নিজস্ব প্রতিবেদক: ‘মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্যই রাঙামাটির লংগদুর যুবলীগ নেতা নূরুল ইসলাম নয়নকে হত্যা করা হয়’ বলে গ্রেফতারকৃত দুজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পর জানিয়েছে পুলিশ।
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের পরিদর্শক সন্তোষ চাকমা গতকাল শনিবার গণমাধ্যমকে বলেন, ব্যক্তিগত বিরোধ বা পূর্ব শত্রুতার জেরে নয়, মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের জন্যই নয়নকে হত্যা করা হয়। গত ১ জুন খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল এলাকা থেকে নয়নের লাশ উদ্ধারের নয়দিন পর গতকাল (শনিবার) ওই দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আটক জুনেল চাকমার (১৭) বাড়ি লংগদুর রাঙ্গিপাড়ায়। আর রুনেল চাকমা (৩২) খাগড়াছড়ির বাবুছড়ার বাসিন্দা। হত্যাকাণ্ডের সময় তাদের সঙ্গে লংগদুর রাঙ্গিপাড়ার বাবুরাজ চাকমা নামে আরও একজন ছিলেন।’
রাঙামাটির লংগদু সদর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নূরুল ইসলাম নয়ন ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালানোর কাজ করতেন। তার লাশ উদ্ধারের পরদিন প্রতিবাদ মিছিল থেকে লংগদু উপজেলা সদরে পাহাড়িদের কয়েকটি গ্রামে হামলা ও কয়েকশ বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে লংগদু উপজেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন।
সন্তোষ চাকমা আর জানান, ‘গত শুক্রবার চট্টগ্রাম থেকে প্রথমে জুনেলকে গ্রেফতার করা হয়। পরে দীঘিনালা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে রুনেলকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, গত ৩১ মে লংগদু বাজারে বাজাজ প্লাটিনাম মডেলের একটি মোটরসাইকেল পছন্দ হলে জুনেল ও বাবুরাজ সেটি ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। ওই মোটরসাইকেলটি ছিল নয়নের। লংগদু থেকে খাগড়াছড়ি সদরে যাওয়ার কথা বলে সাতশ টাকায় তারা মোটরসাইকেলটি ভাড়া নেয়। ১ জুন সকালে লংগদু বাজার থেকে রওনা হওয়ার পর দীঘিনালা বাস স্টেশন থেকে রুনেল তাদের সঙ্গে ওঠে। মোটরসাইকেলে নয়নসহ চারজন খাগড়াছড়ির খাগড়াপোল পর্যন্ত যায়। খাগড়াপোলে সেতুর সংস্কার কাজ চলছিল। সেতুর কাজে ব্যবহূত একটি লোহার রড চেয়ে নেয় রুনেল। ফিরতি পথে দীঘিনালার উদ্দেশে রওনা হয়। খাগড়াছড়ি-দীঘিনালা সড়কের চার মাইল এলাকায় ‘প্রস্রাব’ করার কথা বলে মোটরসাইকেল থামায় তারা। মোটরসাইকেল থেকে নেমে নয়নকে রড দিয়ে আঘাত করে রুনেল। এ সময় নয়ন উঠে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আরও কয়েকবার রড দিয়ে আঘাত করা হয়। এরপর নয়নকে ঘটনাস্থলে ফেলে রেখে মোটরসাইকেলটি উন্দাল বাগান এলাকায় রুনেলের এক আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে তারা চলে যায়। কিন্তু বিক্রির চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে গত ৪ জুন মোটরসাইকেলটি দীঘিনালার মাইনী নদীতে ফেলে দেয়। রুনেল ও জুনেলের তথ্য অনুযায়ী নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা গতকাল (শনিবার) সকালে তল্লাশি শুরু করেন এবং বিকাল সোয়া ৪টার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় দড়ি বেঁধে মোটরসাইকেল টেনে তীরে তোলা হয়।’