নিজস্ব প্রতিবেদক: নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির চলমান সংলাপে বিএনপি অংশ নিলে সেটা রাজনৈতিক তিক্ততা ‘কমিয়ে আনতে’ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নিজের এমন ভাবনার কথা বললেও সংলাপে অংশ নেয়ার জন্য বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে সরাসরি কোনো আহ্বান তিনি জানাননি।
বিরোধী দলে থাকা বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি যে সংলাপে যাচ্ছে না, সে বিষয়ে আইনমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন একজন সাংবাদিক। উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমি বিএনপির উদ্দেশ্যে এই কথাই বলতে চাই যে, দেশ হচ্ছে সবার ঊর্ধ্বে, দেশের স্বার্থে আপনারা যদি এই সংলাপে আসেন, সেটা আপনাদের জন্য ভালো হবে, সবার জন্য ভালো হবে। সেটা যদি না করেন, সেটা উনাদের সিদ্ধান্ত। অনেকে বলেন, টক্সিক সিচুয়েশন, এই টক্সিক সিচুয়েশন উনারা যদি মনে করেন, তাহলে উনাদের এই টক্সিক সিচুয়েশন থেকে বেরোনোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। সংলাপে গেলে আমরা মনে হয় সেটা পজিটিভ হবে।’
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে আইন করার দাবি প্রসঙ্গেও মন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন একজন সাংবাদিক। উত্তরে তিনি বলেন, ‘এই সময়ের মধ্যে আইন করার সুযোগ নেই। আইন হবে না এই কথা তো আমি বলিনি। আমি বলেছি, এই আইনটা হবে। এই আইনটা এমন একটা আইন, হওয়া উচিত। যেটা গ্রহণযোগ্য হবে সবার কাছে। শুধু এক দলের কাছে গ্রহণযোগ্য হলে তো এটা সার্বজনীন আইন হলো না। সেক্ষেত্রে আমি মনে করি, এটা আইন হবে। কিন্তু এই যে কমিশনার নিয়োগ, সেটা সংলাপের ওপর নির্ভর করবে। দেখা যাক কী হয়।’
বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে বিদেশ পাঠানোর দাবির বিষয়ে সরকারের সর্বশেষ অবস্থান জানতে চাইলে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘কাকে বিদেশ পাঠানো হবে, কাকে বিদেশ পাঠানো হবে নাÑদ্যাট ইজ নট দ্য প্রায়োরিটি। প্রায়োরিটি হচ্ছে যে সেবাগুলো জনগণের অনেক আগে পাওয়া উচিত ছিল, সেই সেবাগুলো দেয়ার জন্য শেখ হাসিনা ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছেন। আজ পৌঁছে দেয়ার মতো সময় এসেছে, আমরা পৌঁছে দেব। সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ভিশন অনুযায়ী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত দেশ হবো, সেই উন্নত দেশ করার জন্য যা যা করার সেগুলো করতে প্রস্তুত হবো, আমরা চালিয়ে যাচ্ছি।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় পাঁচ বছর পূর্ণ হলে যে নির্বাচন হবে, সে নির্বাচনে অবশ্যই জনগণ এটা বুঝবে যে কারা তাদের সেবা করেছে, আর কারা নিজেদের সেবা করার জন্য বক্তব্য দিয়েছে। আমার মনে হয় না সেখানে জনগণ ভুল করবে।’ মহামারিতে আইন করে ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনার সিদ্ধান্ত মামলাজট কমাতে ভূমিকা রেখেছে বলে মন্তব্য করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মামলার জট করোনার কারণে আরও বাড়ার কথা ছিল। কিন্তু ভার্চুয়াল কোর্ট আইন করে দুই লাখ মামলা নিষ্পত্তি করতে পেরেছি। এই আইন না করলে এই দুই লাখ মামলা যুক্ত হতো। এখন যেসব মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে, সেটাই আছে। তাই আমি বলব আমরা মামলাজট কিছুটা হলেও কমাতে পেরেছি।’