নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্রোকাররা সরকারকে নিয়মিত রাজস্ব প্রদান করে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। কিন্তু আজ ব্রোকাররা চরমভাবে নিগৃহীত ও অবহেলিত। এমনিতে আমরা বিগত বহু বছর যাবৎ আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। সাম্প্রতিক মন্দাবাজার পরিস্থিতি ও শেয়ারের টানা দরপতনের ফলে দৈনন্দিন ট্রেড কমে যাওয়ায় আমরা অফিস পরিচালনা ব্যয় মেটাতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছি। তার ওপর বিভিন্ন সনদ নবায়নে বিএসইসি ও ডিএসই কর্তৃক ব্রোকারদের ওপর আরোপিত ফি, যেমনÑডিপি সনদ নবায়ন ফি চার হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া স্টক ব্রোকার সনদ নবায়ন ফি আগে ছিল ১০ হাজার টাকা, বর্তমানে সেটি করা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা, স্টক ডিলার সনদ নবায়ন ফি ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার এবং ট্রেক নবায়ন ফি ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। আর এই অস্বাভাবিক ফি আমাদের ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়েছে। গত সোমবার ডিএসই ব্রোকার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ডিবিএ) সদস্যদের জন্য আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী ও আলোচনা সভায় ডিবিএর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড ডি’ রোজারিওর সভাপতিত্বে এবং সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাজিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সদস্যরা এসব কথা বলেন।
ব্রোকাররা পুঁজিবাজারে তাদের কার্যক্রম ও সেবার মান ধরে রাখতে ডিপি সনদ নবায়ন ফি দুই লাখ টাকা থেকে কমিয়ে আগের চার হাজার টাকার সঙ্গে ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা, স্টক-ডিলার ও স্টক-ব্রোকার সনদ নবায়ন ফি ৫০ হাজার টাকা থেকে কমিয়ে আগের ১০ হাজার টাকার সঙ্গে অতিরিক্ত ২০ শতাংশ বৃদ্ধি করা এবং ট্রেক সনদ ফি এক লাখ টাকা থেকে কমিয়ে আগের ৫০ হাজার টাকায় বহাল রাখার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তা সমাধানে ডিবিএর প্রতি জোর দাবি জানান।
সভায় তারা বর্তমান পুঁজিবাজার পরিস্থিতি ও ব্রোকারদের বিদ্যমান নানা সমস্যা নিয়ে নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন। বাজার পরিস্থিতি নিয়ে তারা বলেন, বাজারের বর্তমান সংকট দীর্ঘস্থায়ী নয়, এটি সাময়িক। খুব শিগগিরই বাজার আবার ইতিবাচক ধারায় ফিরবে। তাই বাজারের বিরাজমান মন্দা পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আমাদের যার যার অবস্থান থেকে সাধ্যমতো কাজ করে যাওয়া উচিত। আমরা ব্রোকাররা বাজারের দুর্দিনে অতীতে বাজার ছেড়ে যাইনি, বরং বাজারকে বিভিন্নভাবে সহায়তা দিয়ে একে কার্যকর রেখেছি।
এ সময় ব্রোকাররা বিনিয়োগকারীদের যৌক্তিক ও জরুরি প্রয়োজনে হাউসে নগদ অর্থ লেনদেনের অবাধ সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমতি প্রত্যাশা করে বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনার জন্য তারা ডিবিএর প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া বর্তমান বুক বিল্ডিং সিস্টেমে ত্রুটিপূর্ণ বিডিং পদ্ধতির সংশোধনী এনে ওই সিস্টেমের যথাযথ স্বরূপ ও বাস্তবায়নের বিষয়ে ডিবিএর কার্যকর পদক্ষেপ আশা করেন।
ব্রোকাররা তাদের বক্তব্যে আরও বলেন, সংগঠন হিসেবে ডিবিএর প্রধান দায়িত্ব ব্রোকারদের ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষা করা এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিএসইসি, ডিএসইসহ অন্যান্য বাজারসংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের সমস্যা সমাধান করে ব্যবসায়িক পথ সুগম করা। অথচ ডিবিএ এখন পর্যন্ত ব্রোকারদের স্বার্থ আদায়ে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখতে সক্ষম হয়নি। তারা বিশ্বাস করে, ডিবিএ ব্রোকারদের একটি শক্তিশালী সংগঠন হিসেবে তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ের পাশাপাশি পুঁজিবাজারকে সুসংহত ও সুসংগঠিত রাখতে আগামী দিনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।