লুব অয়েল বিপণন

সম্ভাবনা থাকার পরও বাড়ছে না বিপিসির ব্যবসা

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: বাংলাদেশে পেট্টোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) দেশের বাজারে জ্বালানি তেলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিপিসি বিদেশ থেকে আমদানিকৃত জ্বালানির মাধ্যমে জ্বালানি চাহিদা পূরণ করে। এর মধ্যে অন্যতম লুব অয়েল। দেশে বছরের এক লাখ ৮০ হাজার টন চাহিদা আছে। এর মধ্যে স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত ৭০ হাজার টন আর বাকি এক লাখ ১০ হাজার টন আমদানির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। আর এ আমদানির মধ্যে বিপিসি বছরের ২০ হাজার টন সরবরাহ করতে পারে। সম্ভাবনার থাকার পরও সংস্থাটির বিনিয়োগ নেই।

বাংলাদেশে পেট্টোলিয়াম করপোরেশন সূত্রে জানা যায়, দেশে বছরের এক লাখ ৮০ হাজার টন লুব অয়েলের চাহিদা রয়েছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে চাহিদা ছিল ১৭ হাজার ৪৪৫ মেট্রিক টন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরের ১৮ হাজার ৭৫২ মেট্রিক টন, ২০১৭-১৮ অর্থবছরের ১৯৮১২ মেট্রিক টন, ২০১৮-১৯ অর্থবছরের ২৩ হাজার ৪০২ মেট্রিক টন এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরের ২১ হাজার ১২৮ মেট্রিক টন। অর্থাৎ প্রতি বছর লুব অয়েলের চাহিদা বাড়ছে। যদিও ২০০২ সালের বেসরকারি উদ্যোক্তাদের লুব আমদানি ও বিপণনের সুযোগ দেয়ায় তখন থেকে বিপিসির মার্কেট শেয়ার কমতে থাকে, যা বর্তমানে ১০ শতাংশের কাছাকাছি। বর্তমানে ৫০টির অধিক প্রতিষ্ঠান লুব অয়েল আমদানি ও বিপণনের সঙ্গে জড়িত। এর মধ্যে ইস্টার্ন লুব্রিক্যান্টস লিমিটেড গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বেইস অয়েল, লুব্রিক্যান্টস ও ব্যাটারি বিক্রয় করে লোকসান করে ১৩ কোটি ৪১ লাখ টাকা। আর গত ২০২০-২১ অর্থবছরের মাত্র পাঁচ কোটি ১০ লাখ টাকা লাভ করে। তাদের লুব্রিক্যান্টস বিক্রি ছিল এক হাজার ৫৫৩ মেট্রিক টন। অথচ এ কোম্পানির সক্ষমতা ২৪ হাজার মেট্রিক টন।

বেসরকারি একটি কোম্পানির বাজার পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন মতে, প্রতি বছর বাংলাদেশ ও ভারতের সেভেন সিস্টার খ্যাত সাতটি রাজ্যে লুব অয়েলের চাহিদা বাড়ছে। এছাড়া বাংলাদেশের আগত সমুদ্রগামী নৌযানগুলোতে চাহিদা বাড়ছে। আর দেশের চাহিদা ৬৫ ভাগ যানবাহন খাতে, শিল্প খাতে ৩০ শতাংশ এবং নৌযানে পাঁচ শতাংশ লুব অয়েল ব্যবহার হচ্ছে। এ খাতে বছরে তিন শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হচ্ছে। অপরদিকে ভারতে বছরের চাহিদা এক হাজার ৩২৩ লাখ মেট্রিক টন, জাপানে দুই হাজার ৯৭৩ লাভ মেট্রিক টন এবং চীনে তিন হাজার ২৩৬ লাক টন। সেই তুলনায় খুব ছোট বাংলাদেশের বাজার।

এ বিষয়ে বাংলাদেশে পেট্টোলিয়াম করপোরেশনের পরিচালক (অপারেশন ও পরিকল্পনা) সৈয়দ মেহেদি হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। ফলে তার মন্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে উপ-মহাব্যবস্থাপক (বণ্টন ও বিপণন) জাহিদ হোসাইন শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমরা বাজার পর্যবেক্ষণ করে লুব অয়েল ও বেইস অয়েল আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। এমনকি আন্তর্জাতিক একটা টেন্ডারও করেছিলাম। কিন্তু প্রত্যাশিত দর না পাওয়ায় আমরা আমদানি করতে পারিনি। কারণ বাজারে ৪০টির অধিক কোম্পানি লুব অয়েলের ব্যবসা করছে। তাদের চেয়েও কম দামে বিক্রি করতে না পারলে তো ব্যবহারকারীরা আমাদের পণ্য কিনবে না। চলতি মাসে এ বিষয়ে একটি মিটিং আছে। তখন সিদ্ধান্ত হতে পারে লুব আমদানির বিষয়ে।’ বেইস অয়েল আমদানির একটি প্রক্রিয়া আছে। আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। আসলে অনেক কিছু বিবেচনা করে তো আমদানি করতে হয়। এর আগে কিছু পণ্যে আমরা তেমন সাড়া পায়নি।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০