শেয়ার বিজ ডেস্ক : আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পাওয়ার পর যখন মানুষের মুখে হাসি ফোটে, তখন ‘সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। গতকাল ‘ঈদ উপহার’ হিসেবে প্রায় ৩৩ হাজার পরিবারকে নতুন ঘর দেয়ার অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার সব থেকে ভালো লাগে যখন দেখি ঘর পাওয়ার পর একটি মানুষের মুখের হাসি। জাতির পিতা তো দুঃখী মানুষের মুখেই হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন। সব মানুষ যেন মানুষের মতো বাঁচতে পারে, সুন্দর জীবন পেতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেজন্য এ কাজটি আমরা করব, যাতে এ বাংলাদেশ ক্ষুধা, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ হিসেবে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে চলতে পারে।’ সূত্র: বিডিনিউজ।
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের তৃতীয় ধাপে দেশের ৪৯২টি উপজেলার এসব অসহায় পরিবারকে প্রধানমন্ত্রীর ‘ঈদ উপহার’ হিসেবে গতকাল বিনা মূল্যে দুই শতক জমিসহ সেমি পাকা ঘর দেয়া হলো। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ঘর হস্তান্তরের অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যখন আমরা জাতির পিতার জš§শতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন করছি, ঠিক সেই সময়ে আমরা পেয়েছি উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা। কাজেই এটাকেই ধরে রেখে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে। আর সেটাই আমাদের লক্ষ্য।’
সরকারপ্রধান বলেন, ‘যে জাতি বুকের রক্ত দিয়ে স্বাধীনতা অর্জন করে, সেই জাতি কখনও পিছিয়ে থাকতে পারে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে যারা অস্ত্র তুলে নিয়ে নিজের রক্ত দিয়ে এদেশ স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন, সেই শহিদের রক্ত বৃথা যেতে পারে না।’ সে কারণে সম্পদের পেছনে না ছুটে দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে দলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা শেষ পর্যন্ত ‘কাজে লাগে না’ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী মহামারির সময়ের বাস্তবতা তুলে ধরে বলেন, ‘অনেকের বহু অর্থ-সম্পদ থাকলেও সেগুলো কোনো কাজে আসেনি। যারা বাংলাদেশে কোনোদিন চিকিৎসাই নেননি, তাদের এদেশেই ভ্যাকসিন নিতে হয়েছে। কারণ টাকা থাকলেও কোথাও যেতে পারেননি তারা। এর আগে তো একটু সর্দি-কাশি হলেও তারা উড়ে চলে যেতেন বিদেশে চিকিৎসার জন্য। কিন্তু করোনাভাইরাস মানুষকে একটা শিক্ষা দিয়ে গেছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই সম্পদের পেছনে ছুটে নিজেকে মানুষের কাছে অসম্মানিত করার কোনো অর্থই হয় না; বরং দুঃখী মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারলে, একটা মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারলে, সেটাই হচ্ছে সব থেকে বড় পাওয়া। এর থেকে বড় পাওয়া আর কিছুই হতে পারে না।’
প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া জানিয়েছিলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে দুই শতক জমির সঙ্গে ঘর পেয়েছে দেশের ভূমি ও গৃহহীন প্রায় এক লাখ ১৭ হাজার ৩২৯ পরিবার। দেশে ভূমি ও গৃহহীন পরিবারগুলোর পুনর্বাসনের লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ‘আশ্রয়ণ’ নামে প্রকল্প নেয়া হয়। এর আওতায় ১৯৯৭ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত পাঁচ লাখ সাত হাজার ২৪৪টি পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে বলে জানান সচিব।
দেশের উন্নয়নে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক বাধা আসবে, বাংলাদেশ এভাবে এগিয়ে যাক, বাংলাদেশ উন্নত হোক। যারা স্বাধীনতাকে ব্যর্থ করতে চেয়েছিল, সেই লোকগুলো তো আছে, তারা কখনও চাইবে না। কিন্তু সব বাধা অতিক্রম করেই আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এবং ইনশাল্লাহ আমরা এগিয়ে যাব। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা আমরা গড়ে তুলব।’
সবচেয়ে ভালো লাগে ঘর পাওয়া মানুষের হাসি: প্রধানমন্ত্রী
