নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট আবাসনবান্ধব নয়, ফ্ল্যাট বা প্লট বেচাকেনায় ১৫ শতাংশ ভ্যাট কার্যকর করা হলে এ খাত মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মন্তব্য করেছে আবাসান খাতের শীর্ষ সংগঠন রিহ্যাব। সংস্থাটি বলছে, জমি ও ফ্ল্যাটের নিবন্ধন ব্যয় কমানো, হাইজিং লোন নামে বিশেষ ফান্ড গঠন ও আবাসন খাতের বিভিন্ন সরঞ্জামের ওপর ভ্যাট কমানোর দাবি বাজেটে প্রতিফলন হয়নি। গতকাল শনিবার রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির
সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামীন একথা বলেন। এ সময় অন্যদের মধ্যে রিহ্যাবের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন এমপি, সহসভাপতি লিয়াকত আলী ভুঁইয়া, সহসভাপতি জহির আহমেদ, পরিচালক কামাল মাহমুদ, প্রকৌশলী আলামীন, প্রকৌশলী নুর আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় লিখিত বক্তব্যে সংগঠনটির সভাপতি বলেন, বাজেটে যে প্রবৃদ্ধি প্রাক্কলন করা হয়েছে, তা সম্ভব হবে যদি আবাসন খাতসহ উৎপাদনমুখী খাতগুলো গতিশীল থাকে। কিন্তু রেমিট্যান্স প্রবাহ কমার কারণে আবাসন খাত স্থবির হয়ে আছে। সমগ্র গৃহায়ণ খাতের বিক্রয় প্রায় ৮০ শতাংশ কমে গেছে। পর্যটন এলাকায় প্রায় সব প্রকল্প বন্ধ হয়ে আছে। এ অবস্থায় জমি ও ফ্ল্যাটের রেজিস্ট্রেশন খরচ বর্তমান ১৪-১৬ শতাংশ থেকে
কমিয়ে সাত শতাংশ করার প্রস্তাব ছিল। একই সঙ্গে মধ্যবিত্তের
সুবিধার জন্য ‘হাউজিং লোন’ নামে ২০ হাজার কোটি টাকার রিফাইন্যান্সিং ফান্ড গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের এসব দাবি বিবেচনা করা হয়নি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, খাতের অন্যতম কাঁচামাল হলো রড। এ রডে আগে টনপ্রতি ৯০০ টাকা ভ্যাট দিতে হয়। নতুন আইনে ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হবে। এর ফলে রডের বাজার মূল্য সাড়ে সাত হাজার টাকা করে বেড়ে যাবে, যা পুরো খাতের ওপর প্রভাব সৃষ্টি করবে। একইভাবে সিমেন্ট, বালু, ইটেরও ব্যয় বাড়বে ভ্যাটের প্রভাবে। এদিকে সিমেন্টের কাঁচামাল হিসেবে যে ফ্লাই অ্যাশ আমদানি করা হয় তার ওপর ১০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক (আরডি) বসানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। আরও দুই ধরনের পাথরের ওপর ১৫ ও ২০ শতাংশ আরডি বসানো হয়েছে। এসব কারণে সিমেন্ট ও পাথরের দাম বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়া ফ্ল্যাট বিক্রির ওপর ভ্যাট ছিল দেড় থেকে সাড়ে চার শতাংশ। এই হারও ১৫ শতাংশে উন্নীত হবে এবারের বাজেটের পর। এটা এ খাতের জন্য নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করবে বলে উল্লেখ করেন বক্তারা।
বক্তারা আরও বলেন, ২০১৩ সালে ৭৬ হাজার কোটি টাকা এবং ২০১৪ সালে ৭২ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। আইনি জটিলতার কারণে বিদেশে টাকা পাচারের পরিমাণ বাড়বে বলে আশঙ্কা করে রিহ্যাব বলেছে, আগে শুধু মালয়েশিয়ায় টাকা পাচার হতো, এখন ইউরোপ-আমেরিকায়ও টাকা পাচার হচ্ছে। এ অবস্থা রোধে তারা আয়কর অধ্যাদেশের অপ্রদর্শিত অর্থসংক্রান্ত ধারা সংশোধনের দাবি জানিয়ে বলা হয়, অপ্রদর্শিত অর্থ আবাসন খাতে বিনিয়োগের সুযোগ রাখা হলেও আইনের অনেক মারপ্যাচ রয়ে গেছে, যা নিরসন দরকার।
Add Comment