শেয়ার বিজ ডেস্ক: নৌপথে দুর্ঘটনা এড়াতে দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির আওতায় আনা ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের স্বার্থে সব ধরনের নৌযানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার ওপর জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দেশে নতুন চারটি মেরিন একাডেমির পাশাপাশি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নানা সংস্থার অবকাঠামো ও শতাধিক জলযানের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে তিনি এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন। সূত্র: বিডিনিউজ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘নৌযানে যাতায়াতকারী এবং পরিচালনাকারী সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য আমি অনুরোধ জানাচ্ছি। যখনই যারা (নৌপথে) চলাচল করবেন, একটু সাবধানে চলাচল করবেন। সব থেকে দুঃখজনক যে আমাদের যারা এই নৌযানগুলো চালান বা পরিচালনা করেন বা যারা ব্যবসাও করেন, যাত্রীদের সুরক্ষা যেমন তাদের দেখতে হবে আবার যাত্রীদেরও নিজেদের সুরক্ষার কথা চিন্তা করতে হবে। যেসব নৌযান চলাচল করে, আমি মনে করি প্রত্যেকটারই রেজিস্ট্রেশনের সিস্টেম থাকা উচিত। এই রেজিস্ট্রেশন না থাকার কারণে অনেক সময় কে, কার, কি, ক্ষতিপূরণে কী ব্যবস্থা, সেগুলো করা যায় না।’
কভিড-১৯ সংক্রমণ রোধের লকডাউনে নৌ চলাচলও বন্ধের মধ্যে গত সোমবার সকালে মাদারীপুরের শিবচরে পদ্মায় বালিবাহী নৌযানের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে স্পিডবোট ডুবে ২৬ জনের মৃত্যু হয়। এ প্রাণহানির দায় কেউ নিতে চাইছে না। নৌচলাচল তদারককারী কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএ বলছে, ঘাট বন্ধের মধ্যে ওই স্পিডবোট চলা আটকানোর দায়িত্ব ছিল নৌপুলিশের। নৌপুলিশ পাল্টা বিআইডব্লিউটিএকে অভিযোগ করছে। নৌ দুর্ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিআইডব্লিউটিএ।
দুর্ঘটনা রোধে নৌকর্মীদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে জলযান পরিচালনার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা নৌযানে কতজন মানুষ উঠতে পারে, চলতে পারে সেটা বিবেচনায় না রেখে ঠেলাঠেলি করে এক সঙ্গে বেশি লোক উঠতে গেলে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। সেখানে নিজেদের জীবনটা চলে যেতে পারে, সেই কথাটা বিবেচনা নিয়ে এই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে, সজাগ থাকতে হবে। দুর্ঘটনা এড়াতে সবাইকে নৌপথে চলাচলের নিয়মগুলো মেনে চলার আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।’
এছাড়া রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের বিরোধিতাকারীরা অতীতে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে পণ্যবাহী জাহাজ চলাচলের প্রতিবাদ কেন করেননি সে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘আমাদের অনেকেই সুন্দরবন নিয়ে অনেক চিন্তা-ভাবনা করেন, অনেক কথা বলেন। আমরা যখন রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র করতে গেলাম তার বিরুদ্ধে আন্দোলন, সংগ্রাম করে যাচ্ছেন। কিন্তু তাদের কাছে আমার প্রশ্ন ঘাসিয়া খালটা যখন বন্ধ হয়ে গেল আর সুন্দরবনের ভেতর থেকে যেখানে জীববৈচিত্র্য পরিপূর্ণ জায়গা, যেখানে নীরবে সুন্দরভাবে তারা বসবাস করত, কখনও তাদের কেউ বিরক্তও করতে পারত না। সেখান থেকে যখন জাহাজ আসে তখন আমাদের এই আন্দোলনকারীরা তখন চুপ ছিলেন কেন? তারা তখন এই কথাটা আনেনি কেন যে সুন্দরবনের ভেতর থেকে পণ্য পরিবহন করলে ওই জায়গাগুলোতে জীববৈচিত্র্যও নষ্ট হবে, সুন্দরবনও নষ্ট হতে পারে।’