হাসানুজ্জামান পিয়াস: পুঁজিবাজারে গত সপ্তাহজুড়ে সূচকের পতন হয়েছে। গত সপ্তাহে চার কার্যদিবস লেনদেন হয়েছে। চার দিনই সূচকের পতন হয়। প্রতিদিনই পতনের হার ক্রমাগত বেড়েছে। আর সে সঙ্গে বেড়েছে শেয়ারের দরপতন। গতকাল প্রায় ৪৪ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। দর বেড়েছে মাত্র ২৫ শতাংশ বা ৯৬টি কোম্পানির। মিউচুয়াল ফান্ড, ট্যানারি ও কাগজ ছাড়া সব খাতেই বড় পতন হয়েছে। লেনদেন কমে ৫০০ কোটির ঘরে এসে থেমেছে।
ডলারের বিপরীতে টাকার অব্যাহত দরপতনের পাশাপাশি সম্প্রতি দেশে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধিতে পুঁজিবাজারে নতুন করে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। আর এই ইস্যুকে কেন্দ্র করে পুঁজিবাজারে টানা দরপতন হচ্ছে বলে মনে করছেন বাজার-সংশ্লিষ্ট অনেকেই। এদিকে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের এক্সপোজার লিমিট ক্রয়মূল্যে করার পাশাপাশি সম্প্রতি বাজারে প্রতিটি শেয়ারের সর্বনিন্ম মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা সত্ত্বেও সপ্তাহজুড়ে টানা দরপতন অব্যাহত রয়েছে। এখন সূচকের পতন কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে শঙ্কিত বাজার-সংশ্লিষ্টরা।
গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ দেখা যায়। বিনিয়োগকারীদের আগ্রহের জেরে মিউচুয়াল ফান্ড খাতের ৩৫টি ফান্ডের মধ্যে ২১টির দর বেড়েছে, মাত্র দুটির দর হ্রাস পেয়েছে আর বাকি ১২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। মূলত এখন অধিকাংশ মিউচুয়াল ফান্ড তাদের ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দেয়ার ঘোষণা দিচ্ছে। আর এ জন্য এ খাতে আগ্রহী হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। গতকাল দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ দর বেড়ে দর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষে উঠে আসে এসইএমএল এফবিএসএল গ্রোথ ফান্ড। এছাড়া রিলায়েন্স ওয়ান অব দি ফার্স্ট স্কিম অব রিলায়েন্স ইন্স্যুরেন্স মিউচুয়াল ফান্ডের ৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ দর বেড়ে দর বৃদ্ধির তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে উঠে আসে, আর ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের ৪ দশমিক ২৮ শতাংশ, আইএফআইসি ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৩ দশমিক ৮৪ শতাংশ ইউনিটদর বেড়ে দরবৃদ্ধির তালিকায় সপ্তম ও নবম অবস্থানে উঠে আসে।
গতকাল সব খাতেই ছিল দরপতনের আধিক্য। মূল লেনদেন বস্ত্র, বিবিধ, প্রকৌশল এবং ওষুধ ও রসায়ন খাতে সীমাবদ্ধ ছিল। তবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতে লেনদেন বেড়েছে সামান্য। বিবিধ খাতে লেনদেন হয় ১৯ শতাংশ। এ খাতে সিংহভাগ কোম্পানির দরপতন হয়। আগের দিনের তুলনায় ১০ শতাংশ কমে মোট লেনদেনে ১৮ শতাংশ দখলে ছিল বস্ত্র খাতের। এরপরে ওষুধ ও রসায়ন খাতের দখলে ছিল ১১ শতাংশ লেনদেন এবং প্রকৌশল খাতের ছিল ৯ শতাংশ লেনদেন।