Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 11:35 pm

সংঘর্ষে শেয়ার বিজের রিপোর্টারসহ ১০সাংবাদিক আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর সমাবেশ কেন্দ্র করে সংঘর্ষের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ১০ সাংবাদিক আহত হয়েছেন। এর মধ্যে দায়িত্বপালনকালে শেয়ার বিজের নিজস্ব প্রতিবেদক হামিদুর রহমানও রয়েছেন। গতকাল শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টন, কাকরাইল মোড় ও শান্তিনগর এলাকায় পেশাগত দায়িত্বপালনকালে পুলিশ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী আহত হন। এ সময় সাংবাদিকদের কয়েকটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয়া হয়েছে।

এই সংঘর্ষে ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন দৈনিক শেয়ার বিজের নিজস্ব প্রতিবেদক হামিদুর রহমান। তিনি বলেন, চারদিকে পুলিশ টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুটতে থাকে। আমি শান্তিনগর ফ্লাইওভারের পিলারের আড়ালে আশ্রয় নিয়েছিলাম। তবে পিলারের পাশ থেকে একটি টিয়ারশেল এসে আমার বাঁ পায়ের ওপর পড়ে। এতে আমি আহত হয়েছি।

ঢাকা টাইমসের প্রতিবেদক সালেকিন তারিন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে চিকিৎসার জন্য জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানে (পঙ্গু হাসপাতাল) নেয়া হয়েছে।

ভয়ানক মারধরের শিকার হয়েছেন দৈনিক কালবেলার প্রতিবেদক রাফসান জানি। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। কালবেলার অপরাধ-বিষয়ক প্রতিবেদক রাফসান জানি বলেন, ‘নাইটেঙ্গেল মোড়ে দায়িত্ব পালন করছিলাম। আমি আর বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল ভাই কাছাকাছি ছিলাম। এরই মধ্যে দেখলাম দুই পুলিশ ও এক আনসার সদস্যকে কাকরাইলের দিকে ধাওয়া দিয়ে বেধড়কভাবে মারা হচ্ছে। ২০ থেকে ২৫ বিএনপি কর্মী রাস্তায় ফেলে বেধড়ক পেটাচ্ছে। আমি শুধু রাস্তার এপার থেকে এসে মাঝখানের সড়ক বিভাজকের ওপর দাঁড়িয়ে ভিডিও করছিলাম। আমার গলায় আইডি কার্ড ঝোলানো ছিল, ওইপাশ থেকে দু-তিনজন এসে ধাওয়া দিল। ‘সাংবাদিক, সাংবাদিক’ বলে চিৎকার করে আমাকে ধাওয়া দিল এবং ইচ্ছামতো মারধর করল। লাঠি, রড ও বাঁশ এমন কিছু বাদ নেই, যা দিয়ে তারা মারেনি। মারতে মারতে আমাকে ডিআইজি ঢাকা রেঞ্জের কার্যালয় পর্যন্ত নিয়ে গেল। আমি চেষ্টা করছিলাম সরে যেতে, কিন্তু পেছন থেকে ধাওয়া দিচ্ছিল। সামনে যে-ই পাচ্ছিল এবং সেই মারছিল।’

রাফসান বলেন, ‘কোনোমতে ডিআইজি কার্যালয় পর্যন্ত আসার পর তারা আমার পিছু ছাড়ে। সেখানে যাওয়ার পর আমি গাজী টিভির সাংবাদিকদের সাহায্য নিই এবং অফিসে জানাই। এরপর আমাকে আমার সহকর্মীরা ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসে।’

চিকিৎসকরা জানান, রাফসান মাথায় কিছু জায়গায় আঘাত পেয়েছেন। তার পিঠেও কয়েক জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।

এছাড়া গতকাল আহত হয়েছেন বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল, ফটো সাংবাদিক সাজ্জাদ হোসেন ও নিজস্ব প্রতিবেদক জোবায়ের আহমেদ। প্রধান বিচারপতির বাসবভবনের সামনে ইটের আঘাতে আহত হন সালমান তারেক। আর পল্টনে পুলিশের ধাওয়ায় ভিড়ের মধ্যে রাস্তায় পড়ে যান সাজ্জাদ হোসেন। এ সময় অন্য মানুষের পদদলিত হয়ে আহত হন তিনি। অন্যদিকে পল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে পুলিশের ধাওয়ায় বিএনপির নেতাকর্মীদের ধাক্কায় রাস্তায় পড়ে পদদলিত হয়ে আহত হন জোবায়ের আহমেদ।

সংঘর্ষে আরও আহত হয়েছেন দৈনিক ইনকিলাবের ফটোসাংবাদিক এফএ মাসুম, দৈনিক ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়ার রিপোর্টার তানভীর, একুশে টিভির রিপোর্টার তৌহিদুর রহমান ও ক্যামেরা পারসন আরিফুর রহমান।

ইত্তেফাকের মাল্টিমিডিয়া রিপোর্টার তানভীরের সঙ্গে থাকা সাংবাদিক মুজাহিদ জানান, জামায়াতের সমাবেশ শেষ করে আসার পথে হামলা চালান বিএনপি কর্মীরা। তানভীরকে রাস্তায় ফেলে ইচ্ছামতো পেটায়। তার অবস্থা গুরুতর।