নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ‘একতরফা’ তফসিল প্রত্যাখ্যান করে বিএনপির ডাকা ৪৮ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিন সকালে দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে রাজধানীতে ঝটিকা মিছিল করেছেন জনা তিরিশেক নেতাকর্মী।
মিছিলের আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রিজভী বলেছেন, ‘সরকারের বিরুদ্ধে চারদিকে অন্ধকার ধেয়ে এসেছে, অবৈধ সরকারের মসনদ আর ধরে রাখতে পারবে না। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন জনগণ হতে দেবে না।’
গতকাল সোমবার সকাল সাড়ে ৬টায় কারওয়ান বাজারের সোনারগাঁও সড়ক এবং সকাল সাড়ে ৭টায় দয়াগঞ্জ মোড়ে দুটি মিছিলে দেখা যায় রিজভীকে। মিছিল থেকে নেতা-কর্মীরা সেøাগান দেন‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’, ‘হরতাল সফল হোক সফল হোক’, ‘একতরফা নির্বাচন মানি না, মানব না।’
সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনে থাকা বিএনপি গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে হরতাল-অবরোধের কর্মসূচি দিয়ে আসছে। তাদের দীর্ঘদিনের মিত্র জামায়াতে ইসলামী এবং সমমনা দল ও জোটগুলোও একই কর্মসূচি পালন করছে। এরই মধ্যে ৭ জানুয়ারি ভোটের তারিখ রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। তার প্রতিবাদে রোববার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে ৪৮ ঘণ্টার এই হরতাল করছে বিএনপি, যা মঙ্গলবার (আজ) ভোর ৬টায় শেষ হওয়ার কথা।
গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের পর বিএনপির বেশিরভাগ জ্যেষ্ঠ নেতা কারাগারে, নয়তো আত্মগোপনে রয়েছেন। দলের অবস্থান জানাতে এবং নতুন কর্মসূচি দিতে নিয়মিত ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে আসছেন রিজভী। তবে মাঝেমধ্যে ঝটিকা মিছিল ছাড়া তাকে প্রকাশ্যে দেখা যাচ্ছে না।
হরতাল-অবরোধের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে যানবাহনে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটছে, যা ফিরিয়ে আনছে ২০১৫ সালের ব্যাপক নাশকতার স্মৃতি। ক্ষমতাসীনরা বলছে, বিএনপি-জামায়াত তাদের ‘আসল রূপে’ ফিরে এসেছে। অন্যদিকে এসব নাশকতার জন্য উল্টো ক্ষমতাসীনদের দায়ী করছে বিএনপি।
রিজভী বলেন, ‘গ্রেপ্তার, মিথ্যা মামলা ও বাড়ি বাড়ি তল্লাশি চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের ধরে নিয়ে গিয়ে একদফার আন্দোলনকে সরকার রুখতে পারেনি। বিএনপিসহ সমমনা জোটের নেতা-কর্মীরা সারাদেশে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের শান্তিপূর্ণ হরতালে রাজপথে নেমেছে। এই অবৈধ সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথ ছাড়বে না। আমরা বিশ্বাস করি, জনগণের দাবি মেনে সরকার অচিরেই পদত্যাগে বাধ্য হবে।’
বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ডা. রফিকুল ইসলাম, ডা. পারভেজ রেজা কাঁকন, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েলসহ ছাত্র দল ও শ্রমিক দলের নেতা-কর্মীরা ঝটিকা মিছিলে অংশ নেন। রিজভী মিনিট দশেক মিছিলে অংশ নিয়ে স্থান ত্যাগ করেন।