Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 6:58 pm

সরকার খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে: গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে সরকার। তার চিকিৎসার জন্য তাদের (সরকার) এত দরদি হওয়ার দরকার নেই। আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাই।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির পেশাজীবী সংগঠন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন ও মোনাজাত করা হয়।

সরকারকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসা করবেন, নাকি দেশে চিকিৎসা করবেন, ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা নেবেন, নাকি ফকিরের কাছে চিকিৎসা নেবেন, সেটা তার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার। তারা যে ধরনের কথা বলছে, তাতে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্ত সৃষ্টি হচ্ছে।

তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যুদ্ধ করে একটি দেশ পেয়েছি, পতাকা পেয়েছি। কিন্তু সত্যিকার অর্থে আমরা এখনও স্বাধীনতা পাইনি। বারবার গণতন্ত্র হোঁচট খায়। কর্তৃত্ববাদী এবং ক্ষমতার লোভে কখনও গণতন্ত্র সুষ্ঠু ও স্বাভাবিকভাবে চলার সুযোগ পায় না। দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে এভাবে চলছে ফ্যাসিবাদী সরকার, যারা ভোটের তোয়াক্কা করে না, জনগণের অধিকারে তোয়াক্কা করে না, যারা ক্ষমতায় এসে লুটপাটের মধ্য দিয়ে দেশের অর্থনীতি শূন্যের কোঠায় নিয়ে গেছে। একদিকে লুটপাট, অন্যদিকে মুদ্রা পাচার। এ কারণে আজকে রাষ্ট্রের কোষাগার অনেকটাই শূন্য।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে আজকে মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে বলে দাবি করে গয়েশ্বর বলেন, আজকে দফায় দফায় দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ছে। কিন্তু মানুষের আয় বাড়ছে না। বরং চাকরির বাজার ছোট হচ্ছে।

সরকার দেশে একটা অরাজক পরিবেশ সৃষ্টি করছে বলে দাবি করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, দেশে আজকে বাকস্বাধীনতা নেই। সাংবাদিকরা যা দেখেন তা বলতে পারেন না। লিখতেও পারেন না। এর ফলে দেশের প্রকৃত অবস্থা থেকে জনগণকে তারা অন্ধকারে রাখছে। কিন্তু জনগণ নিজের আত্মোপলব্ধি থেকে আজকে দেশের কী অবস্থা তা জানছে। তারা বাজারে গেলে বুঝতে পারে অর্থনৈতিক সংকট কত?

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, একটি ভোটারবিহীন সরকারের পক্ষে দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা সম্ভব নয়। সে কারণে আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছি। নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে হলে বর্তমানে যারা ভোটে বিশ্বাস করে না, জনগণের অধিকারে বিশ্বাস করে না, তাদের ক্ষমতায় রেখে সম্ভব নয়। সে কারণে তাদের ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করা এবং সংসদ বিলুপ্ত করা, এরপর নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা উচিত। তারা একটি নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। সে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে জনগণ ভোট দেয়ার জন্য অধীর আগ্রহে বসে আছে।

গয়েশ্বর বলেন, সরকারের যে চরিত্র, তাতে তারা ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতায় থাকতে চায় না, আসতেও চায় না। তাই তারা কর্তৃত্ববাদী, ফ্যাসিবাদী এবং লুটপাটের জন্য ক্ষমতায় আছে। এর ফলে জনগণের নীতি কথা তাদের কানে যায় না।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সংগঠনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, আয়োজক সংগঠনের সভাপতি একেএম মুসা লিটন, মহাসচিব বিপ্লবুজ্জামান বিপ্লব প্রমুখ।