মায়ের প্রথম দুধ বা শালদুধ খাওয়ানোর হার মাত্র ৫১ শতাংশ। ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালে নিয়মিতভাবে বুকের দুধ খাওয়ানোর হার ৯০ শতাংশ থেকে কমে ৮৭ শতাংশ হয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশি মায়েরা প্রায়ই সন্তানের জন্য ফর্মুলা খাবার পছন্দ করেন এবং স্বামীকে মাছ-মাংস কেনার প্রয়োজনীয়তা বোঝাতে গিয়ে সমস্যার মুখোমুখি হন। কোনো কোনো কমিউনিটিতে শিশুকে মাছ ও মাংস খাওয়ানোর ক্ষেত্রে কুসংস্কার রয়েছে। কখনও কখনও বাড়িতে এসব খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকলেও ছোট শিশুদের তা দেওয়া হয় না। জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে নবজাতককে অবশ্যই মায়ের বুকের দুধ, যেটা ‘শালদুধ’ নামে পরিচিত তা খাওয়াতে হবে। এই দুধে এমন অনেক উপাদান থাকে যেগুলো নবজাতককে সাধারণ কিছু অসুখ, যেমন ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া থেকে সুরক্ষা দেয়। কিন্তু প্রাথমিক এই ব্যবস্থা নেওয়া এবং দুই বছর পর্যন্ত শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো পরিবারের সংখ্যা এখনও অনেক কম। ভৌগোলিক অবস্থান এবং অর্থনৈতিক অবস্থার বিচারেও এক্ষেত্রে অসমতা রয়েছে। সিলেট বিভাগে শিশুকে ‘শালদুধ’ খাওয়ানোর হার ৭৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ হলেও খুলনায় তা ৪৭ দশমিক তিন শতাংশ।
দরিদ্র ও ধনী পরিবারের মায়েদের মধ্যেও সন্তানকে শালদুধ খাওয়ানোর ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে। দরিদ্র মায়েদের ক্ষেত্রে এই হার ৪৮ দশমিক এক শতাংশ হলেও ধনী পরিবারের মায়েদের ক্ষেত্রে তা ৬২ দশমিক পাঁচ শতাংশ। বাংলাদেশ শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করলেও এটা আবার উদ্বেগজনকভাবে কমে আসছে। ২০১১ সাল থেকে ২০১৪ সালে নিয়মিতভাবে বুকের দুধ খাওয়ানোর হার ৯০ শতাংশ থেকে কমে ৮৭ শতাংশ হয়েছে। শালদুধে এমন অনেক উপাদান থাকে যেগুলো নবজাতককে সাধারণ কিছু অসুখ, যেমন ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া থেকে সুরক্ষার জন্য জরুরি। ছোট শিশুর খাবারের মানদণ্ড তৈরিতে সরকারকে সাহায্য করছে ইউনিসেফ কাউন্সেলিং এবং মানুষের প্রয়োজনে দ্রুত সাড়া দেওয়ার দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ইউনিসেফ। স্বাস্থ্যকর্মীরা একেবারে প্রান্তিক পর্যায়ে কাজ করেন এবং শিশুর পুষ্টি নিশ্চিত করার পদ্ধতিগুলো মা, সেবাদাতা ও পরিবারের সদস্যদের সামনে তুলে ধরেন।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে