সংশোধিত রাজস্ব লক্ষ্য অর্জন এনবিআরের

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণে সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। গত মাসে শেষ হওয়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সব মিলিয়ে এক লাখ ৮৫ হাজার তিন কোটি ৬৯ লাখ টাকার রাজস্ব আহরণ করে এনবিআর, যা তাদের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কিছুটা বেশি। আগের অর্থবছরের চেয়ে ১৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ বেশি রাজস্ব আহরণ করেছে এনবিআর।

রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গতকাল এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে রাজস্ব আহরণ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য দেন এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। এ সময় জনগণের কাছ থেকে আহরিত রাজস্বের বিনিময়ে তাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে সরকারের অন্যান্য দফতরে চিঠি দেওয়ার কথাও জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে সর্বশেষ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ চিত্র তুলে ধরেন এনবিআরের গবেষণা ও পরিসংখ্যান বিভাগের মহাপরিচালক মো. বেলাল হোসেন চৌধুরী। এ সময় এনবিআরের বিভিন্ন বিভাগের সদস্যসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, জনগণকে সেবা দিতে ও রাষ্ট্রের উন্নয়নের জন্যই রাজস্ব আহরণ করা হয়। জনগণকে সেবা দেওয়ার দায়িত্ব এনবিআরের না হলেও এ বিষয়ে সরকারকে অবহিত করছি আমরা। দেশের বড় বড় অবকাঠামোর পাশাপাশি নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দফতরের সঙ্গে আমরা বৈঠক করেছি। ভবিষ্যতে সরকারের বিভিন্ন দফতরে এ ব্যাপারে চিঠি দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এনবিআরের।

গত অর্থবছরে রাজস্ব আহরণের সফলতা বর্ণনা করে নজিবুর রহমান বলেন, ১৯ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন রাজস্ব আহরণে ‘স্মরণকালের সবচেয়ে বড় সফলতা’। এ নিয়ে টানা তিন অর্থবছর লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আহরণের রেকর্ড সৃষ্টি করলো এনবিআর। কর ব্যবস্থায় ডিজিটাল পদ্ধতির উদ্ভাবন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অংশীদারিত্ব, করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধিসহ কর্মকর্তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এ সফলতা এসেছে। নতুন অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ আরও বাড়াতে রাজস্ব কাঠামো শক্তিশালী করা হচ্ছে। জেলা পরিষদে ভ্যাট তথ্যকেন্দ্র আরও দুই বছর চালু রাখাসহ করমেলা, ভ্যাট সপ্তাহ উদযাপনসহ সব ধরনের আয়োজন অব্যাহত থাকবে। বকেয়া কর আদায়ে এডিআর শক্তিশালী করাসহ পহেলা বৈশাখে আরও বড় আকারে হালখাতা করা হবে।

গত অর্থবছরের রাজস্ব আহরণ চিত্র তুলে ধরে বেলাল চৌধুরী বলেন, গত অর্থবছরের বাজেটে এনবিআরের জন্য দুই লাখ তিন হাজার ১৫২ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হলেও সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে এক লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। আগের বছরের চেয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি নিয়ে বছর শেষে এক লাখ ৮৫ হাজার তিন কোটি টাকার কর আহরণ করা হয়েছে। আগের অর্থবছর ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি নিয়ে এক লাখ ৫৫ হাজার ৫১৮ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছিল এনবিআর।

রাজস্ব আদায়ে এনবিআর চ্যালেঞ্জ উল্লেখ করে তিনি বলেন, নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নকে সামনে রেখে এনবিআর কর্মকর্তারা ব্যস্ত থাকায় রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে রাজস্ব আহরণ ১৪ শতাংশ কমে যাওয়ায় ও মোবাইল-সিগারেট কোম্পানিগুলো থেকে রাজস্ব আহরণ প্রত্যাশিত হয়নি। জুন মাসের শেষ দিকে রমজান ও ঈদের ছুটি এবং সাম্প্রতিক জলাবদ্ধতার কারণে রাজস্ব আহরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়েছে। এর বাইরে সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে আমদানি শুল্ক ও কর অব্যাহতি দেওয়া এবং বিভিন্ন সংস্থার কাছে আটকে থাকা ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে না পারায় লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এনবিআরকে কিছুটা বেগ পেতে হয়েছে। সরকারি কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে বকেয়া রাজস্ব ঠিকমতো আদায় হলে গত অর্থবছরে মোট রাজস্ব আহরণ দুই লাখ কোটি ছাড়িয়ে যেতো বলেও দাবি করেন তিনি।

 

 

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০