নিজস্ব প্রতিবেদক: চলতি বছরের প্রথম ৯ মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ হাজার ৭৮০ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তনে ‘সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপ’ অনুষ্ঠানে এমনটি জানানো হয়। যৌথভাবে এ সংলাপের আয়োজন করে বাংলাদেশ ইনিশিয়েটিভ (বিআই) ও ড্রাইভার্স ট্রেনিং সেন্টার (ডিটিসি)।
সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক সংলাপের সঞ্চালনা করেন ঢাকা পোস্টের প্রধান প্রতিবেদক পার্থ সারথি দাস। এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডিটিসি চেয়ারম্যান নুর নবী শিমু।
সংলাপে বক্তারা বলেছেন, সড়ক নিরাপদ করতে হলে কমপক্ষে ৬৭ লাখ চালককে প্রশিক্ষণের আওতায় আনতে হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর অবহেলার কারণে এই করোনাকালীন সময়েও সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে। এ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য সরকারের পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাকে এগিয়ে আসতে হবে এবং এই খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
তাঁরা বলেন, ড্রাইভারিং এই সেক্টরে যদি শিক্ষিত জনগোষ্ঠী না আসে এবং চালকদের জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা না হয়, তাহলে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করা কখনোই সম্ভব না। দেশে চালকদের নিরাপদ কাজের পরিবেশ নেই। চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই। প্রতিদিন চালকদের একটা লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। মালিকদের দেওয়া এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে গিয়ে অনেক সময় বেপরোয়া গাড়ি চালায় চালকেরা। তাই দুর্ঘটনা ঘটে বেশি।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার ধরন বদলেছে মুখোমুখি দুর্ঘটনার চেয়ে পেছন থেকে আঘাতের ঘটনা ঘটছে বেশি। এতে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। এছাড়া নভেম্বর-ডিসেম্বর ও জানুয়ারি এই তিন মাসে ২৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটে।
একটি উপস্থাপনের মাধ্যমে তিনি জানান, সড়ক দুর্ঘটনায় যুবকের মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। গত ২০১৯ সালে ৩৯৩৭টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মারা যায় ৪৩৫৮ জন, আহত হয় ৭২৪০ জন। এ ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ৩৮ হাজার কোটি টাকা। ২০২০ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ৩২ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা। আর চলতি বছর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সড়ক দুর্ঘটনার ক্ষতির পরিমাণ ২৯ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশে ২২২ ব্লগস্পট যদি ঠিক করা হয়। তাহলে দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশই কমে আসবে। তবে আমাদের দাবি অনুযায়ী সর্বশেষ মাত্র ১২টি ঠিক করা হয়েছে।
সংলাপে অংশগ্রহণ করেন, বিআরটিএর সহকারী পরিচালক শহীদুল আজম, বিআরটিসির উপ মহাব্যবস্থাপক (পরিচালন) শূকদেব ঢালী, সাবেক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সমাজসেবক জিএম কামরুল ইসলাম, নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের তাসনিয়া মেহরীন, ড্রাইভারস ওয়েলফেয়ারের বাদল আহমেদ, মোটর ড্রাইভিং ইনস্ট্রাক্টর অ্যাসোসিয়েশনের আবুল বাশারসহ প্রশিক্ষক, চালকেরা।