নিজস্ব প্রতিবেদক: কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই সরকারি খাসজমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। এ ভবন ঘিরে আয়ের কোটি টাকার ভাগ-বাটোয়ারা যাচ্ছে অনেকের পকেটে। আর স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয় জেনেও নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।
ঢাকা জেলার সাভার উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের গোহাইল মৌজার নির্মিত ভবনটি নিয়ে এসব অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় মজিবুর ব্যাপারী ও লুৎফর ব্যাপারী গোহাইল মৌজার দুই দশমিক ৪৫ একর সরকারি জমি দখল করে গড়ে তুলেছেন ভবনটি। এ বিষয়ে চলতি সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে অভিযোগ পড়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খাসজমিতে বহুতল ভবন নির্মাণের বিষয়টি অস্বীকার করে মুজিবুর রহমান দাবি করেন, তারা নিজের জমিতেই ভবনটি নির্মাণ করছেন।
সাভার সহকারী ভূমি কর্মকর্তা প্রণব কুমার ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে উল্লিখিত মৌজা তার অধীনস্থ নয় বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, শিমুলিয়ার গোহাইল মৌজার সিএস/এসএ ৬২৯ নম্বর দাগের তিন দশমিক ৪৫ একর জমির মধ্যে দুই দশমিক ৮১ একর জমি সরকারি খাসজমি হিসেবে ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত। ঢাকা জেলা কৃষি খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বন্দোবস্ত কমিটি ওই দাগের এক দশমিক ৮১ একর জমি স্থানীয় পান্নু বানু, পিতা গনি খাঁ এবং মোসা. দিলজান বিবি, স্বামী জহুর উদ্দিনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বরাদ্দকৃত জমি অন্যত্র বিক্রির দায়ের ২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর জেলা প্রশাসন মো. জিল্লার রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিটির সভায় বাতিল করা হয়। পরে একই বছরের ১২ নভেম্বর ওই খাসজমি রেকর্ড সংশোধন করে পুনরায় ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত করে আদেশ জারি করে শিমুলিয়া ভূমি অফিস, যা বর্তমানে বহাল রয়েছে।
ঘটনার কয়েক মাস পরেই শিমুলিয়ার গোহাইল মৌজার ১ নম্বর খাস খতিয়ানের দুই দশমিক ৪৫ একর জমি স্থানীয় মজিবুর ব্যাপারী ও লুৎফর ব্যাপারী অবৈধভাবে দখল করে টিনশেড ঘর উত্তোলন করে ভাড়া দিতে শুরু করেন। এরপর গত কয়েক বছর আগে ওই জমিতে বহুতল ভবন শুরু করেন। বর্তমানে বহুতল ভবনে মার্কেটসহ টিনশেডের ঘরগুলো ভাড়া দিয়ে বার্ষিক কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এসব অবৈধ কাজ টিকিয়ে রাখতে তাদের রয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসীবাহিনী। মজিবুর ও লুৎফরের এসব কাজের নেপথ্যে রয়েছে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী আর অসাধু প্রশাসনের লোক। বিনিময়ে তারা পান উত্তোলনকৃত অর্থের মাসিক মাসোহারা। অবৈধভাবে দখলকৃত ওই খাসজমি উদ্ধার করে আসল ভূমিহীনদের মাঝে বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।