Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:55 pm

সয়াবিন তেলে ২০ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ

নিজস্ব প্রতিবেদক: নিত্যপণ্যের বাজার সামাল দিতে ভোজ্যতেলে ভ্যাট মওকুফের ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

গতকাল সচিবালয়ের ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘জিনিসের দাম যাতে সহনীয় থাকে, সে জন্য আজকে যেসব আইটেমের ওপর ভ্যাট ছিল, সেগুলো তুলে নিয়েছি। সরকার থেকে যে পরিমাণ সহযোগিতা করা দরকার সেটা করা হচ্ছে। ভোজ্যতেল, চিনি ও ছোলায় ভ্যাট প্রত্যাহার করা হয়েছে।’

অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রে উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ও ভোক্তা পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট মওকুফ করা হয়েছে। আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।

বর্তমান বাজারে সয়াবিন তেলের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য ১৬৮ টাকা। ঘোষিত হারে ভ্যাট প্রত্যাহার করা হলে প্রতি লিটারে দাম ৩০ টাকার মতো কমতে পারে বলে ধারণা দিয়েছেন সয়াবিন তেল আমদানিকারক অন্যতম কোম্পানি সিটি গ্রুপের বিপণন বিভাগের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা।

নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় মানুষের কষ্ট হচ্ছেÑস্বীকার করে অর্থমন্ত্রী মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে বলেন, ‘নিজস্ব উৎপাদন কম হলে জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আবার যে জিনিসগুলো আমদানি করি, যেগুলো আমাদের হাতের বাইরে, সেগুলো অনেক প্যারামিটারের কারণে দাম বেড়ে যায়। তখনও ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যেমন এখন যুদ্ধ হচ্ছে সেটা একটা কারণ। এলসি প্রাইস, ট্রান্সপোর্ট কস্ট এগুলো বেড়ে যায়। যারা আমদানি করেন তারাও সুযোগটা নেয়ার চেষ্টা করেন, সে কারণে আরও বেশি বাড়ে দাম।’

পরিস্থিতি সামাল দিতে ভ্যাট-শুল্ক প্রত্যাহারের পাশাপাশি সরকারি বিপণন সংস্থা টিসিবিকে আরও শক্তিশালী করা হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এবার যে উদ্যোগটা নেয়া হচ্ছে, সেটা হলো টিসিবিকে শক্তিশালী করা। বাজারে সিন্ডিকেটের কাছে যদি কোনো মালামাল থেকে থাকে, দাম বাড়ানোর চেষ্টা করে তারা সেই সুযোগ পাবে না টিসিবির মাধ্যমে বাজারে সঠিকভাবে বিতরণ করা গেলে।’

ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভোজ্যতেলের ওপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহার করতে চিঠি দিয়েছিল এনবিআরকে। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে নিত্যপণ্যটির ওপর থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার নিয়ে ‘কাজ চলছে’ বলে বুধবার জানিয়েছিলেন এনবিআরের একজন সদস্য।

এদিকে রোজা সামনে রেখে চিনির দাম স্থিতিশীল রাখতে নিয়ন্ত্রণমূলক আমদানি শুল্কে ১০ শতাংশ ছাড় অব্যাহত রাখার ঘোষণা এসেছিল গত ৬ ফেব্রুয়ারি। একজন আমদানিকারক জানান, ভোজ্যতেলে বর্তমানে তেল আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ, উৎপাদন পর্যায়ে ১৫ শতাংশ এবং বিক্রয় পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে। চিনিতে সর্বমোট ৬৫ শতাংশ ভ্যাট বা শুল্ক রয়েছে। এর মধ্যে স্পেসিফিক ডিউটি প্রতি টনে তিন হাজার টাকা। রেগুলেটরি ডিউটি ২০ শতাংশ, যা কয়েক মাস আগেও ৩০ শতাংশ ছিল। এআইটি বা অ্যাডভান্সড ইনকাম ট্যাক্স রয়েছে ২ শতাংশ। আমদানি পর্যায়ে ১৫ শতাংশ ভ্যাট রয়েছে।