সংশোধন হচ্ছে জাতীয় শিক্ষানীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত এক দশকে জাতীয় শিক্ষানীতির পুরোপুরি বাস্তবায়ন না হলেও এখন তা সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সময়ের সঙ্গে ‘অনেক বিষয় পরিবর্তন হওয়ায়’ শিক্ষানীতি সংশোধনের এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।

পরিকল্পনা কমিশন আয়োজিত অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুধবার এক ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় মন্ত্রী এ তথ্য জানান বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

মন্ত্রীকে উদ্ধৃত করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রায় ১০ বছর আগে শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হয়েছে। ১০ বছর একটি দীর্ঘ সময়, এই দীর্ঘ সময়ে অনেক পরিবর্তন হয়েছে। তাই এখন সময় এসেছে শিক্ষানীতিকে সংশোধন, পরিমার্জন ও সংযোজন করার। তাই সরকার শিক্ষানীতি সংশোধন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক পর্যায় ধরে সরকার ২০১০ সালে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুমোদন করে, যেখানে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মাধ্যমিক স্তর হিসেবে বিবেচনা করার কথা বলা হয়।

মাধ্যমিক স্তরের তিন ধারা অর্থাৎ সাধারণ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ধারায় কয়েকটি মৌলিক বিষয়ে অভিন্ন পাঠ্যসূচি বাধ্যতামূলক হিসেবে রাখার সুপারিশ করা হয় ওই শিক্ষানীতিতে। মাধ্যমিক স্তরের বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চতর গণিত বাধ্যতামূলক করতে বলা হয় সেখানে।

উচ্চ শিক্ষা স্তরে অভিভাবকের আয়ের ভিত্তিতে বেতন নির্ধারণ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিকেন্দ্রীকরণের কথাও ছিল অধ্যাপক কবীর চৌধুরীর নেতৃত্বে ১৮ সদস্যের শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সুপারিশে।

এসব বিষয়গুলো পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা না গেলেও ওই শিক্ষানীতি অনুযায়ী পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণি শেষে দুটি সমাপনী পরীক্ষা এখন নেওয়া হচ্ছে। তবে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা রাখার যৌক্তিকতা নিয়ে গত কয়েক বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে।

দীপু মনি বলেন, ইতোমধ্যে দেশের ‘বিপুল জনসংখ্যাকে’ শিক্ষার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। এখন প্রয়োজন শিক্ষার গুণগত মান অর্জন। শিক্ষার সকল পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। একটি সমন্বিত শিক্ষা আইন প্রণয়ন প্রায় চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

“শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে সরকার সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং আর্টস অ্যান্ড ম্যাথস এর দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে দক্ষ শ্রমশক্তি তৈরি করার পাশাপাশি প্রকৃত মানুষ তৈরি করতে। এজন্য সরকার সততা, নৈতিকতা, দেশপ্রেম, কমিউনিকেশন স্কিল, টিম বিল্ডিং, ক্রিটিক্যাল থিংকিং, প্রবলেম সলভিংসহ বিভিন্ন সফট স্কিলের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে।

অনলাইন শিক্ষার গুরুত্ব নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে কর্মক্ষেত্র এত পরিবর্তিত হবে যে বর্তমানে অর্জিত জ্ঞান ভবিষ্যতে হয়ত আর প্রয়োজন হবে না। সেক্ষেত্রে কর্মজীবীদের পক্ষে আবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে, যাতে করে কোনো কর্মজীবী যে কোনো সময় যে কোনো পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে ‘রিস্কিল’ এবং ‘আপস্কিল’ করতে পারে। সে যেন অনলাইনের মাধ্যমে শিখতে পারে- আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় সে সুযোগ রাখতে হবে।

পরিকল্পনা কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব শামসুল আলম, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক কাজী শহীদুল্লাহ ছাড়াও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এই সভায় যুক্ত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০