহতদের মধ্যে আরও রয়েছেন দৈনিক আমাদের কণ্ঠের রাজু আহমেদ, ঢাকা টাইমসের সালেকিন তারিন, ব্রেকিং নিউজের কাজী ইহসান বিন দিদার, দৈনিক ইনকিলাবের ফটোসাংবাদিক এফএ মাসুম, দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তানভীর আহাম্মেদ, একুশে টিভির ক্যামেরাপরসন আরিফুর রহমান, ইত্তেফাকের শেখ নাছের, ফ্রিল্যান্সার মারুফ, ভোরের কাগজের ফটো সাংবাদিক মাসুদ পারভেজ আনিস, দৈনিক আমার সংবাদের আবদুল্লাহ আল নোমান ও নুরুজ্জামান শাহাদাৎসহ আরও অনেক সাংবাদিক।
এক সাংবাদিকের মৃত্যু
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বিএনপির নেতা-কর্মী ও পুলিশের সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে আহত সাংবাদিক রফিক ভূঁইয়া মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গতকাল রোববার ভোরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার মরদেহ এখন শমরিতা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
চিকিৎসকরা জানান, রফিক ভূঁইয়ার মাথায় মারাত্মক আঘাত লাগে। এতে তার ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়েছে। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
রফিক ভূঁইয়া ডিইউজে ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের স্থায়ী ও সিনিয়র সদস্য ছিলেন। পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রফিক ভূঁইয়ার বিদেশে অবস্থানরত দুই ছেলে দেশে আসার পথে রয়েছেন। তারা ফেরার পর দাফন করা হবে।
তার মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন ও সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত।