সাইফুল আলম ও সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে আমদানি করা বিভিন্ন ধরনের পণ্য যথাসময়ে খালাস করা হচ্ছে না। আমদানি করা পণ্য (বিশেষত ফল) নষ্ট হয়ে যাওয়া কিংবা দাম পড়ে গেলে অনেক আমদানিকারক পণ্য খালাস করেন নাÑএমন অভিযোগ রয়েছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে সময়মতো খালাস না হওয়া ২০ ফুট দীর্ঘ কনটেইনারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে পাঁচ হাজার ৭১১টি। কনটেইনার নামানোর পর ৪৫ দিনেও এগুলো খালাস নেওয়া হয়নি। ফলে একদিকে কন্টেইনার জটের কারণে বন্দর পরিচালনায় যেমন ব্যাঘাত ঘটছে, অন্যদিকে সরকারও রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণে আজ রোববার প্রথম ধাপে ১৮টি কনটেইনারের পণ্য নিলামে তোলা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৫টিতে তিন লাখ ৬০ হাজার কেজি মাল্টা এবং অবশিষ্ট তিনটি কনটেইনারে ৮৭ হাজার কেজি আদা রয়েছে।
কাস্টমস সূত্রমতে, আমদানিকারকরা পণ্য ছাড় না করায় সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। রাজস্ব ক্ষতি কমাতেই নিয়ম অনুযায়ী পণ্যগুলো নিলামে তোলা হয়েছে। নিয়মানুযায়ী জাহাজ থেকে বন্দরে নামানোর ৩০ দিনের মধ্যে পণ্য খালাস করে নিতে হয়। এ সময়ের মধ্যে কোনো আমদানিকারক পণ্য খালাস না করলে তাকে নোটিস দেয় কাস্টমস। নোটিস দেওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে ওই পণ্য খালাস না করলে তা নিলামে তুলতে পারে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।
কাস্টমসের নিলাম শাখার সহকারী কমিশনার মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ‘নিলামযোগ্য পণ্য দ্রুত বিক্রি করতে অগ্রাধিকারভিত্তিক বিশেষ কর্মসূচি নিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টম হাউজ। আর নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যেসব আমদানিকারক পণ্য খালাস নেননি, সেগুলো এখন থেকে ধারাবাহিকভাবে নিলামে তোলা হবে।’
নিলামে অংশগ্রহণকারীরা কমপক্ষে এক বা দুটি কনটেইনারের (২৪ থেকে ৪৮ হাজার কেজি) কেনার জন্য দর হাঁকতে পারবেন। যারা নিলামে অংশ নেবেন, তাদের গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় কনটেইনার খুলে ফল দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়া আজ সকাল ১০টায়ও কনটেইনারে ফল দেখার সুযোগ পাবেন নিলামে অংশ নিতে ইচ্ছুকরা। বেলা ২টায় চট্টগ্রাম নগরের কাস্টমস নিলাম হলে সরেজমিন উপস্থিত থেকে দর হাঁকতে হবে। এছাড়া আগামী সপ্তাহে সাত লাখ ২০ হাজার কেজি বিদেশি ফল (আপেল, কমলা ও মাল্টা) নিলামে তোলা হবে। এসব তাজা ফল চট্টগ্রাম বন্দর চত্বরের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কনটেইনারে রাখা আছে।
কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্র জানায়, রোববার নিলামের জন্য তোলা মাল্টা গত ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিল মাসের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরে এসে পৌঁছায়। চট্টগ্রামের মেসার্স এফ ট্রেড করপোরেশন, এমকেবি করপোরেশন ও এগ্রোকাগ্রি কমোডিটিস নামের তিনটি প্রতিষ্ঠান ওই মাল্টা মিসর থেকে আমদানি করে। এর মধ্যে গত ফেব্রুয়ারি মাসে চট্টগ্রামের সদরঘাটের এমকেবি করপোরেশন দুই কনটেইনারে ৪৮ হাজার কেজি মাল্টা আমদানি করে। মেসার্স এফ ট্রেড করপোরেশন গত মার্চে ১২ কনটেইনার মাল্টা (দুই লাখ ৮৮ হাজার কেজি) আমদানি করে। খালাস না নেওয়ায় এসব মাল্টাও নিলামে তোলা হয়েছে।
Add Comment