সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট গড়ার ঘোষণা এরশাদের

নিজস্ব প্রতিবেদক: স্বাধীনতার চেতনা এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলোকে একত্রে করার নিমিত্তে এক সময় আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোটে থাকা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদ নতুন জোট গঠন করার ঘোষণা দিয়েছেন। রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে নতুন এ জোটের ঘোষণা দিয়ে এরশাদ বলেনÑ নতুন এ জোটে স্বাধীনতার চেতনা এবং ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। কোনোভাবেই স্বাধীনতাবিরোধী রাজনৈতিক দলের স্থান এ জোটে হবে না।
তিনি আরও বলেন, ‘সম্মিলিত জাতীয় জোটের সব দল ও শরিক জোট সমান মর্যাদা নিয়ে অবস্থান করবে। শরিকদল বা শরিক জোটের চেয়ারম্যানরা নতুন এ জোটের শীর্ষ নেতা হিসেবে সম্মানিত হবেন। জোটের চেয়ারম্যান শরিকদল ও শরিক জোটের শীর্ষ নেতাদের পরামর্শে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এছাড়া জাতীয় পার্টির পক্ষে তিনি নিজে, ইসলামিক ফ্রন্টের পক্ষে দলের চেয়ারম্যান এমএ মান্নান, জাতীয় ইসলামী মহাজোটের পক্ষে চেয়ারম্যান আবু নাসের ওয়াহেদ ফারুক এবং বাংলাদেশ জাতীয় জোটের (বিএনএ) পক্ষে চেয়ারম্যান সেকান্দার আলী মনি নতুন জোটের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন বলে এরশাদ জানান। জোটে আরও দুটি নিবন্ধিত দলের যুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও সম্মেলন থেকে জানানো হয়।
নতুন এ জোটের নাম দেওয়া হয়েছে ইউনাইটেড ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স সংক্ষেপে ইউএনএ। ইসলামী মূল্যবোধ তথা সব ধর্মীয় মূল্যবোধের প্রতি সমান মর্যাদা প্রদর্শন, স্বাধীনতার চেতনা, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক জীবনবোধ নিশ্চিত করা এ তিন মৌলিক আদর্শের ওপর ভিত্তি করে এ দল পরিচালিত হবে বলে জোটের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
প্রাথমিকভাবে জাতীয় পার্টি ছাড়াও নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল ইসলামিক ফ্রন্ট, ৩৪টি ইসলামপন্থি সংগঠনকে নিয়ে আত্মপ্রকাশ করা ‘জাতীয় ইসলামী মহাজোট’ এবং ২০১৫ সালে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদার নেতৃত্বে যাত্রা শুরু করে পরে তাকেই অব্যাহতি দেওয়া ৩১ সংগঠনের ‘বাংলাদেশ জাতীয় জোট’ রয়েছে এরশাদের এ নতুন জোটে।
জোটের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, জোটগতভাবে জাতীয় নির্বাচনসহ সব পর্যায়ের নির্বাচনে অংশগ্রহণ এবং জোটগতভাবে সরকার গঠন করে দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা, সমাজে ন্যায়বিচার ও সুশাসন নিশ্চিত করা এবং উন্নয়নের ধারা প্রবর্তন করে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রথম পর্যায়ে জোট গঠনের পর অন্য কোনো দল এ জোটে অন্তর্ভুক্ত হতে আগ্রহ প্রকাশ করলে, সেক্ষেত্রে জোটের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। দল ও জোটের প্রধানরা সম্মিলিত জাতীয় জোটের স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য থাকবেন। জোটের চেয়ারম্যান সভা আহ্বান করে জোটের সিদ্ধান্তগুলো স্টিয়ারিং কমিটিকে অবহিত করবেন। এছাড়া জোটের একটি লিয়াজোঁ কমিটি থাকবে। নতুন এ জোটের চেয়ারম্যান করা হয়েছে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদকে। এছাড়া জাপার মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে জোটের মুখপাত্র করা হয়েছে। মোট ৫৮টি দল দিয়ে গঠিত এ জোটে জাতীয় পার্টি ছাড়াও দুটি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে।
সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে জাতীয় পার্টির মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার এবং প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের নির্বাচনে ইসলামী ঐক্য ফ্রন্ট গড়ে ভোটে অংশ নিয়েছিলো এরশাদের জাতীয় পার্টি।

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০