মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: হঠাৎ করেই পুঁজিবাজারের ছন্দপতন হওয়ায় সতর্ক হয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। যে কারণে যারা অধিক লাভের আশায় শেয়ার ধরে রেখেছিলেন, তারা এখন হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। অর্থাৎ কম লাভেও শেয়ার ছেড়ে দিচ্ছেন তারা। পাশাপাশি লোকসানে শেয়ার বিক্রি করেও অনেকে পোর্টফোলিতে নগদ টাকা রেখে দিচ্ছেন। মূলত আগামীতে বাজার কেমন যাবে সেই ভাবনা থেকেই এমন সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
গতকালের বাজার পর্যালোচনা করে দেখা যায়, বিনিয়োগকারীরা সবচেয়ে বেশি মুনাফা তুলেছেন বিমা খাত থেকে। যে কারণে গতকাল এ খাতের শেয়ারেরই সবচেয়ে বেশি দরপতন হতে দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টদের মতে, ইতোমধ্যে অনেক বিমা কোম্পানির শেয়ার অতিমূল্যায়িত হয়ে গেছে। যে কারণে এসব শেয়ারের দর হ্রাস পাওয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ কোনো একটি খাতের শেয়ারদর যদি কারণ ছাড়া বৃদ্ধি পায় তাহলে তা বেশিদিন স্থায়ী হয় না।
এদিকে মুনাফা তোলার চাপ থাকায় গতকাল বিমা খাতের শেয়ারে বিক্রয় চাপ বেশি ছিল। যার জের ধরে আগের মতোই লেনদেনে এগিয়ে ছিল এ খাত। গতকাল দিন শেষে মোট লেনদেনে এই খাতের অবদান দেখতে পাওয়া যায় ৪৮ শতাংশ। বিমা খাত ছাড়াও অন্যান্য খাতে বিক্রয় চাপ দেখা যায়। যে কারণে সব খাতেরই শেয়ারদর পতন হয়।
গতকাল মোট লেনদেনে বিমা খাতের পরওই ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। দিন শেষে মোট লেনদেনে এই খাতের অবদান দেখতে পাওয়া যায় ১১ শতাংশ। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন পর মোট লেনদেনে ১০ শতাংশের বেশি অবদান রাখতে সক্ষম হয় এই খাতটি।
অন্যদিকে গতকাল কমতে দেখা গেছে ডিএসইর সূচক। গতকাল দিন শেষে ২৪ পয়েন্ট কমে সূচক স্থির হয় চার হাজার ৮৬৭ পয়েন্টে। তবে বিক্রয় চাপ বেশি থাকায় গতকাল কিছুটা বেড়েছে ডিএসইর লেনদেন। গতকাল দিন শেষে ডিএসইতে মোট এক হাজার কোটি টাকার শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট কেনাবেচা হয়। এর মধ্যে ৩৮ কোটি টাকার লেনদেন ছিল ব্লক মার্কেটে। গতকাল এ মার্কেটে ২৭টি কোম্পানি লেনদেনে অংশ নিয়েছে। কোম্পানিগুলোর ১ কোটি ২২ লাখ ২৪ হাজার ৯০২টি শেয়ার ৬৭ বার হাত বদল হয়।
কোম্পানিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ ৯ কোটি ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে এশিয়া প্যাসিফিক জেনারেল ইন্স্যুরেন্সের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৯ কোটি ২ লাখ ৮ হাজার টাকার ব্র্যাক ব্যাংকের এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪ কোটি ৯৫ লাখ ৭ হাজার টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে আইএফআইসি ব্যাংকের।