সয়াবিন-পামঅয়েল খোলা বিক্রি করা যাবে না: বাণিজ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৩১ মে থেকে সয়াবিন ও ৩১ ডিসেম্বর থেকে পামঅয়েল খোলা বিক্রি করা যাবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। এসব তেল বোতলে বিক্রি করতে হবে।

গতকাল বিকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ব্রিফিংকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন। এর আগে আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মজুত, সরবরাহ, আমদানি এবং মূল্য পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক হয়।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মজুত যথেষ্ট পরিমাণে আছে। সব আমাদের হাতে আছে, কোনোটার সমস্যা নেই। হঠাৎ করে টিসিবি সিদ্ধান্ত নেয়, এক কোটি মানুষকে পণ্য দেবে, সে ব্যবস্থাও তারা করেছে।’

পণ্যের দামের বিষয়ে কেউ আইন মানেন না এ বিষয়ে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আরও অ্যাকটিভ হবো। ভোক্তা অধিকারকে বলব, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যে দায়িত্ব সেটা যেন তাদের জানানো হয়। আমরাও আমাদের ব্যবস্থা নেব।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, “সরকারের চেয়ে বড় হাত কারও নেই। আমরা বসতে চাই, সুবিধা দিতে চাই। কিন্তু তাই বলে এমন না তারা সুযোগ নেবেন। কিছুদিন আগে তারা এসেছিলেন তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে। আমরা পরিষ্কার বলে দিয়েছি, নট পসিবল (সম্ভব নয়)। আমরা দেখতে চাই এবং কোথাও সুযোগ নিতে দেব না। আপনাদের (গণমাধ্যম) একটু সহযোগিতা চাই। আমাদের প্রশ্ন করেই শেষ করবেন না, আপনারা বাজারেও ঢুকে পড়েন। আপনারা কথা বলেন, স্ক্রল, পেপারে লেখেন। নির্দিষ্ট করে বলেনÑএটার বেশি দাম দেবেন না, সচেতন হোন।”

টিপু মুনশি বলেন, ‘আমাদের রাষ্ট্রপতি একবার বলেছিলেন, সিন্ডিকেট-সিন্ডিকেট। কবে জনগণের সিন্ডিকেট হবে এর বিরুদ্ধে? সেজন্য আপনারা মানুষকে একটু এগিয়ে নিয়ে যান।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। ৩১ মে ও ৩১ ডিসেম্বরের পরে আর কোনো তেল খোলা বাজারে খোলা বিক্রি করা হবে না, সবই বোতলজাত হবে।’

বৈঠকে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আলোচনায় এটিই সিদ্ধান্ত হয়েছে। যে দাম আমরা ঠিক করে দিই, সেটা কিন্তু ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন একটা সূচকের ভিত্তিতে বসে ঠিক করে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে যে প্রভাব পড়ে, সে অনুযায়ী দাম নির্ধারণ করা হয়। সবকিছু মিলিয়েই দাম নির্ধারণ করা হয়।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি দেখেছি, কিছু গরমিল দেখা যাচ্ছে। আমাদের সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি, ভোক্তা আধিকার, ক্যাব, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং গোয়েন্দা সংস্থার বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টকে ডেকেছি। এই কথাটাই আলোচনা করেছি এবং এই নির্দেশ তাদের দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর তরফ থেকে যে নির্দেশ আমাকে জানানো হয়েছে, সে কথাই বলা হয়েছে, যৌক্তিকভাবে এটা (পণ্যের দাম) নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কোনোভাবে কোনো অসাধু ব্যক্তিকে সুযোগ দেয়া যাবে না। এজন্য যতদূর যাওয়া দরকার, যত শক্ত হওয়া দরকার, তারা যেন সেই ব্যবস্থা নেয়। ভোক্তা অধিকার এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে, প্রতিযোগিতা কমিশন কাজ শুরু করেছে। আমাদের ডিজিএফআই, এনএসআই, তারপর পুলিশের বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে যারা রয়েছেন এবং বাজার মনিটরিংয়ে যারা রয়েছেন, সবার সঙ্গে এ কথাই বলা হয়েছে যে, তারা সবাই-ই জানেন, কী দাম হওয়া উচিত। এখানে কোনো কালো হাত যেন প্রভাব বিস্তার করতে না পারে।’

টিপু মুনশি বলেন, ‘আমরা শুনেছি, জেনেছি যে, কোথাও কোথাও (দাম বাড়ানোর) চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটাকে প্রথম থেকেই প্রতিহত করতে হবে। এক মাস পরেই রমজান শুরু হতে যাচ্ছে। তখন মানুষের প্রয়োজন বাড়বে। সংযমের মাস, সেজন্য সেটাও মাথায় রাখতে হবে।’

এ সময় প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম জানান, প্রতিযোগিতা কমিশন থেকে এরই মধ্যে তেল ব্যবসায়ীদের বিষয়টি বলে দেয়া হয়েছে। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বৈঠক করে ভোজ্যতেল ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম বেড়েছে এটা আপনারা গণমাধ্যমকে বলেন। তাহলে মানুষ জানবে।’

সভায় ব্যবসায়ী নেতা, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, প্রতিযোগিতা কমিশন এবং পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০