শেয়ার বিজ ডেস্ক: ওভার দ্য কাউন্টার (ওটিসি) মার্কেটের কোম্পানির শেয়ারগুলো মূল মার্কেটে নিয়ে আসার জন্য সরকারের পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। খবর বাসস।
তিনি জানিয়েছেন, এ লক্ষ্যে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। ওটিসি মার্কেটের শেয়ার মূল মার্কেটে নিয়ে আসা নির্ভর করে কোম্পানির আর্থিক সচ্ছলতা এবং সিকিউরিটিজ আইন পরিপালন তথা নির্দিষ্ট সময়ে এজিএম/ইজিএম সম্পন্ন ও লভ্যাংশ দেওয়ার ওপর।
জাতীয় সংসদে গতকাল এসএম মোস্তফা রশিদীর (খুলনা-৪) তারকা চিহ্নিত এক প্রশ্নের জবাবে এসব তথ্য জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন, বর্তমানে সিকিউরিটিজ মার্কেট নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বিএসইসি ওটিসি মার্কেটের কোম্পানি শেয়ারগুলোকে নিবিড় পর্যবেক্ষণের মধ্যে রেখেছে, যাতে করে ওটিসি মার্কেটের কোম্পানিগুলোর শেয়ার মূল মার্কেটে লেনদেনের সুযোগ সৃষ্টি হয় ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়।
আবুল মাল আবদুল মুহিত আরও জানিয়েছেন, বর্তমানে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত মোট ৬৬টি কোম্পানির শেয়ার ওটিসি মার্কেটে রয়েছে। ওটিসি মার্কেটের কোম্পানি শেয়ারগুলো মূল মার্কেটে আনা সম্ভবপর না হওয়ার কারণগুলো হলো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেয়ার অজড়োকৃত (ডিমেট) না করা; পুঞ্জীভূত লোকসানের মধ্যে থাকা; উৎপাদনে না থাকা এবং সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনে ব্যর্থতা।
সংসদে সরকারি দলের বেগম নাসিমা ফেরদৌসীর অপর এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেছেন, বর্তমানে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৬৩ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি ডেটাবেজে রক্ষিত ঋণ তথ্যের ভিত্তিতে (নভেম্বর-২০১৬) সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ খেলাপি ব্যক্তি বা কোম্পানির সংখ্যা দুই লাখ ১৩ হাজার ৫৩২ জন।
মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ঋণ শ্রেণীকরণ বিবরণী মোতাবেক বর্তমানে (সেপ্টেম্বর-২০১৭) ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৫৮ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। অন্যদিকে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা, যা মোট ঋণের ৮ দশমিক ৯৪ ভাগ। একই সময়ে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ছিল যথাক্রমে ৩৪ হাজার ৪৩৮ ও ৩২ কোটি টাকা।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে অর্থ ঋণ আদালত আইন ২০০৩, দেউলিয়া আদালত আইন ১৯৯৭ ও পাবলিক ডিমান্ড রিকোভারি এ্যাক্ট, ১৯১৩ রয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, খেলাপি বা শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ ও তদারকির জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকে একটি পৃথক টাস্কফোর্স সেল রয়েছে। ওই সেলের মাধ্যমে অর্থ ঋণ আদালতসহ অন্যান্য আদালতে দায়ের করা মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।
মুহিত বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ও তার বিভিন্ন শাখা অফিসগুলো ব্যাংকারদের সঙ্গে বিভিন্ন সমন্বয়ে সভায় ব্যাংকিং খাতের শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের কার্যকর পদ্ধতি অবলম্বনের বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ বা নির্দেশনা দেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থ ঋণ আদালত আইন, ২০০৩-এর অধীনে আদালতের বাইরে বিকল্প পদ্ধতিতে বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমেও শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সম্পাদনের মাধ্যমে শ্রেণীকৃত ঋণ আদায়ে কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, খেলাপি ঋণ আদায়ের লক্ষ্যে স্থানীয় ও বিশ্ব বাণিজ্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সময়ে সময়ে পুনঃতফসিলিকরণ ও পুনর্গঠন নীতিমালার শর্ত শিথিল করা হয়েছে।

Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 4:07 am
সংসদে অর্থমন্ত্রী: ওটিসি মার্কেটের শেয়ার মূল পুঁজিবাজারে আনা হবে
শেষ পাতা ♦ প্রকাশ: