সরকারের প্রণোদনার বাইরে ব্যাংকগুলো আরও ২.৫% দিতে পারবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার সংকটের মধ্যে টানা তিন মাস ধরে কমেছে বিভিন্ন দেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের পাঠানো রেমিট্যান্স। নানা উদ্যোগ নিয়ে এ আয় বাড়ছে না। তাই এখন থেকে সরকারের আড়াই শতাংশ প্রণোদনার পাশাপাশি ব্যাংকগুলো চাইলে মুনাফা বা করপোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) অংশ হতে আরও ২ দশমিক ৫ শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে গত শুক্রবার ব্যাংকের শীর্ষ নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশ (এবিবি) ও বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত ব্যাংকগুলোর সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, বর্তমানে রেমিট্যান্স আনার জন্য ব্যাংকগুলো ১১০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে। একসঙ্গে

 সরকারি প্রণোদনা হিসেবে আরও আড়াই শতাংশ দেয়া হয়। তবে নতুন করে ব্যাংকগুলোর মুনাফা বা সিএসআর ফান্ড থেকে আরও আড়াই শতাংশ প্রণোদনা দিতে পারবে রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের। এ সিদ্ধান্তের ফলে বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়বে বলে মনে করেন এ কর্মকর্তা।

কেন এই সিদ্ধান্ত

গত ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিন্ম প্রবাসী আয় দেশে এসেছে গত মাসে। সেপ্টেম্বরে বৈধ পথে দেশে প্রবাসী আয় আসে ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলার। এর আগে সর্বশেষ ২০২০ সালের এপ্রিলে এত কম প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল। ওই মাসে প্রবাসী আয় এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার। ডলার-সংকটের এ সময়ে প্রবাসী আয় কমে যাওয়ায় ডলার-সংকট আরও প্রকট হয়েছে।

আগস্টে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৫৯ কোটি ৯৪ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন, যা তার আগের মাস জুলাইয়ে চেয়ে ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ কম। জুলাইয়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৯৭ কোটি ৩১ লাখ ডলার। আর জুনের তুলনায় জুলাই মাসে কমেছে ১০ দশিমিক ২৭ শতাংশ। জুনে রেমিট্যান্স এসেছিল ২১৯ কোটি ডলার।

এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের প্রায় সবাই মতামত দেন যে ডলারের দাম বেঁধে রেখে প্রবাসী আয় বাড়ানো সম্ভব নয়, কারণ বেশি দাম পাওয়ার কারণে প্রবাসীদের অনেকেই আয় হুন্ডিতে পাঠাচ্ছেন। জানা গেছে, প্রবাসী আয় তলানিতে নামার পর ডলার-সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরামর্শে দুই সংগঠন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এর আগে রেমিট্যান্স বাড়াতে যত উদ্যোগ

বৈধ পথে প্রবাসী আয় ধারাবাহিক কমছে। অর্থনীতির অন্যতম এ সূচকটির নেতিবাচক গতি দুশ্চিন্তায় ফেলেছে। এমন পরিস্থিতিতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আনতে বিভিন্ন শর্ত শিথিল, চার্জ ফি মওকুফসহ বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

রেমিট্যান্স বাড়াতে নেয়া উদ্যোগ ও পদক্ষেপগুলো হলোÑবৈধ উপায়ে ওয়েজ আর্নার্স রেমিট্যান্সের বিপরীতে আড়াই শতাংশ নগদ প্রণোদনা দেয়া, রেমিট্যান্স প্রেরণকারীদের সিআইপি সম্মাননা দেয়া, রেমিট্যান্স বিতরণ প্রক্রিয়া সম্প্রসারণ ও সহজ করা, অনিবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিনিয়োগ ও গৃহায়ন অর্থায়ন সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া ফিনটেক পদ্ধতির আওতায় আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার অপারেটরকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে ড্রয়িং ব্যবস্থা স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করা এবং রেমিট্যান্স পাঠাতে ব্যাংক বা এক্সচেঞ্জ হাউসগুলোর চার্জ ফি মওকুফ করা হয়েছে। 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০