সঠিক নিয়মে দীর্ঘদিন মাংস সংরক্ষণ

শিপন আহমেদ: আর মাত্র কয়েক দিন। এর পরই ঈদুল আজহা। ঈদুল আজহা মানেই পশু কোরবানি দেওয়া। আর এ ঈদ আনন্দের এক বড় অংশজুড়ে থাকে গরু কিংবা খাসির মাংস দিয়ে ভুরিভোজ ও অতিথিদের আপ্যায়ন করা। আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী ও গরিবদের মাঝে মাংস বিতরণের পর অবশিষ্ট মাংস সংরক্ষণের প্রয়োজন পড়ে। কারণ, এত মাংস একসঙ্গে খাওয়া সম্ভব নয়। অর্থাৎ সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। কেননা, একটু ভুল বা অসতর্কতার কারণে নষ্ট হয়ে যেতে পারে মাংস। মাংস সংরক্ষণের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন রেফ্রিজারেটর। অনেকের বাসায় রেফ্রিজারেটর নেই। কাজেই তাদের ঝামেলা পোহাতে হয়। আবার যাদের বাসায় ফ্রিজ আছে; কিন্তু সঠিক পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণ করতে জানেন না, তাদের সমস্যা কিন্তু কম নয়। এসব ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে ঘরোয়া পদ্ধতিতে মাংস সংরক্ষণের কিছু উপায় জেনে নিতে পারেন।
# প্রথমে রেফ্রিজারেটর ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে। দীর্ঘদিন মাংস সংরক্ষণের জন্য পরিষ্কার থাকা জরুরি। কারণ, আগের মাছ ও মাংসের কারণে গন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে
# মাংস সংরক্ষণের আগে ভালোভাবে রক্ত পরিষ্কার করতে হবে। পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। মাংস থেকে পানি ঝরে গেলে ভালো মানের পলিথিন বা প্লাস্টিকের প্যাকেটে ভালোভাবে মুখ পেঁচিয়ে বা বন্ধ করে ফ্রিজে রাখতে হবে। একেকটি মাংসের প্যাকেট রাখার সময় মাঝে মোটা কাগজ বা কাপড়ের টুকরো রাখা যেতে পারে। এতে এক প্যাকেটের সঙ্গে অন্য প্যাকেট আটকে যাওয়ার ঝুঁকি থাকবে না
# মাংস ধুয়ে সংরক্ষণ করতে না চাইলে শুকনো কাপড় দিয়ে রক্ত পরিষ্কার করেও ফ্রিজে রেখে সংরক্ষণ করতে পারেন
# প্রথম তিন থেকে চার ঘণ্টা পর্যন্ত মাংস শক্ত থাকে। তাই এ সময় ফ্রিজে না রাখাই ভালো। কিছুটা নরম হলে সংরক্ষণ করতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, মাংসের টুকরো যাতে বেশি বড় না হয়। ছোট টুকরো মাংস সংরক্ষণের জন্য ভালো
# ৪০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার নিচে কাঁচা মাংস চার থেকে ছয় দিন রাখা যায়। এছাড়া জিরো ডিগ্রি ফারেনহাইট তাপমাত্রার নিচে রাখলে মাংস ১২ মাস ভালো থাকবে। এ জন্য মাংস রাখার সময় তাপমাত্রা কমিয়ে দিতে হবে। এতে মাংস দ্রুত জমাট বাঁধে। তবে কলিজার ক্ষেত্রে ভিন্ন। কলিজা বেশিদিন ফ্রিজে না রাখাই ভালো। এতে স্বাদ একেবারেই নষ্ট হয়ে যায়
# মাংস ফ্রিজে রাখার আগে প্যাকেটের গায়ে তারিখ লিখে রাখুন। এতে মাংস কত দিন সংরক্ষণ করা হয়েছে, সেটা সহজেই বোঝা যাবে।

ফ্রিজ না থাকলে সংরক্ষণের উপায়
# মাংস ভালোভাবে ধুয়ে পরিমাণমতো হলুদ ও লবণ মাখিয়ে জ্বাল দিতে হবে। দিনে দুবার করে জ্বাল দিলে ১৫ থেকে ২০ দিন ভালো রাখা যাবে। তবে এক্ষেত্রে মাংসে চর্বির পরিমাণ বেশি থাকলে তা অনেক দিন ভালো থাকে
# মাংস শুকিয়ে দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায়। প্রথম মাংস পাতলা ও ছোট করে কেটে নিন। এরপর লবণ ও হলুদ মেখে কড়া রোদে কমপক্ষে পাঁচ থেকে ছয় দিন শুকাতে হবে। খেয়াল রাখবেন যেন কোনো চর্বি না থাকে। এ মাংস রান্নার আগে এক ঘণ্টা গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। পরে স্বাভাবিক নিয়মে রান্না করতে হবে
# মাংসে লবণ আর হলুদ মিশিয়ে ডুবো তেলে ভেজে সংরক্ষণ করতে পারেন। এতে মাংস নষ্ট হবে না। অনেক দিন ভালো থাকবে
# লবণ ও লেবুর রস মিশিয়ে মাংস সংক্ষরণ করা যায়। এক্ষেত্রে মাংস বড় টুকরো বা কিমা করে লবণ ও লেবুর রস মেখে রেখে দিলে বেশ কয়েক দিন রাখা যাবে।

সতর্কতা
রেফ্রিজারেটর পরিষ্কার না করে মাংস ধুয়ে পানিসহ সংরক্ষণ করা যাবে না। এতে মাংস তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়ে যায়।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০