Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 6:57 pm

সন্তুষ্টির কারণ নেই, ষড়যন্ত্র চলছে: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও ‘সন্তুষ্টির কোনো কারণ’ নেই বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখনও অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্রের অভাব নেই। ষড়যন্ত্রকারীরা সুযোগ পেলে স্বাধীনতাকামী মানুষের ওপর আঘাত করবে। তাই ঐক্যকে আরও সুদৃঢ় করতে হবে।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে গতকাল শুক্রবার বিকালে আয়োজিত এক সংহতি সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল গুমের শিকার ব্যক্তিদের পরিবারকে ভাতা দেয়ার ব্যবস্থা করতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, অনেক পরিবার কষ্ট করে চলছে। তাদের পাশে দাঁড়ানো রাষ্ট্রের দায়িত্ব।
আওয়ামী লীগ সরকার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে বলে উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এই প্রথম বাংলাদেশে স্বৈরাচারের অপকর্মের বিরুদ্ধে তদন্ত করার জন্য জাতিসংঘ থেকে একটি দল এসেছে। তারা দুমাসে যেসব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, তার তদন্ত করবে। তদন্তদল যাতে ২০০৯ সাল থেকে হওয়া অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ন, হত্যাকাণ্ড, গুমসহ মানবতাবিরোধী সব অপরাধের তদন্ত করে, সেই উদ্যোগ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত গণতন্ত্রে ফিরে যাওয়া ও সংস্কারের ব্যবস্থা করবে বলেও আশা ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।

সংহতি সমাবেশে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনেরাও বক্তব্য দেন। বিএনপি নেতা নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদী বলেন, স্বামীকে খুঁজে পেতে শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি দেখা করেছিলেন। তখন শেখ হাসিনা তাকে আশ্বাস দিয়েছিলেন। সেটি ছিল নাটক। স্বামীকে এখনও খুঁজে না পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তাহসিনা রুশদী বলেন, এ কারণে তিনি স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করতে পারছেন না। গুমের ঘটনার ‘খলনায়ক’ সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
নিখোঁজ বিএনপি নেতা সাজেদুল ইসলাম সুমনের বোন সানজিদা ইসলাম সমাবেশে বলেন, তার ভাই বিএনপির রাজনীতি করতেন। এটা কোনো অপরাধ হতে পারে না, যে অপরাধের জন্য তাকে গুম করতে হবে। দেশের প্রতিটি ‘আয়নাঘর’ উš§ুক্ত করে দেয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, তার ভাইসহ গুম হওয়া ব্যক্তিরা জীবিত আছেন কি না, তা তারা জনতে চান। এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, গুম প্রকল্পের মূল হোতা শেখ হাসিনা। তার সঙ্গে যারা এই প্রকল্পে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সহযোগিতা ও সহায়তা করেছেন, তাদের জনগণের সামনে আনতে হবে। বিচার নিশ্চিত করতে হবে। বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আয়নাঘরের’ মূল ‘খলনায়ক’ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ এবং সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসান। গুমের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যক্তিকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয়েছে। তারা এখন ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তাদেরও আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
‘সরষের মধ্যে ভূত’ রেখে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু অর্জন করতে পারবে না বলে মন্তব্য করেন সালাহউদ্দিন আহমেদ।