মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মূল্য সূচকের বড় পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ কমে ৬০০ কোটির ঘরে অবস্থান করেছে। পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকট, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান-সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা ও নেগেটিভ ইক্যুইটি নিয়ে বিএসইসির নির্দেশনা ঘিরে ধোঁয়াশা তৈরি হয়। ফলে পেনিক সেলের কারণে বড় পতন হয়েছে পুঁজিবাজারে। এমন পতনের পর বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। ফলে তারা নিজেদের কিছুটা গুটিয়ে নিয়েছেন। অনেকে শেয়ার বিক্রি করে পুঁজি সঞ্চয় করছেন। এসব কারণে গতকাল আবার পতন দেখা গেছে।
এদিন ডিএসইতে ৬৫৬ কোটি ছয় লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ১৪২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা কম। গতকাল ৭৯৮ কোটি ৯১ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিল। এদিন বিবিধ খাতে সবচেয়ে বেশি শেয়ার হাতবদল হয়েছে, যার কারণে লেনদেনের ২২ দশমিক ৪২ শতাংশ ছিল খাতটির দখলে। এরপর যথাক্রমে বস্ত্র ১২ দশমিক ৯০, ওষুধ ও রসায়ন ১২ দশমিক ৯০, প্রকৌশল ৯ দশমিক ৭৬, ব্যাংক ৭ দশমিক ৬৬ ও খাদ্য খাতে ৬ দশমিক ৯৯ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশের নিচে ছিল।
গতকাল ডিএসইতে ৩৭৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৫৮টির, কমেছে ২৮৮টির ও অপরিবর্তিত রয়েছে ৩৩টির। ফলে কোনো খাতে দর বৃদ্ধি দেখা যায়নি। লেনদেনের শীর্ষে থাকা পাঁচ খাতের মধ্যে বিবিধ ৬৯, বস্ত্র ৭৪, ওষুধ ও রসায়ন ৮৭, প্রকৌশল ৮৩ ও ব্যাংক খাতের ৬৩ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে।
বড় দরপতনের কারণে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স কমেছে ৫৩ পয়েন্ট। দিন শেষে সূচকটি অবস্থান করছে ছয় হাজার ৬৯৯ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৪৪৩ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৯ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৭০ পয়েন্টে।
গতকালের সূচক পতনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে গ্রামীণফোন। কোম্পানিটির ১ দশমিক ৫৩ শতাংশ দর পতনে সূচক কমেছে ৯ দশমিক ৬৭ পয়েন্ট। এছাড়া সূচক কমাতে ভূমিকা রাখা শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলোÑওয়ালটন হাইটেক, ব্র্যাক ব্যাংক, রবি, ইউনাইটেড পাওয়ার, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রেনাটা, পাওয়ার গ্রিড ও প্রিমিয়ার ব্যাংক। এই ১০টি কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ২৬ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট।
বিপরীতে সূচক বাড়ানোর চেষ্টায় ছিল তাকাফুল ইন্স্যুরেন্স, যমুনা ব্যাংক, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ম্যারিকো, পূবালী ব্যাংক, খুলনা পাওয়ার, ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইয়াকিন পলিমার ও সাইফ পাওয়ার। এই ১০ কোম্পানি মিলে সূচকে যোগ করতে পেরেছে ২ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট।