মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: হঠাৎ করেই বদলে গেছে পুঁজিবাজার চিত্র। কারোনাকালে যেখানে লেনদেন ১০০ কোটি টাকা অতিক্রম করাই মুশকিল ছিল সম্প্রতি সেই লেনদেন ৩০০ কোটি টাকা পেরিয়েছে। সবচেয়ে সন্তোষজনক বিষয় হচ্ছে এই লেনদেনের সিংহভাগ আসছে মূল মার্কেট থেকে। মূলত বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ার কারণেই বাজারে এই পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সম্প্রতি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়ছে, যার প্রতিফলন পড়ছে সূচক ও লেনদেন বৃদ্ধিতে।
গতকালের বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৪৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৩৮ কোটি টাকা ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। গতকাল এই মার্কেটে মোট ৪০টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট কেনাবেচা হয়।
এদিকে মূল মার্কেটের লেনদেন হিসাব করলে গতকালই সবচেয়ে বেশি লেদদেন হয়েছে। এর আগে দুই দিন যথাক্রমে দুই হাজার ৫৪৩ কোটি টাকা এবং ৫৫৫ কোটি টাকা লেনদেন হলেও তার প্রায় পুরোটাই ছিল ব্লক মার্কেটের লেনদেন। কিন্তু সম্প্রতি এই মার্কেটে লেনদেনের দাপট কমেছে, যা সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য স্বস্তির খবর।
এদিকে লেনদেনের পাশাপাশি করোনাকালে গতকালই সূচকের সবচেয়ে বেশি উত্থান দেখা গেছে। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক বেড়েছে ৩৭ পয়েন্টে। লেনদেন শেষে সূচক স্থির হয়েছে চার হাজার ৯৯ পয়েন্টে। অন্যদিকে লেনদেন বৃদ্ধি পেতে দেখে বিনিয়োগকারীরাও হাউসে আসা শুরু করেছেন। পাশাপাশি লেনদেনের সময়সূচি পরিবর্তন করায় পুঁজিবাজার স্বাভাবিক গতিতে চলবে, এমন ধারণা করছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। কারণ করেনাভাইরাসের জন্য দীর্ঘদিন থেকে তারা পুঁজিবাজার নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
এদিকে বিনিয়োগকারীরা সরব হওয়ার কারণে কমে এসেছে একক খাতের আধিপত্য। সার্বিক বিবেচনায় ব্যাংক এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত এগিয়ে থাকলেও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটসহ সব খাতের শেয়ারে চোখ দিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। ভালো ভালো কোম্পানি দেখেই বিনিয়োগ করছেন তারা। তবে এরই মধ্যে আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেখা গেছে ‘জেড’ ক্যাটেগরির কোম্পানির শেয়ার। বাজার স্বরূপে না ফিরতেই গতকাল এই খাতের কিছু কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে। যদিও এসব কোম্পানির শেয়ার বেচাকেনা হয়েছে কম। তাই এসব শেয়ার নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সতর্ক থাকার বিকল্প নেই।
গতকাল মোট লেনদেনে ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোম্পানির অবদান ছিল ৩৩ শতাংশের বেশি। পরের অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের অবদান ছিল ২২ শতাংশ। এছাড়া অন্যান্য খাতের কোম্পানিতেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ লক্ষ করা যায়।