নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে গেল সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে কিছু সবজির দাম। যেসব সবজির দাম কমেছে সেগুলো এখনও অবস্থান করছে উচ্চ মূল্যের তালিকায়। প্রায় সব সবজির দামই ৬০ টাকার ওপরে। বিক্রেতারা বলছেন, সবজির দাম কমার সম্ভাবনা নেই। অন্যদিকে গতকাল ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরের ওপরে। শুধু ব্রয়লার মুরগি নয়, গতকাল বাজারে সব ধরনের মুরগি বিক্রি হচ্ছে গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি দামে।
আবার সবজি ও মাংসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেঁয়াজ ও রসুনের দামও। এই পণ্য দুটি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজিতে যথাক্রমে ১০ থেকে ২০ টাকা বেশিতে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায় পণ্যমূল্যের এ অবস্থা।
গতকাল বাজারে বেশিরভাগ সবজির দামই কমেছে। তবে এখনও প্রায় সব সবজির দামই ৬০ টাকার ওপরে। গত সপ্তাহে সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত
বাজারে টমেটো ৫০ টাকা, টক টমেটো ৭০ টাকা, দেশি গাজর ৭০ টাকা, লম্বা বেগুন ১০০ টাকা, সাদা গোল বেগুন ১০০ টাকা, কালো গোল বেগুন ১০০-১২০ টাকা, শসা ৬০ টাকা, উচ্ছে ৬০-৭০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, কাঁকরোল ১০০ টাকা, পেঁপে ৮০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ টাকা, মুলা ৫০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৬০ টাকা, পটোল ৬০-১০০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কচুর লতি ৭০-৮০ টাকা, কচুরমুখি ১৪০-১৬০ টাকা, সজনে ১০০-১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মানভেদে প্রতিটি লাউ ৫০-৬০ টাকা, চাল কুমড়া ৫০-৬০ টাকা, ফুলকপি ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি হালি লেবু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা করে।
এক্ষেত্রে গত সপ্তাহের তুলনায় বেশিরভাগ সবজির দাম কমেছে ১০ টাকা থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত। আর বেড়েছে পেঁপেসহ সব ধরনের বেগুনের দাম। এসব পণ্যের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা করে।
সবজির দাম বাড়তি থাকা প্রসঙ্গে এক বিক্রেতা বলেন, পুরো রোজার মাস সবজির দাম কম ছিল। তারপর কিছুটা বেড়েছে। আজকে আবার অনেক সবজির দাম কমেছে। এর থেকে দাম আর কমবে বলে মনে হচ্ছে না।
এদিকে বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকা, লাল ও সাদা আলু ৫০ টাকা, বগুড়ার আলু ৭০ টাকা, নতুন দেশি রসুন ১৮০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেখা যায়, পেঁয়াজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা করে। আর দেশি রসুনের দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ২০ টাকা করে। বাজারে মানভেদে দেশি পেঁয়াজ ৭০-৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে ইলিশ মাছ ওজন অনুযায়ী
১৪০০-২৮০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০-৫৫০ বা ৩৬০-৫৫০ টাকা, কাতল মাছ ৪০০-৭০০ টাকা, কালিবাউশ ৪০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ১০০০-১৪০০ টাকা, কাঁচকি মাছ ৫০০ টাকা, কৈ মাছ ৩০০-৫০০ টাকা, পাবদা মাছ ৪০০-৫০০ টাকা, শিং মাছ ৪০০-৬০০ টাকা, টেংরা মাছ ৫০০-৮০০ টাকা, বেলে মাছ ৮০০-১৪০০ টাকা, বোয়াল মাছ ৬০০- ১২০০ টাকা, রূপচাঁদা মাছ ১০০০-১৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে বাজারে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকার ওপরে। গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে দামও। বেড়েছে কক মুরগি, দেশি মুরগি, লেয়ার মুরগির দামও। ওজন অনুযায়ী ব্রয়লার মুরগি ২০০-২০৫ বা ২০০-২১০ টাকা, কক মুরগি ৩৫০-৩৭০ বা ৩৬৫-৩৮০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩১৫-৩২০ বা ৩২০-৩৩০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০/৬৭০ টাকা, গরুর মাংস ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১১৫ বা ১২০ টাকা এবং সাদা ১১০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
প্রতি কেজিতে ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৫ টাকা, কক মুরগির দাম বেড়েছে ১০-১৫ টাকা, লেয়ার মুরগির দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা এবং দেশি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ২০ টাকা।
বিক্রেতারা জানান, মুরগির দাম তেমনভাবে কমার সুযোগ নেই। ব্রয়লার মুরগির দাম কেন ২০০ টাকার নিচে নামছে না বা নামবে কি না এমনটা জানতে চাইলে মায়ের দোয়া চিকেন হাউজের বিক্রেতা মো. আতিক বলেন, দাম আর কমবে না। আর ২০০ টাকা তো কম দামই। আগের দিন আর ফিরে আসবে না। ১০০-১২০ টাকা কেজিতে মুরগি আর পাওয়া যাবে না। ওই দামে পেতে হলে চায়ের দাম ৩ টাকা কাপ হতে হবে। রিকশা ভাড়া ১০ টাকা হতে হবে। সেটা যেহেতু সম্ভব না, মুরগির দামও তেমনভাবে কমার সুযোগ নেই।
এদিকে সবকিছুর দাম বাড়তে থাকলেও মুদি পণ্যের দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। গত সপ্তাহের তুলনায় সব পণ্যের দাম রয়েছে আগের মতোই। আজকে শুক্রবার প্যাকেট পোলাওর চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৯০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩৫ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।