ক্রীড়া প্রতিবেদক: রানের মধ্যেই ছিলেন। মাঝে অবশ্য ভাইরাস জ্বর বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে সুস্থ হয়ে তামিম ইকবাল ফিরেছেন মাঠে। ব্যাট হাতে সে আগের মতোই খেলেন গত পরশু। গতকাল অবশ্য এ বাঁহাতি নিজেকে ছাড়িয়ে যান। খেলেন অপরাজিত ৬০ রানের ইনিংস। এর সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) সবার আগে দুই হাজারি ক্লাবে পা রাখেন ঢাকা প্লাটুনের এ ওপেনার। তার অনন্য এ কীর্তির দিনে সিলেট থান্ডারকে সহজেই ৮ উইকেটে হারিয়েছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। এর ফলে দলটি চলতি টুর্নামেন্টে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে জায়গা করে নিয়েছে।
বিপিএলে দুই হাজারি ক্লাবে পৌঁছাতে তামিমের প্রয়োজন ছিল ৩২ রান। গতকাল সিলেটের দেওয়া ১৭৫ রানের জবাব দিতে নেমে জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে একপর্যায়ে এ বাঁহাতি তুলে নেন ৩২ রান। সঙ্গে সঙ্গে দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে জমজমাট টুর্নামেন্টে সবার আগে অনন্য কীর্তি গড়েন। শেষ পর্যন্ত তামিম ৪৯ বলে ৫ চার ও ২ ছয়ে ৬০ রানে অপরাজিত থেকে ঢাকাকে বড় জয় এনে দেন ৯ বল আগেই।
চট্টলায় গতকাল শুরু থেকেই খুব সাবধানে ব্যাট চালান তামিম। সে ধারাবাহিকতায় এ বাঁহাতি ওপেনিংয়ে এনামুল হক বিজয়ের সঙ্গে গড়ে তোলেন ৫৮ রানের জুটি। পরে মেহেদি হাসানকে নিয়ে দলীয় স্কোর বোর্ডে জুটিতে তিনি যোগ করেন আরও ৮৭ রান। এরপর জকির আলির সঙ্গে ৩০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে তামিম শেষ করেন ম্যাচ।
গতকাল তামিম খেলেন এক প্রান্ত আগলে রেখে। তার খেলা দেখা মনে হয়েছে সতীর্থদের ব্যাট চালানোর সুযোগ করে দিচ্ছেন। হয়তো সেটা অন্য প্রান্তে থাকা তামিমের পার্টনাররাও বুঝতে পেরে ছিলেন। যে কারণে এনামুল হক বিজয়, মেহেদি হাসান ও জাকির আলী তোলেন ঝড়। এনামুল করেন ২৩ বলে ৫ চারে ৩২ রান। অন্যদিকে মেহেদি খেলেন ২৮ বলে ৫ চার ও ৩ ছয়ে ৫৬ রানের মারমুখী ইনিংস। আর জাকির অপরাজিত ছিলেন ১১ বলে ৩ চার ও ১ ছয়ে ২২ রান করে।
এর আগে টস হেরে বল হাতে ঢাকার শুরুটা ছিল হতাশার। সে সুযোগে জনাথন চার্লস ও মোহাম্মদ মিথুন চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ঝড় তোলেন। একজন করেন ৪৫ বলে ৩ চার ও ৮ ছয়ে ৭৩ রান। অন্যজন ৩১ বলে ১ চার ও ৪ জয়ে ৪৯ রানে অপরাজিত থাকেন। ইনিংসের ১১তম ওভারে চার্লস ফিরে গেলে তার অভাব পূরণের চেষ্টা করেন সারফানে রাদারফোর্ড। ২৮ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে এ বাহাতি অপরাজিত ছিলেন ৩৮ রানে। তবে দিন শেষে তাদের হতাশা উপহার দেন তামিম ইকবাল ও মেহেদি হাসান। যে কারণে বড় স্কোর গড়েও জিততে পারেনি সিলেট।
বল-ব্যাট হাতে ফের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় সেই মেহেদি হাসানই হয়েছেন ম্যাচসেরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট থান্ডার: ২০ ওভারে ১৭৪/৪ (ফ্লেচার ০, মজিদ ৮, চার্লস ৭৩, মিথুন ৪৯*, মোসাদ্দেক ২, রাদারফোর্ড ৩৮*; মেহেদি ৩-০-৩৩-১, হাসান ৩-০-২৯-০, শাদাব ৪-০-২৩-১, আফ্রিদি ৪-০-২৬-২, ওয়াহাব ৪-০-৩৫-০, মাশরাফি ২-০-২৭-০)।
ঢাকা প্লাটুন: ১৮.৩ ওভারে ১৭৫/২ (এনামুল ৩২, তামিম ৬০*, মেহেদি ৫৬, জাকের ২২*; সোহাগ ৪-০-৪৭-০, সান্তোকি ৩-০-১৬-০, মোসাদ্দেক ৩-০-৩০-১, ইবাদত ৩.৩-০-২৪-১, নাজমুল মিলন ২-০-১৭-০, রাদারফোর্ড ২-০-২৫-০, নাজমুল অপু ১-০-১৬-০)।
ফল: ঢাকা প্লাটুন ৮ উইকেটে জয়ী
ম্যাচসেরা: মেহেদি হাসান