মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সব ক্যাটেগরির শেয়ারে ক্রয় চাপ ছিল। এতে সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার সঙ্গে টাকার অঙ্কেও লেনদেন বাড়ে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল বিক্রেতাদের চেয়ে ক্রেতারা বেশি সক্রিয় ছিলেন। এর প্রভাবে সব খাতের ও ক্যাটেগরির শেয়ারের দাম বাড়ে।
গতকাল বাজারে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও বিবিধ খাতে বেশি ‘ক্রয় চাপ’ লক্ষ করা গেছে। অন্যদিকে ট্যানারি ও পাট খাতে কিছুটা ‘বিক্রয় চাপ’ ছিল। এছাড়া গতকাল টেলিকম খাতে শূন্য দশমিক ১৪৪ শতাংশ বাজার মূলধন হ্রাস পেতে দেখা গেছে।
সূচকের বড় লাফে গতকাল ডিএসইতে লেনদেন বেড়েছে। আগের কার্যদিবস মঙ্গলবারে সূচক বৃদ্ধি পেলেও সোমবারের চেয়ে টাকার অঙ্কে লেনদেন কম হয়েছিল। তবে গতকাল সূচকের বড় উত্থানের সঙ্গে সিংহভাগ শেয়ারদর ও টাকার অঙ্কে লেনদেন বাড়তে দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে এক হাজার ১৬৩ কোটি ৭৮ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে, যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ১৫৬ কোটি টাকা বেশি। মঙ্গলবারে লেনদেন হয়েছিল এক হাজার সাত কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
খাতভিত্তিক লেনদেন বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল লেনদেনে বেশি অবদান রাখে বস্ত্র খাত। আগের কার্যদিবসে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকলেও গতকাল আবার শীর্ষে আসে বস্ত্র খাত। ১৭২ কোটি টাকা লেনদেনের মাধ্যমে গতকাল এ খাতের অবদান ছিল ১৬ দশমিক ৬০ শতাংশ। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ১৪৮ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
গতকাল সর্বোচ্চ ৫৪টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে। এর বিপরীতে শেয়ারদর কমে মাত্র দুটির এবং অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে তিনটির।
দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। আগের কার্যদিবসে শীর্ষে থাকা এ খাতের অবদান ছিল ১৬৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। গতকাল ১৬ দশমিক ৯ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতে মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল ১৭৮ কোটি ২০ লাখ টাকার। এ খাতেরও সিংহভাগ কোম্পানির দর বাড়তে দেখা গেছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ২৪টির কোম্পানির শেয়ারদর বেড়েছে, কমেছে চারটির এবং অপরিবর্তিত থাকতে দেখা গেছে দুটির।
আগের কার্যদিবসের মতো গতকালও লেনদেনে তৃতীয় অবস্থানে ছিল বিবিধ খাত। তবে আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা বেড়েছে। গতকাল এ খাতে ১৫৪ কোটি ৭৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়। আগের কার্যদিবসে এটি ছিল ১০৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা। এ খাতের লেনদেন হওয়া সব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়তে দেখা গেছে।
চতুর্থ অবস্থানে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয় ৮৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আট দশমিক ১৪ শতাংশ অবদান রাখা এ খাতের লেনদেন আগের কার্যদিবসের চেয়ে বেশি হয়। মঙ্গলবার এ খাতের লেনদেন ছিল ৫৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। গতকাল লেনদেন হওয়া ৩৫টি কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ে, কমে চারটির এবং অপরিবর্তিত ছিল মাত্র একটির।
পঞ্চম অবস্থানে থাকা ব্যাংক খাতের অবদান ছিল সাত দশমিক ৬২ শতাংশ। গতকাল ৭৯ কোটি টাকা লেনদেন হওয়া এ খাতে আগের কার্যদিবসে ৮৬ কোটি ৮০ লাখ টাকার লেনদেন হয়। এ খাতের লেনদেনে অংশ নেয়া কোম্পানির মধ্যে শেয়ারদর বাড়ে ২২টির, কমেছে চারটির এবং অপরিবর্তিত ছিল ছয়টির। এছাড়া গতকালের লেনদেনে আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচ দশমিক ৪৭ শতাংশ, সিমেন্ট পাঁচ দশমিক চার শতাংশ, জ্বালানি পাঁচ দশমিক এক শতাংশ, খাদ্য চার দশমিক ৭৭ শতাংশ ও বিমা খাত তিন দশমিক ১০ শতাংশ অবদান রাখে।
গতকাল ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১১৪ পয়েন্ট বেড়ে ছয় হাজার ৯৮২ পয়েন্টে অবস্থান করে। অপর দুই সূচকের মধ্যে শরিয়াহ্ সূচক ডিএসইএস ২৪ পয়েন্টে বেড়ে এক হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে এবং বিশেষ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস৩০ সূচক ৪৪ পয়েন্ট বেড়ে দুই হাজার ৬৬০ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা যায়।
গতকাল সিংহভাগ কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধি পেয়েছে। লেনদেনে অংশ নেয়া ৩৭৫টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩০১টির, কমেছে ৪৩টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৩১টির।
