সম্ভাবনাময় ব্লকচেইন

ডিজিটাল মুদ্রা বিটকয়েন সম্পর্কে আমাদের কমবেশি ধারণা আছে। বিটকয়েন থেকেই ব্লকচেইন ধারণাটি এসেছে। ইন্টারনেটভিত্তিক লেনদেন প্রক্রিয়া হিসেবে কাজ করে ব্লকচেইন। এমনকি এই ব্যবস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব পক্ষকে নিরাপদ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেনবিষয়ক তথ্য দেখার সুযোগ করে দেয়।

সহজ ভাষায়, এক ধরনের হিসেবের খাতা এই ব্লকচেইন প্রযুক্তি। ডিজিটাল ফরম্যাটের এই হিসেবের খাতায় ডিজিটাল ট্রানজেকশনের সবকিছু রেকর্ড থাকে। এখানে কোনো সেন্ট্রাল অ্যাডমিনিস্ট্রেটর নেই। আদতে এটি ডেটাবেসের একটি নেটওয়ার্ক, যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে সিনক্রোনাইজড হয়। মজার বিষয়, নেটওয়ার্কে থাকা সবার কাছেই এই ডেটাবেস দৃশ্যমান।

‘পিয়ার টু পিয়ার’ পদ্ধতিতে কাজ করে ব্লকচেইন। একটি ব্লকচেইন ডেটাবেসে সব ধরনের লেনদেন সংরক্ষণ করা হয়, তৈরি করে ‘গোল্ডেন রেকর্ড’। অর্থাৎ নিরাপদ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সব পক্ষের জন্য কাজ করে। এখানে তৃতীয় পক্ষের যাচাইয়ের প্রয়োজনও পরে না।

ব্লকচেইন সেকেন্ডে কয়েকশ লেনদেন সম্পন্ন করতে পারে। ব্লকচেইন ভবিষ্যতে গুগল ও ফেসবুকের মতোই জনপ্রিয় হবেÑএমনই ধারণা প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের। প্রযুক্তিখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে পারে এটি। ব্লকচেইন প্রযুক্তির মাধ্যমে শুধু সফটওয়্যার দিয়েই অর্থ স্থানান্তর করা যায়। একেই সামাজিক বিপ্লব হিসেবে দেখছেন অনেক প্রযুক্তিবিদ। বিটকয়েন কিংবা অন্য যেকোনো ক্রিপ্টোকারেন্সির নতুন পণ্য তৈরিকে আরও সস্তা ও দ্রুত করবে এই প্রযুক্তি।

বিটকয়েন ও ব্লকচেইনে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, তা যে কোনো দেশের উৎপাদনক্ষমতা বাড়ানোর কাজে লাগানো যেতে পারে, বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার গবেষকরা। দেশটির কমনওয়েলথ সায়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল রিসার্চ অরগানাইজেশন (সিএসআইআরও) জানিয়েছে, বিদ্যমান কোনো শিল্পকে আবার নতুন করে গঠন করার ক্ষমতা রাখে ব্লকচেইন। অস্ট্রেলিয়ার ট্রেজারার হন স্কট মরিসন (এমপি) বলেছেন, যেসব সুফলের কথা বলা হচ্ছে তাতে এই ব্লকচেইনকে শুধু উৎপাদনই নয়, নিরাপত্তার কাজেও লাগানো যেতে পারে। অস্ট্রেলিয়া সরকারের মতো অনেক উন্নত দেশের সরকারও বিটকয়েনের এই প্রযুক্তি কাজে লাগানোর কথা ভাবছে।

ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, ২০১৬ সালে এক দশমিক চার বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ব্লকচেইন প্রযুক্তির পেছনে ব্যয় করেছে উন্নত দেশগুলো।

 

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০