সপ্তাহের শেষ দিনে উভয় বাজারে ইতিবাচক গতিতে লেনদেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সপ্তাহের শেষ দিনে গতকাল উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে ইতিবাচক গতিতে লেনদেন হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বেশিরভাগ শেয়ারের দর কমলেও সবকটি সূচক ইতিবাচক ছিল। সেইসঙ্গে বেড়েছে লেনদেন। তবে দরবৃদ্ধি ও হ্রাসের হারের ব্যবধান খুব কম ছিল। লেনদেনের শুরুতে প্রধান সূচক ডিএসইএক্সের উত্থান হয় প্রায় ৩৩ পয়েন্ট। তবে বারবার ওঠানামা করতে করতে শেষ পর্যন্ত ১৬ পয়েন্ট ইতিবাচক ছিল। বাকি দুই সূচকও ইতিবাচক ছিল। ডিএসইতে প্রায় ৪৩ শতাংশ কোম্পানির দর বেড়েছে, কমেছে ৪৮ শতাংশের দর। অন্যদিকে চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচক ও শেয়ারদর ইতিবাচক হলেও লেনদেন কমেছে।
বাজার পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৬ দশমিক ৭৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৩ শতাংশ বেড়ে চার হাজার ৯৬৮ দশমিক ৪৬ পয়েন্টে অবস্থান করে।
ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক দুই দশমিক ৮২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৪ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ১৪৮ দশমিক ৫২ পয়েন্টে অবস্থান করে। আর ডিএস৩০ সূচক দুই দশমিক ২৩ পয়েন্ট বা দশমিক ১২ শতাংশ বেড়ে এক হাজার ৭৬৮ দশমিক ৯৪ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল ডিএসইর বাজার মূলধন এক হাজার ৪৫৪ কোটি ১৯ লাখ টাকা বেড়ে তিন লাখ ৭৬ হাজার ৫৩২ কোটি ১৮ লাখ ২০ হাজার ৩০৪ টাকা হয়। ডিএসইতে লেনদেন হয় ৪১১ কোটি ৭৩ লাখ ৯৫ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৩১৮ কোটি ৪৪ লাখ ৫১ হাজার টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ৯৩ কোটি ২৯ লাখ টাকা। এদিন ১১ কোটি ৮৪ লাখ ৮৩ হাজার ৫৬৪টি শেয়ার এক লাখ ১৫ হাজার ৮৪৭ বার হাতবদল হয়। লেনদেন হওয়া ৩৫৪ কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ১৫২টির, কমেছে ১৫৫টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪৭টির দর।
গতকাল টাকার অঙ্কে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে ন্যাশনাল টিউবস। কোম্পানিটির ১৫ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। দর কমেছে তিন টাকা ২০ পয়সা। এরপর গ্রামীণফোনের ১৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে চার টাকা ৯০ পয়সা। ন্যাশনাল পলিমারের ১১ কোটি ৯০ লাখ টাকা লেনদেন হয়। দর বেড়েছে পাঁচ টাকা। সিঙ্গার বিডির সাড়ে ১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দর বেড়েছে ৮০ পয়সা। ফরচুন শুজের সোয়া ১১ কোটি টাকা লেনদেন হয়, দরপতন হয় দুই টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের ১০ কোটি ৬০ লাখ টাকা ও বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্লসের ১০ কোটি টাকা লেনদেন হয়। মুন্নু সিরামিকের ৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকার, ব্যাংক এশিয়ার আট কোটি ২৬ লাখ টাকার ও ভিএফএস থ্রেডের সাত কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।
৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বেড়ে দরবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো। মুন্নু সিরামিকের দর ৯ দশমিক ৪৭ শতাংশ, সোনারবাংলা ইন্স্যুরেন্সের দর ৯ দশমিক ৪২ শতাংশ, ব্যাংক এশিয়ার দর ৯ দশমিক ৩৯ শতাংশ, ইস্টার্ন কেব্লসের দর আট দশমিক ৭৩ শতাংশ, ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের দর আট দশমিক ২১ শতাংশ, স্টাইল ক্রাফটের দর ছয় দশমিক ৬০ শতাংশ, মুন্নু জুট স্টাফলার্সের দর ছয় দশমিক ২৪ শতাংশ, ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টসের দর ছয় দশমিক ২৪ শতাংশ ও সিলকো ফার্মার দর ছয় দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়েছে।
সাত দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে দরপতনের শীর্ষে উঠে আসে ফরচুন শুজ। জিলবাংলা সুগার মিলের দর সাত দশমিক ৬৬ শতাংশ, বিআইএফসি’র দর ছয় দশমিক ৬৬ শতাংশ, ইউনাইটেড এয়ারের দর সাড়ে পাঁচ শতাংশ, ভ্যানগার্ড এএমএল রূপালী ব্যাংক ব্যালেন্সড ফান্ডের দর সোয়া পাঁচ শতাংশ, আইসিবি এএমসিএল সোনালী ব্যাংক ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের দর চার দশমিক ৯১ শতাংশ, শ্যামপুর সুগারমিলের দর চার দশমিক ৮৯ শতাংশ, ইবিএল এনআরবি মিউচুয়াল ফান্ডের দর চার দশমিক ২৫ শতাংশ, মতিন স্পিনিংয়ের দর সোয়া চার শতাংশ ও অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের দর চার দশমিক ১২ শতাংশ কমেছে।
সিএসইতে গতকাল সিএসসিএক্স মূল্যসূচক ৩৯ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে ৯ হাজার ১৬১ দশমিক ৮৩ পয়েন্টে এবং সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৬৫ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৩ শতাংশ বেড়ে ১৫ হাজার ৮৩ পয়েন্টে অবস্থান করে। গতকাল সর্বমোট ২৫২টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১০টির, কমেছে ১০৪টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩৮টির দর।
সিএসইতে এদিন ১৫ কোটি ৮৩ লাখ ২৪ হাজার ৪৯৫ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৭ কোটি ৬৪ লাখ ৫২ হাজার ৭৭৪ টাকার শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এ হিসাবে লেনদেন কমেছে এক কোটি ৮১ লাখ টাকা। সিএসইতে লেনদেনের শীর্ষে অবস্থান করে ডরিন পাওয়ার। লেনদেন হয় দুই কোটি ১০ লাখ টাকার, সিঙ্গার বিডির এক কোটি ০৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ইস্টল্যান্ড ইন্স্যুরেন্সের ৬৪ লাখ টাকার, সিটি জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের ৫৫ লাখ টাকার, গ্রামীণফোনের ৪৯ লাখ টাকার, মুন্নু সিরামিকের ৪৫ লাখ টাকার, ব্যাংক এশিয়ার ৪৩ লাখ টাকার, বেক্সিমকো ফার্মার ৪২ লাখ টাকার, সিলকো ফার্মার ৩৭ লাখ টাকার ও বেক্সিমকোর ৩৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়।