ঢাকায় অনুষ্ঠিত শিশুদের জলবায়ু সম্মেলনে (চিলড্রেনস ক্লাইমেট সামিট) গত ২০ নভেম্বর বাংলাদেশি শিশুরা জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে তাদের আশঙ্কার কথা শুনিয়েছে। পাশাপাশি তারা এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণেরও আহ্বান জানায়।
জলবায়ু সংকট সম্ভবত বর্তমানে সবচেয়ে জটিল সমস্যা। আমাদের ভবিষ্যতের জন্য, যে গ্রহে আমরা বাস করছি সেই পৃথিবীর জন্য এবং আমাদের বেঁচে থাকার জন্য এটি একটি চলমান যুদ্ধ। আমাদের দেশ জলবায়ু পরিবর্তনের অগ্রভাগে রয়েছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, নদীভাঙন, দূষণ ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া আমাদের বেঁচে থাকা, সমৃদ্ধি এবং ভবিষ্যৎকে বিপদে ফেলছে। এসব বিষয়ে এখনই কোনো ব্যবস্থা না নিলে এখান থেকে ফেরার কোনো সুযোগ থাকবে না। এক্ষেত্রে অপূরণীয় ক্ষতি হবে। দরিদ্র ও ঝুঁকিতে থাকা শিশুদের চরম মূল্য দিতে হবে।
আমরা বাংলাদেশের সব আসন, অর্থাৎ ৩০০ আসনের শিশুদের প্রতিনিধিত্ব করি এবং আমরা দেশের ছয় কোটি ১০ লাখ শিশুর অধিকারের কথা বলছি।
আন্তঃপ্রজš§ সংহতির জন্য পদক্ষেপ নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে শিশুদের সুরক্ষা দিন। ক্ষতিগ্রস্ত কমিউনিটির জন্য স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিতকল্পে পরিকল্পনা চূড়ান্ত করুন। দূষণ ও গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ হ্রাস করুন। জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শিশু ও পৃথিবীকে রক্ষা করুন। পরিবেশ-সম্পর্কিত শিক্ষা ও সবুজের আচ্ছাদন বাড়ানোর দক্ষতাকে প্রসারিত করুন। পরিবেশবান্ধব উপায়ে কীভাবে বাঁচতে হবে এবং জলবায়ু পরিবর্তন হ্রাস করতে শিশুরা কী করতে পারে, সেসব বিষয় শিক্ষা দিতে হবে। সবুজ অর্থনীতি ও সবুজ কর্মসংস্থানে বিনিয়োগ করুন। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে ক্রমবর্ধমানভাবে সবুজ অর্থনীতিতে রূপান্তর করুন এবং এই অর্থনীতি যেসব কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে সেগুলোতে তরুণদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিন।
সমস্যা সমাধানে শিশুদের অংশ নিতে দিন। শিশুদের ভবিষ্যৎকে প্রভাবিত করে এমন নীতি ও সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবশ্যই শিশুদের পরামর্শ নেওয়া উচিত। নেতৃবৃন্দ ও অন্য প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের সমর্থন শিশুদের দরকার, তাদের কথা বলার সুযোগ দেওয়া দরকার এবং শিশুদের কথা ও পরামর্শ শুনতে হবে।
আন্তঃপ্রজš§ সংহতি ও বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে অনুকরণীয় নেতৃত্বের আহ্বান জানাচ্ছি। নষ্ট করার মতো কোনো সময় আমাদের নেই। আমাদের ভবিষ্যৎ অনেক কিছুর সঙ্গে জড়িয়ে গেছে এবং আমাদের পৃথিবীকে আমরা সবাই ভাগাভাগি করে নিয়েছি। একটি উন্নত, নিরাপদ ও সবুজ বাংলাদেশের জন্য শিশুরা আবার একসঙ্গে নতুন কল্পনা করতে পারে। শিশুরা জরুরি ভিত্তিতে ও সাহসের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে