সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম মহানগরের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির ব্যবহারের পানির প্রতিদিনের মোট চাহিদা ৫০ কোটি লিটার। এর বিপরীতে চট্টগ্রাম ওয়াসা প্রায় ৪৫ কোটি লিটার পানির সরবরাহ করতে পারে, যার মাধ্যমে ৮৭ হাজার ৪৭৭টি সংযোগের বিপরীতে পানি সরবরাহ করা হয়। পানি ব্যবহারকারী সরকারি সংস্থাগুলোর কাছে ওয়াসার বকেয়া পাওনার পরিমাণ ২৩ কোটি টাকা, যা পরিশোধে প্রতিষ্ঠানগুলো সময়ক্ষেপণ করছে।
চট্টগ্রাম ওয়াসার গত সেপ্টেম্বরের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, মহানগরের সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে পানির বিল বকেয়া হিসাবে পাওনা রয়েছে ১৩১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। সরকারি সংস্থার মধ্যে বেশি বকেয়া পিডব্লিউডি’র। সরকারি এ প্রতিষ্ঠানের ৫০ সংযোগের বিপরীতে বকেয়ার পরিমাণ চার কোটি ৫৩ লাখ ৩১ হাজার ৭২৭ টাকা। বকেয়া পাওনার তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে আছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর। এ সংস্থার ১৪ সংযোগের বিপরীতে বকেয়া এক কোটি ৫৭ লাখ ১০ হাজার ৬৪৮ টাকা। এরপর গৃহায়ন ও গণপূর্তের ২৪ সংযোগে বকেয়া পাওনা এক কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৮৬৩ টাকা, সড়ক ও সেতু বিভাগে ২৮ সংযোগে এক কোটি ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৫৫৯ টাকা, সিটি করপোরেশনের ৯১ সংযোগে বকেয়া ৯২ লাখ সাত হাজার ৮৪২ টাকা, চউকের ১৪ সংযোগের বিপরীতে বকেয়া ৭৮ লাখ ৯ হাজার ২৭১ টাকা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ১০ সংযোগে ৭৮ লাখ টাকা, রাষ্ট্রীয় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের ১৬ সংযোগের বিপরীতে ৭০ লাখ টাকা, পুলিশ বাহিনীর ৩১ সংযোগে ৫৬ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭৯ টাকা এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১০ সংযোগে ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১০ শীর্ষ সরকারি বিল খেলাপি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া পাওনার পরিমাণ ১২ কোটি ৬৮ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ টাকা। এছাড়া আরও অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বকেয়া আছে ১০ কোটি ৩২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৪ টাকা।
চসিকের ৯১ সংযোগে বকেয়া ৯২ লাখ সাত হাজার ৮৪২ টাকা পরিশোধের বিষয়ে জানার জন্য চসিকের সচিব খালেদ মাহমুদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
চট্টগ্রাম ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী একেএম ফজলুল্লাহর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। এরপর প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (অর্থ) ছামসুল আলম মোবাইল ফোনে শেয়ার বিজকে বলেন, হালনাগাদ হিসাব অনুসারে আমাদের সরকারি ও বেসরকারি বকেয়া ১১৪ কোটি টাকা। বিপুল বকেয়া পাওনা আদায়ে আমরা একটি বিশেষ টিম গঠন করেছি। এসব বকেয়া পাওনা আদায়ে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে আমরা বকেয়া পাওনা পরিশোধের জন্য চিঠি দিয়েছি। আশা করি ফিডব্যাক ভালো পাব।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম নগরবাসীর চাহিদার ৮৫ শতাংশ পানি সরবরাহ করে। আর বাকি চাহিদা পূরণে আরও তিনটি পানি সরবরাহ প্রকল্প চলমান আছে। এ তিনটি প্রকল্প শেষ হলে মহানগরে শতভাগ এলাকা পানি সরবরাহের আওতায় আসবে।