বিস্তৃত চা বাগান, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বন রেমা কালেঙ্গা, সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান, লক্ষ্মীবাঁওড় জলাবন, কমলারানীর দিঘিসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অনেক স্থান রয়েছে হবিগঞ্জে। এর মধ্যে বিনোদনপ্রেমীদের জন্য নতুন মাত্রা যোগ করেছে পদ্মবিল।
সম্প্রতি জেলার বানিয়াচং উপজেলার পুকড়া ইউনিয়নের মুড়ারআব্দা হাওরে এই পদ্মবিলের সন্ধান মেলে। কয়েক মাসের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে এ বিলের নাম। তবে এর সংরক্ষণ ও জনসচেতনতার অভাবে এই সৌন্দর্য ধরে রাখা যাবে কি নাÑএ নিয়ে বিনোদনপ্রেমীদের মনে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা প্রশাসন বলছে, একে আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ইতোমধ্যে হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আতাউর রহমানসহ সংস্কৃতি, পরিবেশকর্মী ও সাংবাদিকরা বিলটি পরিদর্শন করেছেন। পরিদর্শনকালে জেলা প্রশাসক বিলটিকে সংরক্ষণের ব্যাপারে কাজ করার আশ্বাস দিয়েছেন।
সরেজমিনে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে গোলাপি রঙের পদ্ম দেখে মন জুড়িয়ে যায়। চোখ যত দূর যায়Ñশুধু পদ্ম আর পদ্ম! এমন অপরূপ দৃশ্য যেন ভ্রমণপিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকছে। এ বিলের সৌন্দর্য ও পদ্ম দেখার জন্য প্রতিদিনই আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। তারা নৌকায় ঘুরে এর সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। স্থানীয়রাও ভ্রমণপিপাসুদের সার্বিক সহযোগিতা করছেন। বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে পদ্ম দেখলে মনও জুড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) হবিগঞ্জ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তোফাজ্জল সোহেল বলেন, পদ্মবিলের সন্ধান পাওয়ার কথা জেনে আমি যতটা না আনন্দিত, তারচেয়ে বেশি বিরক্ত এ বিলের ফুল ছেঁড়া নিয়ে। এটি অবশ্যই ভালো মানসিকতা নয়। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
সরকারি বৃন্দাবন কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব জানান, পদ্মফুল দেখতে যেমন সুন্দর, তেমনি এর অনেক গুণ রয়েছে। পদ্মফুলের মধু চোখের অসুখের মহৌষধ। এর স্কন্ধ শ্বেতী ও হƒদরোগের ওষুধ হিসেব ব্যবহার করা হয়। এই ফুল আমাদের সংরক্ষণ করতে হবে।
কবি ও নাট্যকার অজেয় বিক্রম দাশ শিবু বলেন, আমি ফেসবুকের কল্যাণে জেনেছি হবিগঞ্জ শহরের নিকটবর্তী বালিখালের কাছে একটি জায়গায় পদ্মফুলের বিস্তার ঘটেছে। ফেসবুকে পদ্মবিলের সৌন্দর্য উপভোগকারীদের দেওয়া পোস্ট দেখে আমি আকৃষ্ট হই।
হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক বলেন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য হবিগঞ্জের ব্র্যান্ডিং করা হচ্ছে। পদ্মবিল আবিষ্কারের ফলে পর্যটন সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কাজল সরকার
