নিজস্ব প্রতিবেদক: সংলাপের কথা বলে জনদৃষ্টিকে সরকার ভিন্ন দিকে নিতে চায় মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) মিলনায়তনে এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ও গণতন্ত্র এক সঙ্গে যায় না। তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে। নির্বাচনকালীন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের বিকল্প নেই। সুতরাং আগে পদত্যাগ করুন। তারপর দেখব সেটা (তত্ত্বাবধায়ক সরকার) কীভাবে করতে হয়। দেশের মানুষ সেটা জানে। আজ আমাদের লড়াই কিন্তু বিএনপিকে ক্ষমতায় নেওয়ার জন্য নয়। মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াই করছি আমরা। গোটা দেশের মানুষ আজ আমাদের সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধভাবে অংশগ্রহণ করছেন।
তিনি বলেন, আজ দেশের স্বাধীনতার ৫২ বছরেও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর পদ্ধতি তৈরি করতে পারিনি। তবে দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে সবচেয়ে গণতান্ত্রিক মানসিকতার নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া; যিনি গৃহবধূ থেকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় এসে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছিলেন। তিনি সবার মতামতের ভিত্তিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। কারণ জনগণ তার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি দলের কথা চিন্তা করেননি। কিন্তু ২০১১ সালে শেখ হাসিনা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বাতিল করেন। এরপর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া সেদিন গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছিলেন, দেশকে অনিশ্চয়তা ও সংঘাতের দিকে ঠেলে দেওয়া হলো।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ বলব- আমাদের মধ্যে কেন জানি সাহসের অভাব। আসুন আমরা যে যেখানে আছি সাহস করে দাঁড়াই। আজ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলুন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার বলুন, সবকিছুকে অর্জন করতে হলে সাহস নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আজ সংকটটা কঠিন। জাতি হিসেবে আমাদের দুর্ভাগ্য যে, এখনও আমরা ঐক্যবদ্ধ হতে পারিনি। পাকিস্তান বিভাজনের পর থেকে এখানে গণতন্ত্রের চর্চা হয়নি। বারবার গণতন্ত্র হোঁচট খেয়েছে।
তিনি বলেন, আজ যে দলটি ক্ষমতায় আছে, তারা বারবার গণতন্ত্রের কথা বলে। কিন্তু সেই দলটির হাতে গণতন্ত্র বারবার নিহত হয়েছে। গণতন্ত্র আমাদের মজ্জায় ছিল, যা আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল। কিন্তু আওয়ামী লীগ একে একে গণতান্ত্রিক সব অধিকার হরণ করেছে। তারা জরুরি অবস্থা, সামরিক আইন এবং শেষে বাকশাল কায়েম করেছিল।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজ দেশের রাজনীতিতে একদল আরেক দলকে বিশ্বাস করেনা। যে কারণেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দেশে চারটি জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।, যা দেশের মানুষের কাছে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য হয়েছে। আমরা আজ স্বাধীনতার ৫২ বছরেও ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া নিয়ে লড়াই করছি।
বিদ্যুৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তাদের নাকি বিদ্যুৎ ফেরি করে বিক্রি করতে হবে। তো ৩ ঘণ্টাও তো বিদ্যুৎ মিলছেনা। হাসপাতালে সেবা বিঘ্নিত হচ্ছে। কৃষিতে সেচ দেওয়া যাচ্ছে না। সবাইতো বিল দিচ্ছি। তাহলে টাকা গেল কোথায়? তারা তো কয়লা আনতে পারেনা। আসলে তারা শুধু মিথ্যা কথা বলে। তাদের টাকা নেই, ডলারও নেই। জাতির কাছে তাদের জবাবদিহি করতে হবে। পশ্চিমবঙ্গে লোডশেডিং নেই। তাহলে আমরা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে কেন সেটা করতে পারলাম না।