মো. আসাদুজ্জামান নূর: সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস গতকালেও ইতিবাচক ছিল দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। প্রথম কার্যদিবস ছাড়া সব দিনই সূচকের উত্থান দেখা গেছে। আগের কার্যদিবসের চেয়ে গতকাল বাজার মূলধন বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ৩৫ শতাংশ। সপ্তাহজুড়ে লেনদেনে নেতৃত্ব দিয়েছে ব্যাংক খাত।
পুঁজিবাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গতকাল ১৯টির মধ্যে ১৪টি খাতের শেয়ারদর বেড়েছে। এর বিপরীতে কমেছে মাত্র পাঁচটি খাতের শেয়ারের দাম। লেনদেনের শুরুতে বাজারে ক্রেতা ও বিক্রেতা একই রকম সক্রিয় ছিলেন। কিন্তু দিনশেষে ক্রেতারা আধিপত্য বিস্তার করেন। বেশিরভাগ খাতের ক্রয় প্রবণতা বাজার ঊর্ধ্বমুখী রাখে।
খাতভিত্তিক বিশ্লেষণে আরও দেখা যায়, গতকাল প্রকৌশল, বস্ত্র, টেলিযোগাযোগ, পাট ও সিমেন্ট খাতে লেনদেন নি¤œমুখী ছিল। বাকি খাতের লেনদেন ইতিবাচক ছিল।
গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৪১টি কোম্পানির ৪০ কোটি ৩৪ লাখ তিন হাজার ৮২৯টি শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। মোট লেনদেনের পরিমাণ এক হাজার ৪৬১ কোটি তিন লাখ ৬২ হাজার ৩৯১ টাকা। এতে চতুর্থ দিনের মতো শীর্ষে ছিল ব্যাংক খাত। গতকাল এ খাতে ৪৪৪ কোটি ৫০ লাখ টাকার লেনদেনে অবদান দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ০৭ শতাংশ। ৩১টি কোম্পানির শেয়ারের দর বাড়ার বিপরীতে মাত্র একটি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩৫৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বিবিধ খাত। এ খাতের অবদান ছিল ১১ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ১৬৫ কোটি ৪৯ লাখ টাকার লেনদেনের দিনে এ খাতের ৯টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি এবং মাত্র একটির হ্রাস পায়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৩০ কোটি এক লাখ টাকা।
১২২ কোটি ৩০ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে ওষুধ ও রসায়ন খাত তৃতীয় অবস্থানে ছিল। গতকাল আট দশমিক ৫৫ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৬৩ কোটি ১০ লাখ টাকা। গতকাল এ খাতের ১৪টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, কমে ৯টির ও অপরিবর্তিত ছিল দুটির।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা বস্ত্র খাতে লেনদেন হয় ১০৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১২৪ কোটি টাকা। সাত দশমিক ৬০ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের ২৯টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। এর বিপরীতে দর বাড়ে ১৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ছয়টি কোম্পানির শেয়ারের।
৯৮ কোটি ৪৯ লাখ টাকা লেনদেনের মাধ্যমে ছয় দশমিক ৮৮ শতাংশ অবদান রাখা জীবন বিমা গতকালের লেনদেনে পঞ্চম অবস্থানে ছিল। আগের দিনে এ খাতের লেনদেন হয়েছিল ৭৮ কোটি ৮০ লাখ টাকা। গতকাল এ খাতের ৯টি কোম্পানির শেয়ারদর হ্রাস পায়। অন্যদিকে দাম বাড়ে চারটি কোম্পানির শেয়ারের।
এছাড়া গতকাল লেনদেনে ট্যানারি খাত ছয় দশমিক ৬২ শতাংশ, খাদ্য চার দশমিক ১৩ শতাংশ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান চার দশমিক ১১ এবং প্রকৌশল খাত তিন দশমিক ৮৯ শতাংশ অবদান রাখে।
গতকাল ডিএসই ব্রড ইনডেক্স ডিএসইএক্স আগের কার্যদিবসের চেয়ে ৩১ দশমিক ০৪ পয়েন্ট বেড়ে সাত হাজার ৯১ দশমিক ৮২ পয়েন্টে, ডিএস-৩০ মূল্য সূচক ১১ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৯৪ দশমিক ৯৫ পয়েন্টে এবং শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস তিন দশমিক ৮২ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৪৮০ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।
লেনদেনকৃত কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে ১৫২টির, কমেছে ১৫৯টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩০টি কোম্পানির শেয়ার।