Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 7:02 pm

সরকার জনভীতি রোগে আক্রান্ত: মির্জা ফখরুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: খুলনায় বিএনপির গণসমাবেশ ঠেকাতে সরকারের নানামুখী অপচেষ্টার কারণকে সরকারের ‘জনভীতি রোগ’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাদের ‘পিপলস ফোবিয়া’ রোগ হয়েছে। মানুষ দেখলেই ভয় পায়। যে কারণে তারা নির্বাচনগুলো ওইভাবে করে যাতে করে জনগণকে বাদ দিয়ে করা যায়। সেই পদ্ধতিতে তারা মানুষকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র চালাতে চায়। গতকাল গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই মন্তব্য করেন।

সরকারের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন রেখে মির্জা ফখরুল বলেন, ভয়টা কীসের তাদের? কী কারণে তারা সমস্ত কিছু বন্ধ করে দিয়ে সমাবেশগুলো বন্ধ করতে চাচ্ছে। একটাই তো কারণ। মানুষ যদি বাড়তে থাকে তাদের ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব হবে না। জনগণের উত্তাল তরঙ্গে তাদের ভেসে যেতে হবে। এভাবে যদি জনগণ জেগে ওঠে, গণ-অভ্যুত্থান সৃষ্টি হবে তখন তাদের অত্যন্ত ধিকৃত অবস্থায় সরে যেতে হবে। এটাই তাদের ভয়।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, খুলনায় নিশ্চয় আপনাদের প্রতিনিধিরা আছেন তাদের কাছ থেকে জানতে পারবেন। আজকের পত্র-পত্রিকায় রিপোর্ট আপনারাই করেছেন। প্রত্যেকটা পত্র-পত্রিকায় যে কীভাবে তারা একটা ‘রেইন অব টেরর’ সৃষ্টি করতে চাচ্ছে। এটা তারা ময়মনসিংহে করেছিল, চট্টগ্রামেকরেছিল। কিন্তু কিছু করতে পারেনি।

সরকারের দুর্নীতি-অব্যবস্থাপনার কারণেই দুর্ভিক্ষের পদধবনি দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনারা নিশ্চয় অমর্ত্য সেনের বইটা পড়েছেন। যেখানে উনি ৭৪ সালের দুর্ভিক্ষের পর্যালোচনা করতে গিয়ে স্পষ্ট করেই বলেছেন, ’৭৪ সালে দুর্ভিক্ষটা ছিল মানবসৃষ্ট, মানুষের দ্বারা তৈরি করা। অর্থাৎ তখন যারা ক্ষমতাসীন ছিলেন তাদের অব্যবস্থাপনা, তাদের দুর্নীতি, তাদের অযোগ্যতা, তাদের অদক্ষতার কারণে সেই দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি হয়েছিল। আজকে সেই একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে। এটা আমরা বার বার করে বলে আসছি।

কৃষকদের গোল্ড মেডেল দেয়া উচিত জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের তো বাংলাদেশের কৃষকদের প্রত্যেককে একটা করে সোনার মেডেল দেয়া উচিত। তারা দিবারাত্র পরিশ্রম করে যে ফসল ফলায় তার জন্য বাংলাদেশের মানুষ কোনো রকমের খেয়ে বেঁচে থাকে। এরা (সরকার) মুখে বলে যে, আমরা খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণ হয়ে গেছি। আর অন্যদিকে লাখ লাখ টাকার খাদ্য বিদেশ থেকে আমদানি করছে। কয়েকদিন আগেও দেখেছেন বিদেশ থেকে আমদানি করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদের পুরো লক্ষ্যটা হচ্ছে- লুট করা, চুরি করা সবখানে।

সরকার প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক অবসর দিচ্ছে। তাদের প্রতি যদি অবিচার করা হয় তাহলে আপনারা ক্ষমতায় গেলে তারা ন্যায় বিচার পাবেন কি না প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা তো সবসময় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার কথা বলছি। আমরা তো স্পষ্ট করে বলছি, আমরা সামাজিক ন্যায় বিচার, মূল্যবোধ, মানবিক মূল্যবোধ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠা করব।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু উপস্থিত ছিলেন।