নিজস্ব প্রতিবেদক: নানা কড়াকড়িতে গ্রাহক সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ৭৩১ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের চেয়ে ১০ হাজার ৯৩১ কোটি টাকা কম। গত অর্থবছরের একই সময় এর পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৬৬২ কোটি টাকা।
খাত-সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে সব পণ্যতে লাগামহীন দাম বেড়েছে। ফলে মানুষের খরচের চাহিদা বেড়ে যায়। খরচের সঙ্গে পেরে না ওঠায় অনেক মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙতে শুরু করেন। এছাড়া যাদের কাছে কিছু সঞ্চয় রয়েছে, তাড়াও কড়াকড়ির কারণে সঞ্চয়পত্রে তা বিনিয়োগে আগ্রহ হারাচ্ছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে দেশের বিভিন্ন ব্যাংক, ডাকঘর ও অন্যান্য সঞ্চয় অফিস থেকে নিট ৩৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর আগের মাস আগস্টে মাত্র ৮ কোটি টাকার নিট সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৩৯৩ কোটি ১১ লাখ টাকার নিটসঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে।
চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে সঞ্চয়পত্র থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার ঋণ নেবে সরকার। গত ৯ জুন জাতীয় সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান। তবে নতুন অর্থবছরে ৫ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে গ্রাহকের আয়কর রিটার্ন দাখিলের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। এতে এ খাতের বিক্রি কমে গেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এর আগের ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ৪২ হাজার কোটি টাকা নিট ঋণ নিয়েছিল সরকার। যার পরিমাণ ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র খাতের নিট ঋণ ছিল ৪৯ হাজার ৩৯৩ কোটি টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সরকার ঋণ নিয়েছিল ৪৬ হাজার ৫৩০ কোটি টাকা। এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে নিয়েছিল ৫২ হাজার ৪১৭ কোটি টাকা।