নিজস্ব প্রতিবেদক: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য এবং সরকারকে বেকায়দায় ফেলার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কুমিল্লাসহ বিভিন্ন স্থানে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটানো হয়েছে। গতকাল দুপুরে শেখ রাসেল দিবসে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘চিরঞ্জীব মুজিব’ চলচ্চিত্রের টিজার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
কুমিল্লা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন জেলায় হিন্দুদের বাড়িঘরে আগুন, হামলা হচ্ছে সরকার এ বিষয়ে কী করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি গোষ্ঠী সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করে। কুমিল্লায় যে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে, সেটি আবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। আবার সেটির ডালপালা ছড়ানো হয়েছে। এটি দেশে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ ধর্মান্ধ গোষ্ঠী নানা সময় নানা ধরনের বিশৃঙ্খলা করেছে। পদ্মা সেতু নির্মাণকাজ শুরু হওয়ার সময় বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে করেছে, সব শেষে দুর্গাপূজা উপলক্ষ করে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা চালিয়েছে এবং করেছে। দেশকে অস্থিতিশীল করে সরকারকে বেকায়দায় ফেলার জন্য এটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে করা হয়েছে, এটি খুবই স্পষ্ট। সরকার কিন্তু কঠোর হাতে দমন করেছে।
তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, যারা কিছু দেখেন না বলেন, তাদের অনুরোধ জানাব সরকার কী কী করে তা খেয়াল রাখার। চট্টগ্রামে শুধু ঢিল ছুড়েছে, একটি ব্যানার ছিঁড়েছে সে জন্য ইতোমধ্যে ১০০ মানুষকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, কয়েকশ মানুষের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কুমিল্লায়ও অনেকের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদপুর নোয়াখালীতেও অনেককে গ্রেপ্তার ও মামলা হয়েছে।
তিনি বলেন, যারা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সারাদেশে এ ধরনের ঘটানোর পরিকল্পনা ছিল। সরকারের কঠোর পদক্ষেপের কারণে সেগুলো নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
পীরগঞ্জ প্রধানমন্ত্রীর আসন, সেখানে এ ধরনের ঘটনা দলীয়ভাবে কীভাবে দেখছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, গত রোববার পীরগঞ্জকে বেছে নেয়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ তারা এমন একটি জায়গা বেছে নিয়েছে, যাতে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়। সে উদ্দেশ্য নিয়েই পীরগঞ্জে এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। যখন ঘুটঘুটে অন্ধকার, তখন কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয়া হলো। এটি খুবই স্পষ্ট যে, পীরগঞ্জকে বেছে নেয়া হয়েছে যাতে সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়।
তিনি বলেন, চাঁদপুরে যারা এ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেছে তাদের নিবৃত্ত করার জন্য পুলিশ গুলি চালিয়েছে। আমাদের এ পদক্ষেপ ভারতের অনেক পত্রপত্রিকা প্রশংসা করেছে। সরকার নিজ অবস্থান থেকে যতটুকু সম্ভব করছে। আমি আজকে আপনাদের মাধ্যমে দেশের সব গণতান্ত্রিক শক্তি ও অসাম্প্রদায়িক শক্তির প্রতি অনুরোধ জানাই দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য।
হাছান মাহমুদ বলেন, আমাদের দলের সব নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পাশে থাকার জন্য, তারা পাশে দাঁড়িয়েছে। আরও বহু জায়গায় এ ধরনের ঘটনা ঘটানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আমাদের দলের নেতাকর্মীরা পাশে থাকার কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কিন্তু আরও এমন ঘটনা ঘটানোর পরিকল্পনা রয়েছে। সে জন্য সবাইকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার অনুরোধ জানাই।