নিজস্ব প্রতিবেদক: সবজির বাজার এখনও চড়া। তবে রমজানের নিত্যপণ্য ছোলার দর গত সপ্তাহের তুলনায় কমেছে। পেঁয়াজের দরও কিছুটা কমেছে। গরুর মাংস এখনও আগের দরেই বিক্রি হচ্ছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, গত সপ্তাহে গরুর মাংসের দাম কেজিতে বেড়েছে ৬ দশমিক ৩০ শতাংশ। এছাড়া ময়দার (প্যাকেট) দাম বেড়েছে কেজিতে এক টাকা। এছাড়া অধিকাংশ সবজির দামও চড়া। তবে সয়াবিন তেল ও পেঁয়াজের দাম সামান্য কিছু কমেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্যবসায়ীরা ব্রয়লার মুরগির কেজি বিক্রি করেছেন ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হয় ৩১০ থেকে ৩৪০ টাকা। দেশি মুরগির কেজি ৫০০ টাকা। এদিকে ফার্মের মুরগির ডিমও গত সপ্তাহের মতো ১১০ থেকে ১১৫ টাকা ডজন দরে বিক্রি হয় ।
গত সপ্তাহের তুলনায় ছোলার দাম কমেছে কেজিতে ৫ টাকা। গত সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজির ছোলা এই সপ্তাহে ৭৫ টাকা। রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজারের ব্যবসায়ীরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগে বেড়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে পণ্যটির দাম কমেছে কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা। বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি করেছেন খুচরা বিক্রেতারা। গত সপ্তাহে দাম ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা।
সয়াবিন তেলের উৎপাদন, খুচরা ও সর্বশেষ আমদানি পর্যায়ে সরকার মোট ৩০ শতাংশ কর ছাড় দিয়েছে ব্যবসায়ীদের। কিন্তু বাজারে এর তেমন প্রভাব এখনও দেখা যায়নি। তবে দাম অল্প পরিমাণ কমেছে।
চিনি আমদানিতে শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করে সরকার। কিন্তু এর প্রভাব দেখা যায়নি বাজারে। আগের মতোই ৮০ টাকায় চিনির কেজি বিক্রি হয়।
বাজারে এখন খোলা ময়দা বিক্রি হয় ৪৬ টাকা কেজি দরে, যা গত বছরের এ সময়ের তুলনায় ৩৩ শতাংশ বেশি। এদিকে গত সপ্তাহে প্যাকেটজাত ময়দা বিক্রি হয়েছে ৫৪ টাকা কেজি। এখন এই ময়দা বিক্রি হয় ৫৫ টাকা কেজি দরে।
সরকারের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরে প্যাকেটজাত ময়দার দাম ছিল ৪৫ টাকা কেজি। এখন সেই ময়দার দাম ৫৮ টাকা। অর্থাৎ গত এক বছরের ব্যবধানে এই ময়দার দাম বেড়েছে কেজিতে ১৩ টাকা। একইভাবে গত বছরের ৩৮ টাকা কেজি খোলা ময়দা এখন কিনতে হচ্ছে ৫০ টাকা দিয়ে। অর্থাৎ গত এক বছরে এই ময়দার দাম বেড়েছে প্রতি কেজিতে ১২ টাকা।
আমদানি করা বড় দানার মসুর ডালের কেজি ১১০ আর দেশি ছোট দানার ডালের কেজি বিক্রি হয় ১১৫ থেকে ১২০ টাকায়। গত দুই সপ্তাহ ধরে এই একই দামে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারগুলোতে নতুন সবজি হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে সজনে ডাঁটা। দাম বেশ চড়া। বিভিন্ন বাজারে সজনে ডাঁটার কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। অবশ্য কোথাও কোথাও ব্যবসায়ীরা সজনে ডাঁটার কেজি বিক্রি করেছেন ১০০ থেকে ১৪০ টাকা। পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢ্যাঁড়সের কেজি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা, পাকা টমেটোর কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়। এছাড়া ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, শিমের কেজি বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শালগম (ওলকপি) ৩০ থেকে ৪০ টাকা, গাজর ২০ থেকে ৩০ টাকা, মুলা ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া লাউয়ের পিস বিক্রি হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। লাল শাকের আঁটি ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালংশাকের আঁটি বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা।
মিনিকেট চালের কেজি ৬৫ থেকে ৬৮, নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, বিআর-২৮ জাতীয় চাল ৫০ থেকে ৫৫ এবং মোটা চালের কেজি ৪৮ থেকে ৫২ টাকায় বিক্রি হয়।
গতকাল বাজারে নলা মাছ বিক্রি হয় ১৭০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। চিংড়ি ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি। পাবদা ৪০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা।
রুই মাছের কেজি বিক্রি হয় ২৮০ থেকে ৪৫০ টাকা। শিং ও টাকি মাছের কেজি বিক্রি হয় ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। শোল মাছের কেজি বিক্রি হয় ৪০০ থেকে ৬৫০ টাকা। তেলাপিয়া ও পাঙাশ বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা কেজি। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয় এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। ছোট ইলিশের কেজি বিক্রি হয় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা।