সব শাখা খোলা রাখেনি পূবালী ব্যাংক

নিজস্ব প্রতিবেদক: সীমিত পরিসরে ৩০ এপ্রিল সব শাখা খোলা রাখার নির্দেশ ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের। গতকাল নির্দেশনা মেনে প্রায় সব ব্যাংক খোলা থাকলেও পূবালী ব্যাংকের একাধিক শাখা খোলা ছিল না। কয়েকটি শাখায় গ্রাহকরা গিয়ে দেখতে পান তালাবদ্ধ গেট। ঢাকার বাইরে রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলা সদরের শাখায় এমনটি হয়েছে বলে জানা গেছে। রাজবাড়ী সদরের পূবালী ব্যাংকের গ্রাহক সোহেল রানা গতকাল নগদ অর্থ তুলতে ব্যাংকে যান। সেখানে গিয়ে তিনি দেখতে পান শাখা তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। কোথাও কোনো নোটিস টানানো নেই।

ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, ‘বৃহস্পতিবার টাকার প্রয়োজন হয়। কিন্তু পত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলের মাধ্যমে জানতে পারলাম ৩০ এপ্রিল শনিবার হলেও সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা থাকবে। এজন্য ঈদের সময়ে এত টাকা উঠিয়ে বাড়িতে রাখা নিরাপদ মনে করিনি। শনিবার টাকা তুলে একজনকে দেয়ার কথা। কিন্তু ব্যাংকে গিয়ে দেখি বন্ধ, কেউ নেই। রাজবাড়ী সদরে পূবালী ব্যাংকের একটিই শাখা। এখন বিপদে পড়ে গেছি। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে এত টাকা ওঠানো যাবে না। ব্যাংক কেন এমন করল তা জানি না। আমার মতো অনেক গ্রাহকই এসে ফিরে গেছেন।’

৩০ এপ্রিল সারাদেশে ব্যাংকের শাখা খোলা রাখার জন্য বাংলাদেশ একটি নির্দেশনা দেয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে। গত ২৮ এপ্রিল জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, ‘এ বছর ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ব্যবসা-বাণিজ্যে অধিক পরিমাণে লেনদেন সংঘটিত হচ্ছে বিধায় ব্যংক ব্যবস্থায় নগদ অর্থ জমা ও উত্তোলনের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সর্বসাধারণের সুবিধার্থে ৩০ এপ্রিল ২০২২ তারিখে সীমিত সংখ্যক লোকবলের মাধ্যমে সারাদেশে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালিত হবে।’

‘শনিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত লেনদেন চলবে ব্যাংকগুলোয়। লেনদেন-পরবর্তী আনুষঙ্গিক কার্যক্রম শেষ করতে ব্যাংক খোলা থাকবে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত।’

নগদ লেনদেনের সুবিধার্থে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগও খোলা রাখা হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেম, ফরেক্স রিজার্ভ, বৈদেশিক মুদ্রা বিভাগ ও মানবসম্পদ বিভাগসহ কয়েকটি বিভাগ খোলা রাখে বাংলাদেশ ব্যাংক।

শাখা বন্ধ রাখার বিষয়টি স্বীকার করেন পূবালী ব্যাংকের ফরিদপুর আঞ্চলের ব্যবস্থাপক আলতাফ হোসেনও। তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, ‘হেড অফিসের লিখিত ও মৌখিক নির্দেশনা মেনে সব শাখা খোলা রাখা হয়নি। এডি শাখা ও বড় বড় শাখা খোলা রাখা হয়েছে।’ রাজবাড়ী ও ফরিদপুর জেলা শহরের মতো গুরুত্বপূর্ণ এলাকার শাখা বন্ধ রাখার বিষয়ে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

ভুক্তভোগীরা জানান, রাজবাড়ী সদরে পূবালী ব্যাংকের আর কোনো শাখা নেই। ব্যাংক খোলা আছে ভেবে এসে হয়রানি হতে হলো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩০ এপ্রিল সারাদেশে সব শাখা খোলা না রাখার বিষয়ে পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল আলম খান চৌধূরী বলেন, ‘সীমিত পরিসরে ব্যাংক খোলা রাখার বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে। কিন্তু সব শাখা খোলা রাখা হবে কি না, তা নিয়ে একটু অস্পষ্টতা রয়েছে।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ‘সারাদেশে সীমিতসংখ্যক লোকবল দিয়ে সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে। সব শাখাই খোলা রাখতে বলা হয়েছে।’ বিষয়টির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কোনো উত্তর দেননি পূবালী ব্যাংকের এই ব্যবস্থাপনা পরিচালক।

প্রসঙ্গত, দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পূবালী ব্যাংকের সারাদেশে শাখা রয়েছে ৪৯০টি। ২০২০ সালে ব্যাংকটি মুনাফা করেছে ৩৭০ কেটি ৬৮ লাখ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০