সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জেলায় নিহত ৭ জন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাজধানীসহ সারাদেশে গতকাল শুক্রবার সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় ৩ জন নিহত হয়েছেনÑবাজিতপুরে ১ জন, ফরিদপুরের মধুখালীতে ১ জন ও বাজিতপুরে ১ জন এবং নরসিংদীতে ১ জন নিহত হয়েছেন।

রাজধানীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুই ভাইসহ তিনজন নিহত হয়েছেন। ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় ট্রাকচাপায় দুজন এবং খিলক্ষেত এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পিকআপভ্যান উল্টে একজন নিহত হন। গতকাল শুক্রবার তাদের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া। বৃহস্পতিবার রাতে সড়ক দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।

ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকায় সুমাত্রা ফিলিং স্টেশনের সামনে দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেলে থাকা সিফাতুর রহমান সাফিন ওরফে রাহুল মারা যান এবং সঙ্গে থাকা তার ভাই রাফি আহত হন। পরে রাফিকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে তিনি মারা যান।

তাদের বাসা মিরপুরের বাউনিয়া বাঁধ এলাকায় বলে জানান চাচা মনির হোসেন। তিনি জানান, রাতে রাহুল ও তার ছোট ভাই রাফি মোটরসাইকেল চালিয়ে পল্লবীর কালশী ব্রিজ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বালুর ট্রাক তাদের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে দুজনে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন। 

ক্যান্টনমেন্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুর রহমান জানান, নিহতরা দুই ভাই। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে মোটরসাইকেলে চালিয়ে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনায় তারা দুজন মারা যান। বিস্তারিত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে খিলক্ষেতে পিকআপভ্যান উল্টে নিহত আফজালের ভাই মাহফুজ হোসেন জানান, আফজাল থাকতেন মিরপুর-১২ নম্বরে। গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায়। ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করতেন আফজাল। রাতে একটি পিকআপভ্যানে করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে যাচ্ছিলেন।

খিলক্ষেত এলাকায় পিকআপভ্যানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে গেলে গুরুতর আহত হন আফজাল। তখন স্থানীয়রা তাকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেন। পরে সেখান থেকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা রাতে মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে কিশোরগঞ্জের জেলার বাজিতপুর উপজেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ইয়াছিন হাসান (১৮) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার সরারচর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত ইয়াছিন হাসান গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের উত্তর খামের গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে।

আহত সিফাত (১৮) গাজীপুর জেলার কাপাসিয়া উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের উত্তর খামের গ্রামের আকবর আলীর ছেলে এবং সানজিদ (১৯) একই গ্রামের মাসুদ মিয়ার ছেলে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি মোটরসাইকেলে করে ইয়াছিন হাসানসহ তিনজন কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রাম ভ্রমণের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। তারা বাজিতপুর উপজেলার সররাচর এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি টমটমের (টলি) সঙ্গে মোটরসাইকেলটির সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ইয়াছিন মারা যান। পরে স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত সিফাত ও সানজিদকে উদ্ধার করে বাজিতপুরের জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। 

বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মুর্শেদ জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অন্যদিকে ফরিদপুরের মধুখালীতে পিকআপের ধাক্কায় মো. বাদশা (২৭) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৮ জুন) সকালে মধুখালী-বালিয়াকান্দি আঞ্চলিক সড়কের বিড়ালদহ এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত বাদশা ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার খোদাবাসপুর গ্রামের নিজাম শেখের ছেলে। তিনি রাঙামাটির নাইক্ষ্যংছড়ি বিজিবিতে কর্মরত ছিলেন। ছুটিতে বাড়িতে আসছিলেন তিনি।

এছাড়া ফরিদপুরের সালথায় ট্রলি উল্টে গিয়ে মো. ইমন মোল্যা (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। শুক্রবার সকালে সালথা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কবিরুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) বিকাল ৪টার দিকে উপজেলার বড় লক্ষণদিয়ার পূর্বপাড়া শালীডাঙ্গা খালপাড় এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ইমন উপজেলার গট্টি ইউনিয়নের বড় লক্ষণদিয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মান্দার মোল্লার একমাত্র ছেলে।

এদিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নরসিংদীর রায়পুরায় কাভার্ডভ্যান-পিকআপ ও লেগুনার ত্রিমুখী সংঘর্ষে বাচ্চু মিয়া (৩০) নামে এক চালক নিহত হয়েছেন। এ সময় গুরুতর আহত হয়েছেন পিকআপ চালকের সহকারী ফয়সাল (২৩)।

শুক্রবার দুপুর দেড়টায় রায়পুরা উপজেলার মাহমুদাবাদের নামাপাড়া ঢাকা সিলেট মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে মহাসড়কের উভয় পাশে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। বিকাল ৩টার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

নিহত মো. বাচ্চু মিয়া ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা উপজেলার নয়নপুর গ্রামের বাসিন্দা। আহত ফয়সাল কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলার মুদ্রম এলাকার করিম মিয়ার ছেলে। তারা পিকআপের চালক ও চালকের সহকারী ছিলেন।

ভৈরব ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. রাশেদ বলেন, দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় চাপাপড়া চালকের মরদেহ উদ্ধার করি। মরদেহ ভৈরব হাইওয়ে পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

ভৈরব হাইওয়ে থানার সার্জেন্ট সাকের আহমেদ বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দীর্ঘ দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় পিকআপপে চাপা পড়া চালকের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। গাড়িগুলো জব্দ করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০