Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 3:07 pm

সফল হতে হলে অলসতা ঝেড়ে ফেলতে হবে

অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই একটি সাধারণ ও অবিরাম লড়াই। অলসতা অনেক ব্যক্তিকে জর্জরিত করে। এটি ব্যক্তিগত বৃদ্ধি ও কার্যক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে, এমনকি জীবনের সুন্দর সুযোগগুলো হাতছাড়া করার দিকে ধাবিত করতে পারে। অলসতা কাটিয়ে উঠতে আত্মসচেতনতা, অনুপ্রেরণা এবং কার্যকর কৌশলগুলোর সমন্বয় প্রয়োজন।

সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ: অলসতা কাটিয়ে ওঠার সর্বপ্রথম ধাপ হলো সুনির্দিষ্ট ও অর্জনযোগ্য লক্ষ্য নির্ধারণ করা। উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকলে তা লক্ষ্য পূরণে অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা প্রদান করে। লক্ষ্যগুলোকে ছোট ও পরিচালনাযোগ্য কাজে ভাগ করতে হবে এবং করণীয় তালিকা তৈরি করলে তা সঠিক পথ অনুসরণ করতে সাহায্য করবে; রুটিন তৈরি: একটি দৈনন্দিন রুটিন জীবনে সুশৃঙ্খলা এবং সুন্দর কাঠামো স্থাপন করে অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করতে পারে। একটি সুসংজ্ঞায়িত সময়সূচক সকল কাজ, চিত্তবিনোদন ও ব্যক্তিগত সাধনার জন্য সুনির্দিষ্ট সময় বরাদ্দ করে। ভালো অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য যতটা সম্ভব রুটিন অনুযায়ী কাজগুলো সম্পন্ন করতে হবে; অনুপ্রেরণা বেছে নিতে হবে: কোন বিষয় অনুপ্রাণিত করে, তা চিহ্নিত করতে হবে। ব্যক্তিগত পছন্দনীয় কাজ বা দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য অথবা আত্ম-উন্নতির আকাক্সক্ষা, যা-ই হোক না কেন, একটি শক্তিশালী অনুপ্রেরণা ব্যক্তি অলসতা কাটিয়ে কাজে মনোনিবেশ করতে সহায়তা করতে পারে; কাজগুলোকে ছোট ধাপে ভাগ করা: বড় ও দুরূহ কাজগুলো অলসতার একটি প্রধান কারণ হতে পারে। এগুলোকে আরও ছোট ও সহজে পরিচালনাযোগ্য ধাপে করতে হবে। এর দ্বারা কাজগুলো শুধু সহজভাবে সম্পন্ন নয় বরং প্রতিটি ধাপ সম্পূর্ণভাবে সমাপ্ত করার সঙ্গে সঙ্গে কৃতিত্বের অনুভূতিও অনুভব হবে; মনোযোগ বিঘ্নকারী বিষয় এড়িয়ে চলা: মনোযোগ বিঘ্নকারী বিষয়বস্তু অলসতার একটি সাধারণ উৎস। চারপাশের পরিবেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য মনোযোগ বিঘ্নকারী বিষয়বস্তুগুলো শনাক্ত করা গেলে তা এড়িয়ে চলা সহজ হবে। উদাহরণস্বরূপ, ফোনের বিজ্ঞপ্তিগুলো বন্ধ করলে সময় বিনষ্টকারী ওয়েবসাইট বন্ধ করা যেতে পারে; দুই মিনিট নিয়ম অনুসরণ: কোনো কাজ সম্পন্ন করতে দুই মিনিট বা তার কম সময় লাগলে তা দ্রুত শেষ করতে হবে। এ সাধারণ নিয়মটি কোনো কাজ বিলম্ব হওয়া প্রতিরোধ করে এবং সারাদিন কাজের গতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়তা করবে; নিজেকে পুরস্কৃত করা: কাজ যথাযথভাবে সম্পন্ন করার জন্য নিজেকে পুরস্কৃত করা একটি শক্তিশালী প্রেরণা। লক্ষ্যসমূহ অর্জনের জন্য নিজেকে ছোট কিছু পুরস্কার অফার করা। যেমন একটি ট্রিট, একটি বিরতি বা কিছু অবসর সময়। এই ইতিবাচক পদক্ষেপ মনোবল বৃদ্ধির মাধ্যমে অলসতার বিরুদ্ধে অত্যন্ত কার্যকরভাবে লড়াই করতে পারে; দায়বদ্ধ থাকা: লক্ষ্য ও অগ্রগতি বন্ধু, পরিবারের সদস্য বা সহকর্মীদের সঙ্গে ভাগাভাগি করা। দায়বদ্ধ রাখতে পারে। কেউ ব্যক্তির উদ্দেশ্য সম্পর্কে সচেতনÑএটা জানা থাকা, এটি অলসতা কাটিয়ে ওঠা এবং প্রতিশ্রুতি পূরণ করার ক্ষেত্রে ইতিবাচক উদ্দীপনাদায়ক; মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা: মানসিক চাপে নিমজ্জিত হওয়ার অনুভূতি, অলসতার দিকে ধাবিত করতে পারে। মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণের কৌশলগুলি, যেমনÑধ্যান, যোগব্যায়াম অথবা শারীরিক ব্যায়াম রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করলে মানসিক চাপ এড়ানো যায় এবং মানসিক শক্তি ও শারীরিক সুস্থতার মাত্রা বজায় রাখা যায়; ব্যর্থতাকে মেনে নেয়া: সবশেষে, বোঝার চেষ্টা করা যে বিপত্তি এবং ব্যর্থতা যেকোনো যাত্রার একটি স্বাভাবিক অংশ। পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ না হলে অলসতার কাছে নতি স্বীকার না করে, ব্যর্থতা থেকে নতুন কিছু শেখার এবং ব্যর্থতাকে নতুন করে বেড়ে ওঠার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। প্রতিকূলতা কাটিয়ে উঠে আরও প্রাণবন্ত ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হওয়া যায়।

অলসতা কাটিয়ে ওঠা এমন একটি যাত্রা, যার জন্য প্রয়োজন আত্মসচেতনতা, প্রেরণা ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টা। সুস্পষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণ, রুটিন প্রণয়ন এবং ব্যবহারিক কৌশল প্রয়োগ করে সফলভাবে অলসতার বিরুদ্ধে লড়াই করা যায় এবং আরও ফলপ্রসূ জীবনযাপন করা যায়। এটি একটি প্রক্রিয়া, অতএব বিপত্তি স্বাভাবিক। ব্যক্তির লক্ষ্য পূরণে মনোযোগী থাকুন এবং ধীরে ধীরে অলসতা কাটিয়ে উঠতে ও পছন্দসই ফলাফল অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় অভ্যাস গড়ে তোলা আবশ্যক।

এটিএম মোসলেহ উদ্দিন জাবেদ

মানবসম্পদ বিভাগের প্রধান

স্টার সিরামিকস লিমিটেড