Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 1:06 am

সরকারের দেয়া সব তথ্য ভুয়া: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: সরকার যেসব তথ্য দিচ্ছে, সেগুলো ভুয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ‘সরকার আসল খবর না দিয়ে সব সময় নকল জিনিসটা প্রচার করে।’

গতকাল দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যের অস্বাভাবিক ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয়ক্ষমতার নাগালে রাখার দাবিতে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল এ আয়োজন করে।

তিনি বলেন, অর্থনীতিবিদ দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘এখন সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে তথ্যসন্ত্রাস।’ তথ্যসন্ত্রাস কীÑআসল ঘটনা যেটা সেটা বলা হয় না, নকলটা বলা হয়। আজকে এই সরকারের যত তথ্য সব ভুয়া। গত বছর জিডিপির কথা যা বলা হয়েছে, সব ভুয়া। জিডিপির ৪২ ভাগ ঋণ। অর্থাৎ আপনাকে-আমাকে সবাইকে এই সরকার ঋণে জর্জরিত করে দিচ্ছে। আমাদের পকেট থেকে টাকা কেটে, সার চার্জ, অমুক চার্জ, তমুক চার্জ নিয়ে আমাদের নিঃস্ব করে দিচ্ছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, সাধারণ মানুষের করুণ অবস্থা এই সরকারের গায়ে লাগে না। তাদের মন্ত্রীরা বলেন, দাম তো সারাবিশ্বেই বাড়ছে। সেইসঙ্গে আমাদের তো ক্রয়ক্ষমতাও বেড়ে গেছে। ক্রয়ক্ষমতা কাকে বলেÑসিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, নিউইয়র্ক, টরেন্টো গিয়ে যারা কেনাকাটা করেন, অথবা বাড়ি কিনেছেন, তাদের ক্রয়ক্ষমতার কথা বলছেন, নাকি আমাদের কৃষক-শ্রমিক ও অসহায় জনতার কথা বলছেন? আমার কৃষক ভাইয়ের তো ক্রয়ক্ষমতা বাড়েনি। কৃষির জন্য যে সার লাগে, পানি লাগে, কীটনাশক লাগে, বিদ্যুৎ লাগে, সেগুলোর তো দাম বাড়ছেই। ডিজেল ও বিদ্যুতের দাম সরকার বাড়িয়ে দিয়েছে। তাহলে কৃষক কীভাবে বাঁচবে।

এই সরকার যদি আবারও আসে, বেশি দিন থাকে, তাহলে আমরা কি টিকতে পারব এ প্রশ্ন করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাহলে আমাদের অস্তিত্ব থাকবে না। আমরা বাংলাদেশকে একটা স্বাধীন গণতান্ত্রিক বৈষম্যহীন দেশ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলাম। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা শহিদ জিয়াউর রহমান ও দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আমাদের সেই লক্ষ্যে নিয়ে যাচ্ছিলেন। কৃষক দলের নেতারা জানেন, কৃষক ও কৃষির জন্য শহিদ জিয়া ও খালেদা জিয়া কত কাজ করেছিলেন। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা, কৃষকদের ২৫ বিঘা পর্যন্ত খাজনা মওকুফ করা, পাঁচ হাজার টাকার সুদ মওকুফ করে দেয়াÑসবই করেছিলেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, আমরা আবারও কৃষকদের সমৃদ্ধ করতে চাই। আমরা সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষদের এই দুর্ভোগ দূর করতে চাই। আমরা যদি এই সরকারকে সরাতে পারি, খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সরকার যদি আবার আসতে পারে, তাহলে আমরা অবশ্যই দেশের সমস্যার সমাধান করতে সক্ষম হবো। সেটা কি এমনিতেই হবে? এই আওয়ামী লীগ সরকার থাকলে কি হবে? আমাদের এই সরকারকে সরাতে হবে। সুতরাং আর কোনো কথা নেই। একটাই কথাÑএখন সরে যাও, অনেক হয়েছে। অনেক অত্যাচার-নির্যাতন করেছ। হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছ। আমাদের নেতাকর্মীদের গুম করেছ। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছ। প্রতিদিন আমাদেরকে কোর্টে যেতে হয়। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে এই সরকারকে সরাতে হবে। ভালোয় ভালোয় সরে যান। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করেন। তা না হলে জনগণই আপনাদের ঘাড় ধরে বের করে দেবে।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম, কৃষক দলের সহসভাপতি অ্যাডভোকেট নাসির হায়দার, জামাল উদ্দিন খান মিলন, মামুনুর রশীদ খান, কর্নেল এসএম ফয়সাল (অব.), প্রকৌশলী মো. দৌলতুজ্জামান আনছারী, আ ন ম খলিলুর রহমান (ভিপি ইব্রাহীম), ওলিউল্লাহ সিদ্দিকী, যুগ্ম সম্পাদক প্রকৌশলী টিএস আইয়ুব, শাহাদাত হোসেন বিপ্লব, মনিরুল ইসলাম রয়েল, ওবায়দুল হক নাসির ও জাহাঙ্গীর আলম।