সপ্তাহজুড়ে কেনার প্রবণতা লেনদেন বেড়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে চলতি সপ্তাহে বিক্রির সঙ্গে কেনার প্রবণতাও ছিল। ফলে সপ্তাহটিতে সূচক ও লেনদেন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। এতে প্রধান প্রধান সূচক বেড়েছে, সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১০ শতাংশ। আলোচ্য সপ্তাহে ঈদের ছুটি থাকায় তিন কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছে। এতে সাপ্তাহিকভাবে লেনদেন কম হলেও গড়ে লেনদেন বেড়েছে। সপ্তাহ শেষে যা আগের সপ্তাহের তুলনায় বৃদ্ধি পেত বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। সপ্তাহটিতে আশাবাদী বিনিয়োগকারীদের ক্রয়চাপ থাকায় এ ঊর্ধ্বম–খী ধারা দেখা গেছে বলে জানিয়েছেন তারা। এ সপ্তাহে লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল।

বাজার পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। আগের সপ্তাহে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২ হাজার ২৩৬ কোটি ৬ লাখ ৭৭ হাজার টাকার। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইতে ৭৬১ কোটি ৩ লাখ ৯ হাজার ৬৪৬ টাকার বা ৩৪ দশমিক ৩ শতাংশ লেনদেন কমেছে।

ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স সপ্তাহের ব্যবধানে দশমিক ২২ শতাংশ বা ১৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২২৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আলোচ্য সপ্তাহে বাজার মূলধনের শীর্ষ ৩০ কোম্পানির মূল্যসূচক ডিএস৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে দশমিক ৯২ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ২০২ পয়েন্টে অবস্থান করছে। অপরদিকে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ কমেছে।

বাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিনিয়োগকারীদের ঈদুল ফিতর উৎসবের ছুটির আগে কেনার প্রবণতা থাকায় এ সপ্তাহে পুঁজিবাজার ঊর্ধ্বমুখী দেখা গেছে। কারণ তারা কিছু নির্দিষ্ট খাতে বিনিয়োগ করেছেন। সপ্তাহজুড়ে বিনিয়োগকারীরা ভ্রমণ, কাগজ, জীবন বিমা এবং আইটি খাতে লেনদেন বেশি করেছেন। বাজারে বিনিয়োগকারীরা অংশ নেয়া বাড়িয়েছেন এবং ডিসেম্বর-শেষের প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন ঘোষণা বিবেচনা করে শেয়ারগুলোয় নতুন বিনিয়োগ করছেন। সেক্ষেত্রে মাঝারি মূলধনের কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি দেখা গেছে বলে জানান তারা।

এ সপ্তাহে আগ্রহ বেশি থাকা ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা কাগজ ও মুদ্রণ খাতে দর বেড়েছে ১ দশমিক ৮০ শতাংশ। ১ দশমিক ৪০ শতাংশ দর বৃদ্ধি পেয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল জীবন বিমা খাতের শেয়ার। এ সময়ে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে সেবা ও আবাসন খাতে। এ খাতে ২ দশমিক ৩০ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ারদর কমে পাট খাত দ্বিতীয় স্থানে ছিল। শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ শেয়ারদর কমে তৃতীয় স্থানে ছিল ব্যাংক খাত।

অপরদিকে এ সপ্তাহে লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৮ দশমিক ৩০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ দশমিক ২০ শতাংশ হয়েছে। ১০ শতাংশ লেনদেন হয়ে তৃতীয় স্থানে ছিল ভ্রমণ খাত।

অপরদিকে সপ্তাহ শেষে ডিএসইর পিই রেশিও অবস্থান করে ১৪ দশমিক ২৮ পয়েন্টে, যা আগের সপ্তাহের শেষে ছিল ১৪ দশমিক ২১ পয়েন্ট।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) চলতি সপ্তাহে লেনদেনের পরিমাণ আগের সপ্তাহের তুলনায় কমেছে ৯ দশমিক ১৬ শতাংশ। তবে একটি বাদে বাকি পাঁচটি সূচক বেড়েছে।

সিএসইর সূত্র মতে, গত সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৪৬ লাখ টাকার। আগের সপ্তাহে লেনদেন হয়েছিল ৩৬ কোটি ২ লাখ টাকার। এক সপ্তাহের ব্যবধানে লেনদেন কমেছে ১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ। তালিকাভুক্ত ১৮২টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ারদর বেড়েছে ৪৪টির, দর কমেছে ৩০টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ১০৮টি কোম্পানির।

সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান সূচক সিএএসপিআই শূন্য দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ১৮ হাজার ৩৫৩ দশমিক ৭০ পয়েন্টে। সিএসই৩০ সূচক দশমিক শূন্য ১৮ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১৩ হাজার ৪০২ দশমিক ৮৬ পয়েন্টে। সিএসই৫০ সূচক শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ, সিএসইসিএক্স সূচক শূন্য দশমিক ১০ শতাংশ এবং সিএসআই সূচক শূন্য দশমিক শূন্য ২ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় যথাক্রমে ১ হাজার ৩১৪ দশমিক ০৯ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৯৯৯ দশমিক ৮৯ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৫১ পয়েন্টে। সিএসই এসএমইএক্স সূচক শূন্য দশমিক ৩৪ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১ হাজার ৭১৮ দশমিক ৭৩ পয়েন্টে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০