Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 4:16 am

সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও অনেক কোম্পানি নামমাত্র লভ্যাংশ দেয়

পুঁজিবাজারে অনেক কোম্পানি আছে যাদের উৎপাদন সক্ষমতা, এনএভি, ইপিএসসহ অন্যান্য সবকিছু ভালো থাকার পরও শেয়ারহোল্ডারদের নামমাত্র ডিভিডেন্ড দেয়। অথচ তারা আরও অনেক বেশি ডিভিডেন্ড দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। শুধু এ ক্যাটেগরিতে থাকার জন্য ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়ে বসে থাকে এমন অনেক কোম্পানি আছে বাজারে। এ বিষয়টি নিয়ে কিছু একটা করা দরকার। অন্যদিকে দেশের পুঁজিবাজার শুধু শেয়ার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। এখানে আরও অনেক পণ্য নিয়ে এসে বাজারকে আকর্ষণীয় করে তোলা দরকার। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের গ্রন্থনা ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক অধ্যাপক মুহাম্মদ মহসীন এবং শ্যামলী ইকুইটিজ লিমিটেডের এমডি সাজেদুল ইসলাম শামিম।
মুহাম্মদ মহসীন বলেন, কিছুদিন ধরে বাজার ধারাবাহিকভাবে নি¤œমুখী প্রবণতায় আছে। ভালো শেয়ারগুলোর দরও পড়ছে। এতে বিনিয়োগকারীরা প্রচুর ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। আর এ ধরনের বাজার নিয়ে আসলে গর্ব করার কিছু নেই। পুঁজিবাজারের সবচেয়ে বড় জায়গা হচ্ছে টার্নওভার। এ টার্নওভারেই বেশ কিছুদিন আগে ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটেছিল। আর যখন কোনো একটি পরিবর্তনের কারণে ব্যাপক উল্লম্ফন ঘটে তখন বোঝা যায় যে বাজারে খারাপ কিছু ঘটবে। তারই প্রতিফলন এখন আমরা বাজারে দেখতে পাচ্ছি। যে কারণে বর্তমানে বাজারের টার্নওভার, শেয়ারদরসহ সবকিছুর পতন ঘটছে। এতে বোঝা যাচ্ছে পুঁজিবাজারে একটি কারসাজি চক্র রয়েছে যারা এতটাই শক্তিশালী যে এটিকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। আমরা যারা আর্থিক সংস্থার লোকজন আছি তারা এ বিষয়টিকে দেখার চেষ্টা করি যে, শেয়ারের দর বাড়ার আগে বা পরে কোনটির পরিবর্তন ঘটছে? এখানে মূলত টার্নওভারের পরিবর্তন ঘটে। কাজেই যখন বাজারে টার্নওভারে হঠাৎ বাড়ছিল তখন আমরা বলেছিলাম এ বৃদ্ধি স্বাভাবিক নয়। আর তখন ওই টার্নওভারের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শেয়ারের দরও অযৌক্তিক হারে বাড়ছিল। তারই একটি নেতিবাচক প্রভাব বর্তমানে পুঁজিবাজারে পড়ছে বলে আমার মনে হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে এজিএম করা হয়। কিন্তু সেখানে কোনো বিনিয়োগকারীরা যান না। কারণ তারা সেখানে গিয়ে মালিকদের দাপটে কোনো কথা বলতে পারেন না। আর এটি এসইসি জানে কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। অ্যামেরিকার স্টক মার্কেটে বিনিয়োগকারীদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য অসংখ্য সংস্থা আছে কিন্তু আমাদের দেশে তা নেই। এখানে ডিভিডেন্ডের ক্ষেত্রে কোম্পানির ডিভিডেন্ড পলিসি কি সেটি আগে ঘোষণা করতে হবে। আর সে ডিভিডেন্ড পলিসি যদি কোনো কোম্পানি না মানে তাহলে তার জন্য জবাবদিহি করতে হবে যে, কেন তুমি ডিভিডেন্ড পলিসি মানছো না? আর সে জবাবদিহির জায়গা প্রথমতো এজিএম। অথচ আমাদের এজিএম পার্টির দৌরাত্ম্যে কেউ যেতে পারে না। আর এটি দেখার দায়িত্ব এসইসির। কিন্তু তারা দেখছে না বা তারা এটির ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। কাজেই বাজার ভালো করতে হলে এ বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ এবং এটির যথার্থ ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
সাজেদুল ইসলাম শামিম বলেন, পুঁজিবাজারে অনেক কোম্পানি আছে যাদের উৎপাদন, এনএভি, ইপিএসসহ অন্যান্য সবকিছু ভালো থাকার পরও নামমাত্র ডিভিডেন্ড দেয়। অথচ তারা আরও অনেক বেশি ডিভিডেন্ড দেওয়ার সক্ষমতা রাখে। শুধু এ ক্যাটেগরিতে থাকার জন্য ১০ শতাংশ ডিভিডেন্ড দিয়ে বসে থাকে এমন অনেক কোম্পানি আছে বাজারে। আমি মনে করি এ বিষয়টি নিয়ে কিছু একটা করা দরকার। অন্যদিকে দেশের পুঁজিবাজার শুধু শেয়ার দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশে ১৯৫৪ সালে স্টক এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু অত্যান্ত দুর্ভাগ্যের বিষয় আমরা আজ পর্যন্ত ইকুইটির বাইরে আর কোনো পণ্য আনতে পারিনি।

শ্রুতিলিখন: রাহাতুল ইসলাম